নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার, মাসহ তিনজন কারাগারে

ভোলার চরফ্যাসনের শশীভূষণ থানার এওয়াজপুর ইউনিয়নের ধুরেরখাল থেকে মঙ্গলবার নবজাতকের ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করেছে শশীভূষণ থানা পুলিশ। নবজাতকের মরদেহ উদ্ধারের ২৪ ঘন্টার মধ্যেই নবজাতকে খুন এবং মরদেহ গুমে জড়িত ৩ মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত সোমবার রাতে ওই ইউনিয়নের কুমারীর বসত ঘরে নবজাতককে খুন এবং মরদেহ গুমের ঘটনা ঘটে।

বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) গ্রেফতার ৩ আসামী আসমা, ফাতেমা এবং লিমাকে চরফ্যাসন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালতে আসামীরা নবজাতক হত্যা ও গুমের দায় স্বীকার করেছেন বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন নিশ্চিত করেছেন। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে লিমা নবজাতকের কুমারী মাতা। আদালত আসামীদের জেল হাজতে পাঠিয়েছেন।

পুলিশ জানায়, স্থানীয় সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সকালে এওয়াজপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ধুরেরখাল থেকে ৭/৮ মাসের নবজাতকের মৃত ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় উপ-পরিদর্শক মোঃ শমেছ আলী বাদি হয়ে শশীভূষণ থানায় অজ্ঞাত আসাীদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। গোপন সংবাদ ও তদন্তের সূত্রধরে বুধবার কুমারী মা লিমা, লিমার মা আসমা এবং ফাতেমা নামে তিনজনকে আটক এবং পরে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা পুলিশের কাছে নবজাতককে হত্যা ও লাশগুমের সত্যাতা স্বীকার করলে গতকাল বৃহস্পতিবার তিনজনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।

কুমারী মা লিমার উদ্ধৃতি দিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন আরও জানান, ১৮ বছরের তরুণী লিমা তার চাচাতো মামা রিপনের সাথে দৈহিক সম্পর্কে জড়িয়ে যায়। যার ফলে লিমা অন্তঃস্বত্বা হয়। কুমারী লিমার অন্তঃস্বত্ত্বার ঘটনায় দুই পরিবারের মধ্যে বিয়ের বিষয়ে আলোচনায় সময়ক্ষেপণ হয়। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে গর্ভের সন্তান বেড়ে উঠেছে। লিমার মা আসমা ও রিপনের মা ফাতেমা মিলে গর্ভের সন্তান মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করে। সোমবার ফাতেমা ও আসমা মিলে কুমারী মা লিমাকে চরফ্যাসন উপজেলা সদরের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে আসেন। সেখানে জনৈক চিকিৎসকের পরামর্শে গর্ভের সন্তান হত্যার জন্য ঔষধ নেয়া হয়। ওই ওষুধ খাওয়ার পর সোমবার রাতেই পিতার ঘরে কুমারী মা ৭/৮ মাসের মৃত সন্তান প্রসব করেন। আসমা ও ফাতেমা মিলে রাতের আধারে ওই মৃত নবজাতকের মরদেহ গ্রামের ধুরের খালে ফেলে আসে।

পুলিশ আরো জানায়, কুমারী মা লিমা ও তার প্রেমিক রিপন সম্পর্কে মামা-ভাগ্নি। পাশাপাশি দু’টি পরিবারের মধ্যে আর্থিক অসঙ্গতিও আছে। আর্থিক ও আত্মীক অসঙ্গতির কারণে লিমা ও রিপনের পরিবার বিয়ের দীর্ঘ আলোচনায় থাকলে বিয়েতে রাজি হয়নি। সহজ সমাধান হিসেবে দুই পরিবার গর্ভের সন্তানকে হত্যা ও গুমের সিদ্ধান্ত নেয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ এবং আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিতে কুমারী মাতা লিমা, আসমা ও ফাতেমা ঘটনার এমন বর্ণনা দিয়েছেন।

শশীভূষণ থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান পাটোয়ারী জানান, নবজাতক হত্যায় ব্যবহৃত ওষুধ জব্দ করেছে। হত্যার জন্য ওষুধ দেয়া চিকিৎসকসহ নেপথ্যে থাকা অপরাপর আসামীদের সনাক্ত ও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

আরিফ হোসেন/বার্তা বাজার/এসজে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর