শিক্ষার্থীদের ফুল আর চকটেল দিয়ে বরণ করছে শিক্ষকরা

করোনার কারণে শিক্ষা জীবনের সুদীর্ঘ এক সংগ্রাম শেষে নিজেদের আপন ঠিকানায় ফিরতে পেরে আনন্দ আর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (৯ অক্টোবর) সকাল থেকে হলের গেইট খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের ফুল, চকলেট, মাস্ক, স্যানিটাইজার ইত্যাদি দিয়ে বরণ করে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। প্রথমবর্ষের স্মৃতি জাগিয়ে দেওয়া এমন অভ্যর্থনাকে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের নতুন অধ্যায়ের শুরু বলেও মনে করছেন শিক্ষার্থীদের অনেকে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাকিল আহমেদ বলেন, দীর্ঘদিন পরে পরিচিত আঙ্গিনায় আসতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। মহামারীতে সবকিছু দুর্বিষহ মনে হচ্ছিল। হলে এসে স্বস্তির শ্বাস নিতে পারছি।

দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের শিক্ষার্থী মীম বলেন, ১৮ মাস পর আবারও স্মৃতি জড়ানো প্রাণের ঠিকানায় ফিরেছি। প্রথম বর্ষের মত আমাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়েছে। মনে হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের একটি নতুন অধ্যায় শুরু হচ্ছে।

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের শিক্ষার্থী জান্নাত বলেন, অনেক দিন পর স্বস্তি পাচ্ছি। হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুল আর চকলেট দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয়েছে। সেই প্রথমবর্ষের দিনগুলোর কথা মনে পড়ে গেলো।

শিক্ষার্থীদের পেয়ে উচ্ছ্বসিত হয়েছেন হলের প্রভোস্টরাও। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার বলেন, শিক্ষার্থীরা হলে উঠছে আমাদের জন্য একটা ভালো অনুভূতির বিষয়‌। এখন আমাদের প্রথম ও প্রধান কাজ হল শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা এবং শিক্ষার্থীরাও যেনো তা মেনে চলে এটা নিশ্চিত করা।

প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. রেবা মন্ডল বলেন, দীর্ঘ আঠারো মাস পর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক আজ আমরা হল খুলতে পেরেছি। এজন্য আমরা খুবই আনন্দিত। এক ডোজ টিকা ও শুধু মাত্র আবাসিক শিক্ষার্থীদের হলে উঠার জন্য অনুমতি রয়েছে। হল খোলার প্রস্তুতি হিসেবে হল কতৃপক্ষের পক্ষ থেকে রুম পরিস্কার পরিচ্ছন্ন সহ সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য আমাদের হল কতৃপক্ষের সব ধরণের ব্যবস্থা রয়েছে।

গণরুম খোলার ব্যাপারে তিনি বলেন, আমরা আপাতত গনরুম বন্ধ রেখেছি। গণরুমের মেয়েরা তাদের প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র রুম থেকে নিতে পারবে কিন্তু রুমে থাকতে পারবে না। কিছুদিন পর আমরা পরিস্থিতি বিবেচনা করে সর্বসম্মতিক্রমে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম সকালে কয়েকটি হল পরিদর্শন করেন। এ সময় তার সঙ্গে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।

এসময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের এতদিন হলে ওঠাতে পারিনি এ যন্ত্রণা থেকে আজ মুক্ত হলাম। আজকে মনে হচ্ছে আমার বাগানটা পরিপূর্ণ হলো। আমি আমার সহকর্মীরা এবং শিক্ষার্থীরা সবাই যেন দায়িত্বশীল আচরণ করি এটাই আমার সবার কাছে আহ্বান। এটি একটি প্রকৃতি সৃষ্ট ঘটনা, মানুষ সৃষ্ট কোন বিষয় না। তাই সবকিছু মেনে নিয়ে এই দেড় বছরের যে বিচ্ছিন্নতা ছিল, হল খোলার মাধ্যমে আমরা মূল স্রোতে ফিরে আসলাম।

মো. মোস্তাফিজুর রহমান রাকিব/ বার্তা বাজার/টি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর