সাভারে বেদখল হওয়া খাল পরিদর্শনে উপজেলা প্রশাসন

জলাশয় দখলদারদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই, দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে জানালেন সাভার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম রাজীব। সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সাভারের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নে শতবর্ষী জয়নাবাড়ি খাল রেকি শেষে সাংবাদিকদের একথা জানান তিনি।

এসময় মঞ্জুরুল আলম রাজীব বলেন, শত বছরের পুরনো এই খালটি হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে জয়নাবাড়ি, জোরপুল ও ভরারী হয়ে ধলেশ্বরী নদীতে পতিত হয়েছে। তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের অর্ধেক এবং বনগাঁও ইউনিয়নের অর্ধেক এলাকার পানি এই খাল দিয়ে পতিত হতো। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, কিছুসংখ্যক মানুষ খালটি ভরাট করে তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করেছে। এটা মোটেও কাম্য নয়।

তিনি জানান, এই খালটিকে তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নবাসীর জন্য দুঃখ বলা যায়। এই খালটি ভরাট হবার কারণে সামান্য বৃষ্টি হলেই জয়নাবাড়ি এবং হেমায়েতপুরের উত্তরাংশ জলাবদ্ধতার শিকার হয়। এমনকি শীতের সিজনেও সামান্য বৃষ্টিতে এখানে নৌকা চলে!

উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে রাস্তা বানালেও রাস্তা টিকে না। পানি জমে থাকায় রাস্তা দ্রুত নষ্ট হয়। আজ আমরা সাভার উপজেলা প্রশাসন এই খাল রেকি করেছি। এখানে সাভার উপজেলার সুযোগ্য ইউএনও সাহেব এসেছেন, উপজেলা প্রকৌশলী রয়েছেন, আমরা এই খাল যেকোনো মূল্যেই উদ্ধার করবো।

সাভারে খাল দখলকারীদের বিরুদ্ধে এপর্যন্ত কি কি ব্যবস্থা নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন জানতে চাইলে মঞ্জুরুল আলম রাজীব বলেন, বর্তমানে খালের উপরে যেসকল নির্মাণ কাজ চলছে তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ভাকুর্তায় একটি খালের ৬ কিলোমিটার দখল মুক্ত করে ইতোমধ্যে খনন করা হয়েছে।

বলিয়ারপুর ও দরিয়াপুর খাল খনন করা হয়েছে। সেখানে এখন পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তবে স্থানীয় মানুষদেরকেও সচেতন হতে হবে। সরকার খাল পুনঃখনন করে; কিন্তু মানুষ তাদের ময়লা-আবর্জনা খালে ফেলে, ফলে খাল ভরাট হয়ে যায়। তাই মানুষ সচেতন নাহলে আমরা তো সবসময় খাল পাহারা দিয়ে রাখতে পারবো না।

খাল দখলে রাজনৈতিক প্রভাবের বিষয়ে রাজীব বলেন, দখলদার তো দখলদার, তার আবার কিসের রাজনৈতিক পরিচয়? দখলদারদের রাজনৈতিক পরিচয় আমাদের কাছে বিবেচ্য নয়। যারাই জলাশয় দখল করবে, আমরা তাদেরকে উচ্ছেদ করবো।

সাভার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাজহারুল ইসলাম জানান, আপনারা সাংবাদিকরাও আমাদের সাথে থেকে অবৈধ দখলদারদের কার্যকলাপ দেখছেন। সাভারের জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে আমরা উপজেলা প্রশাসন এবিষয়ে একসাথে টিম-ওয়ার্ক হিসেবে কাজ করছি। আমরা যা ইতোমধ্যে হারিয়েছি তা পুনরুদ্ধার করা অত্যন্ত কঠিন একটি কাজ।

এক্ষেত্রে জনগনের সম্পৃক্ততা এবং আমরা যে টিম-ওয়ার্কটা করছি, এর কোনো বিকল্প নেই। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে, তারপরও যেখানে দ্রুত দাঁড়িয়ে থেকে কাজ করতে পেরেছি, সেখানে সেভাবেই করেছি।

তিনি আরও বলেন, আজকে যে খালটি দেখলাম, সম্মানিত উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয় বেশ ক’দিন ধরেই এই খালটি পুনরুদ্ধারে আমাকে তাগাদা দিচ্ছিলেন। তারই অংশ হিসেবে এটি আজ আমরা পরিদর্শন করলাম। আমরা অবৈধ দখলদারদের তালিকা এবং খালের যে রেকর্ডীয় অবস্থা, সেটি এক সপ্তাহের মধ্যে নিরুপন করে আশা করছি আমাদের বাজেট স্যাংশন হলে আগামী সপ্তাহে খাল উদ্ধারের দৃশ্যমান পদক্ষেপ আপনারা দেখতে পাবেন।

খাল পরিদর্শন কালে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- সাভার উপজেলা প্রকৌশলী সালেহ হাসান প্রামাণিক, সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভাকুর্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হাজী মোঃ লিয়াকত হোসেন, ঢাকা জেলা উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সায়েম মোল্লা, উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য রাজু আহমেদ, ঢাকা জেলা উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের দপ্তর সম্পাদক টিপু সুলতান প্রমুখ সহ আরও অনেকে।

মোঃ আল মামুন খান/বার্তা বাজার/টি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর