ধোবাউড়ায় প্রশাসনকে মাসোহারা দিয়ে চলে অবৈধ করাতকল!

ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে অবৈধ করাত কল। এগুলোতে নির্বিচারে কাটা হচ্ছে অনেক গাছ। রাতে কিংবা দিনে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলছে কাঠ চেরাই।

এতে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। উপজেলা প্রশাসন ও বনবিভাগের তদারকির অভাবে গভীর রাত পর্যন্ত নিয়মনীতি উপেক্ষা করে চালু করে রাখা হয় এসব স্ব-মিল। এছাড়া সকাল ৬ টার পূর্বে ও সন্ধ্যা ৬ টার পরে স্ব-মিল চালানোর নিয়ম না থাকলেও এসব তোয়াক্কা করছেন না মিল মালিকরা।

আবাসিক এলাকা, সড়ক, নদীর সীমানা ঘেঁষে এবং পাহাড়ের সীমান্ত এলাকায় গড়ে তোলা হচ্ছে এসব স’মিল। এসব মিলের নেই কোন সরকারি অনুমতিপত্র কিংবা লাইসেন্স। পরিবশে অধিদপ্তর কিংবা বনবিভাগের কোন অনুমুতি ছাড়ায় দিনরাত চলছে এসব মিল।

এতে আবাসিক এলাকায় রাতে মানুষ ঠিক মত ঘুমাতে পারছেনা।সীমান্ত এলাকায় অনেক সময় পাহাড়ী গাছ কেটে এসব মিলে ছিড়ানো হয়। নিয়মনীতি উপেক্ষা করে সড়কের পাশে স’মিল গড়ে তোলায় যেমন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের, তেমনি পাড়া-মহল্লায় অপরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা স’মিলের কারণে বিকট শব্দে ভোগান্তি হচ্ছে সাধারণ মানুষের।

ধাইরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আঃ খালেক বলেন,রাস্তার পাশে এসব মিল থাকার কারনে প্রচন্ড শব্দ দুষন হচ্ছে।মিল মালিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়,সংশ্লিষ্ট দফতর এবং দায়িত্বপ্রাপ্তকে ম্যানেজ করে চালানো হচ্ছে এসব মিল।সীমান্ত এলাকা এবং ধোবাউড়া সদরে প্রতিমাসে প্রতিটি মিল থেকে ৫ মন করে লাখড়ি দিতে হয়।

অন্যান্য মিলগুলো মাসোহারা ভিত্তিতে টাকা দেয়। এসব মেনেজমেন্টের কাজ করেন মুন্সিরহাট বাজারের মিল মালিক হারুন। পুরো উপজেলার মিলগুলো নিয়ন্ত্রণ করেন আঃ হেলিম। তিনি কাঠ হেলিম হিসেবে সবার কাছে পরিচিত।বনবিভাগেরপুটিমারী বিটের কর্মকর্তাকেও দিতে হয় মাসোয়ারা।জেলা বন বিভাগের তথ্যমতে, উপজেলায় মোট ৩০টির বেশী স’মিল রয়েছে।

যার মধ্যে ১ টিরও কোনো প্রকার অনুমতিপত্র নেই।সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ধোবাউড়া সদরে ৬টি, দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নে ৫ টি, গোয়াতলা ইউনিয়নে ৪ টি, ঘোঁষগাও ইউনিয়নে ৪টি, গামারিতলা ইউনিয়নে ২টি, পুড়াকান্দুলিয়া ইউনিয়নে ৩ টি এবং বাঘবেড় ইউনিয়নে ৮ টি স’মিল রয়েছে।

মুন্সিরহাট মান্দালিয়া এলাকার মিল মালিক সোহেল মিয়া জানান,সংশ্লিষ্ট দফতরকে ম্যানেজ করে মিল চালানো হচ্ছে। মিল নিয়ন্ত্রনের দায়িত্বে থাকা আঃ হেলিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি ম্যানেজ করার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন লাইসেন্স করার জন্য তিনি আলোচনা করবেন।

এ ব্যাপারে বনবিভাগ ধোবাউড়া পুটিমারী বিটের কর্মকর্তা সাইদুর রহমান মাসোহারা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন উপজেলা প্রশাসন যদি ব্যবস্থা নেয় তাহলে আমরা সহযোগিতা করব।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাফিকুজ্জামান জানান, মোবাইল কোর্ট করে এসব মিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আনিসুর রহমান/বার্তা বাজার/টি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর