শেরপুরের বড়বিলায় পাতি সরালির মেলা!

পাখি দেখতে কার না ভালো লাগে? তাও যদি হয় খোলা আকাশের নিচে উন্মুক্ত জলাশয়ে। দল বেঁধে বিলের জলে সাঁতরে বেড়াচ্ছে বাদামি রঙের হাঁস। বাদামি এই হাঁসের নাম সরালি বা পাতিসরালি। একসঙ্গে উড়তে থাকলে মনে হয় ধূসর-বাদামি ঢেউ।

বগুড়ার শেরপুরে এই প্রথম কোন বিলে এমন পাতি সরালির ঝাঁক দেখা গেল। সরালিকে ‘পরিযায়ী’ বলে ভুল করে কেউ কেউ। তবে এটি পরিযায়ী পাখি নয়। শীত মৌসুমে এই জাতের পাখি দিঘি-জলাশয়ে দল বেঁধে বেড়ায়। বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের বড়বিলা নামক বিলের নতুন অতিথি এবার পাতিসরালি। বিলের ধারে দাঁড়ালে প্রকৃতির অপরূপ মেলবন্ধন মনে মুগ্ধতা এনে দেয়।

এই প্রথম এই বিলে এমন পাতি সরালির ঝাঁক দেখা গেল। পাতি সরালি ছাড়াও এই বিলে পাতি তিলিহাঁস, বালিহাঁস, জলপিপি, পাকড়া মাছরাঙা, পাতিমাছরাঙা, মাছরাঙা, পানকৌড়ি, শামুকখোল, শালিক, লাটোরা উল্লেখযোগ্য। বিকেল হলেই এখানে পাখি দেখতে ভীড় করছে অনেকেই। বিলটিতে পাখিসহ বন্যপ্রাণীদের নিরাপত্তা রক্ষায় সচেতনতামূলক কার্যক্রমের কাজ করছে পরিবেশবাদী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পরিবেশ প্রতিরক্ষা সংস্থা শেরপুর, বগুড়া। এই বিলে পতিসরালি ঝাঁক বেঁধে গত বছর থেকে আসলেও তাদের নিরাপত্তায় শুধু মাত্র সেচ্ছাসেবী পরিবেশবাদী সংগঠন ঙৎমধহরংধঃরড়হ ভড়ৎ ঊহারৎড়হসবহঃধষ উবভবহংব ড়ভ ঝযবৎঢ়ঁৎ- (ঙঊউঝ) কাজ করছে।

সম্পূর্ণ বিলটি কয়েকজন ব্যক্তির, ব্যাক্তি মালিকানাধীন জায়গা। এটা নির্মানাধীন ভাস্কার এগ্রো পার্ক। এখানে ৬-৭ মাস আগে হাসের খামার ছিল। এখন খামার নাই। তাই নির্জীব জায়গায় পাতি সরালি বংশবিস্তার শুরু করেছে। বিলে পাতিসরালি দেখতে আসা কয়েকজন বলেন, প্রকৃতির এমন সৌন্দর্য দেখতে আমরা শহর থেকে এই বিলে এসেছি। আমাদের খুব ভাল লাগছে। আমরা চাই এই বিল সহ অন্যান্য বিলও যেন পাখিদের অভয়ারন্য হয়।

পরিবেশ প্রতিরক্ষা সংস্থার সভাপতি সোহাগ রায় সাগর জানান, বিলটিতে গত বছরের পর এবছর তুলনামূলক মা পাখি সংখ্যায় অনেক বেশি এসেছে এবং দুই মাস আগে থেকে বংশ বিস্তার শুরু করেছে। আমরা কিছু লিফলেট ও ব্যানার লাগিয়ে লোকজনকে সচেতন করার চেষ্টা করছি। যদি সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন এর পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হয় তাহলে অত্র এলাকায় বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে সৃষ্টি ও পরিবেশ সংরক্ষণে ব্যপকভাবে সচেতনতা সৃষ্টি করা যাবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ময়নুল ইসলাম জানান, শুধু বড়বিলা নয়। যদি এই উপজেলার কোথাও পাখি শিকারীদের দেখা যায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এছাড়াও প্রত্যেক বিলে পাখিদের অভয়ারন্য গড়ে তুলতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ধরনের ব্যবস্থা করা হবে।

বার্তা বাজার/রাশেদুল হক/এমএম

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর