সন্তানের শখ মেটাতে ট্রাক্টরের চাপায় প্রাণ গেলো শিশুর

সন্তানের বায়না মেটাতে গিয়ে কোল খালি হয়েছে মা সাদিয়া বেগমের। এতে বারবার মূর্ছা গেছে মা। বাকশুক্তি হারিয়ে ফেলেন বাবা ইছা মিয়াও। স্বজনদের আহাজারিতে ভাড়ি হয়েছে আকাশও। সোমবার বেলা ১১টায় এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার নেওয়াশী ইউনিয়নের গাগলা বাজার সংলগ্ন মাস্টারপাড়া এলাকার এ.এন ব্রিকস নামক একটি ইটভাটায়।

স্থানীয়রা জানান, ভাটা সংলগ্ন সাদিকের বাড়ির সামন দিয়ে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করতো এ.এন ব্রিকস ইটভাটার মাটি পরিবহনের ট্রাক্টর। সেই ট্রাক্টরে উঠতে মায়ের কাছে বারবার বায়না ধরেন ৩ বছরের শিশু ইমরান হোসেন সাদিক। বায়না সইতে না পেরে শিশু সন্তান সাদিককে ওই ট্রাক্টরে তুলে দেয় মা সাদিয়া বেগম। ট্রাক্টরে উঠে দুইবার যাতায়াতও করে শিশুটি। তৃতীয়বার মাটি নিয়ে ভাটায় যাওয়ার সময় উচুতে উঠতে গিয়ে ছিটকে পরে শিশু সাদিক। আর এতে চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় সে। পরে সেখান থেকে ট্রাক্টরের চালক আব্দুর রশিদ পালানোর চেষ্টা করলে তাকে আটক করেন স্থানীয়রা। চালকের বাড়ি দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলায় বলে জানা গেছে।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বর্তমান, নবনির্বাচিত চেয়াম্যান ও দুই পক্ষের উপস্থিতিতে সমঝোতা করেন। তবে এ ব্যাপারে কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি শিশুর পরিবার।

এ ব্যাপারে নেওয়াশী ইউপি চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন বলেন, এটি মর্মান্তিক ঘটনা। যা শুনলাম শিশুটির আবদারে ওর মা গাড়ীতে তুলে দেয়। আর শিশুটির পরিবার যেহেতু গরিব তাই কোনো মামলা হয়নি। অপরদিকে বিষয়টি মিমাংসার সময় নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মাহফুজার রহমান মুকুল উপস্থিত থাকলেও এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি তিনি।

নাগেশ্বরী থানার অফিসার ইনচার্জ নবিউল হাসান জানান, আমার অফিসার ওখানে গেছিল। ওর কাছ থেকে শুনলাম শিশুটি কান্নাকাটি করায় ওর মা ওকে ট্রাক্টরে তুলে দেয়। কয়েকবার যাওয়া আসা করেছে। এক সময় এ ঘটনা ঘটে। শিশুটির পরিবার অভিযোগ করতে চায়নি। এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

লতিফুর রহমান লিংকন/বার্তাবাজার/এম আই

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর