বাগেরহাটে ইউপি চেয়ারম্যান হলেন ‘ভারতের নাগরিক’ মনোরঞ্জন পাল!

বাগেরহাটের মোল্লাহাটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জয়লাভ করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মনোরঞ্জন পাল। তিনি উপজেলার চুনখোলা ইউনিয়নের ডাবরা গ্রামের অমৃত লালের ছেলে। তবে বিনা ভোটে পাশ করা মনোরঞ্জন পাল বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতের নাগরিক হওয়ায় স্থানীয় লোকজন সেবা বঞ্চিত হওয়ার আশংকায় রয়েছেন।

গত ২০ সেপ্টেম্বর উপজেলার চুনখোলা ইউনিয়নে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেন। তার স্ত্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক স্নেহলতা বিশ্বাসসহ পরিবারের ৩ সদস্যের সবাই ভারতের নাগরিক। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমন একজন চেয়ারম্যান জয়লাভ করায় পুরো এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

দেশের সম্পদ ভারতে পাচার ও স্থানীয়রা সেবা বঞ্চিত হওয়ার আশংকায় উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন সুশান্ত বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তি।

জানা যায়, চুনখোলা ইউনিয়নের ডাবরা গ্রামের অমৃত লালের ছেলে। পাশাপাশি তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগণা জেলার নাগরিক। সেখানের বনগা মহকুমার বাগদা থানার কনিয়ারা গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোটার তালিকায় তারা নাম রয়েছে। একইসাথে ৮২ নং দক্ষিণ চুনখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক স্নেহলতা পালও কনিয়ারা গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোটার। তাদের ছেলে সৌমিত্র পাল ভারতের নাগরিক। রতের পশ্চিম বঙ্গের প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তার (http://ceowestbengal.nic.in) ওয়েবসাইটে তাদের নাম ও ঠিকানা রয়েছে।

এ ব্যাপারে মনোরঞ্জন পাল জানান, আমি এবং আমার পরিবারের সব সদস্য শুধুমাত্র বাংলাদেশি নাগরিক। ভারতে আমার কোনো নাগরিকত্ব নেই। কোনো ব্যবসা-বাণিজ্যও নেই। একটি কুচক্রী মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

ভারতের পশ্চিম বঙ্গের প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তার (http://ceowestbengal.nic.in) ওয়েবসাইটে আপনার এবং আপনার পরিবারের সব সদস্যের নাম রয়েছে কেন?- এমন প্রশ্নে মনোরঞ্জন পাল বলেন, ওয়েবসাইটের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। ওয়েবসাইট বুঝি না।

মোল্লাহাট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা প্রবীর কুমার মল্লিক বলেন, নির্বাচন বিধিমালা অনুযায়ী কোন ব্যক্তির নাম বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোটার তালিকায় থাকলেই তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। দ্বৈত নাগরিকত্বের বিষয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। এ বিষয়ে প্রশ্ন উঠলে আদালত অথবা সরকারের সাংবিধানিক কোনো প্রতিষ্ঠান যে নির্দেশনা দেবে নির্বাচন কমিশন তা বাস্তবায়ন করবে।

বাগেরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মু. শাহ আলম বলেন, একজন সরকারি কর্মচারী বিনা অনুমতিতে দেশের বাইরে যেতে পারেন না। যদি কোনো শিক্ষক দেশের বাইরে যায় অথবা দুই দেশের নাগরিকত্ব থাকে তাহলে আমরা লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বার্তা বাজার/এসজে

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর