মেঘনায় নিজেদের অবৈধ ঘর পুড়িয়ে স্থানীয় জেলেদের ফাঁসানোর চেষ্টা

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের মেঘনার মোহনায় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে নদীতে বড় বড় গাছের খুঁটি দিয়ে মাছ শিকার ও টংঘর নির্মাণ করে চুরি ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছে ভোলার কামাল মহাজন নামের একটি প্রভাবশালী চক্র। চক্রটির নির্মিত টংঘর ধ্বংসসহ ইতোপূর্বে একাধিকবার খুঁটি কেটে দিয়েছে প্রশাসন। তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাজাহান আলীর নেতৃত্বে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন, মৎস বিভাগ ও কোষ্টগার্ড। চক্রটি বেশ কয়েকদিন বিরত থাকলেও হঠাৎ দু সপ্তাহ যাবত মাথাছাড়া দিয়ে উঠে। পুনরায় গাছের খুঁটি দিয়ে জাল বসিয়ে মাছ শিকার শুরু করে। এবং চরমেঘায় টংঘর নির্মাণ করে ছোট বড় সকল প্রজাতির মাছ অবৈধভাবে অন্যত্র পাচার করে। একই সাথে ওই টংঘরে বিভিন্ন অনৈতিক কার্যক্রম চলে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

নদীতে খুঁটি দিয়ে মাছ শিকারের কথা জানতে পেরে গত ১৮ জুন মঙ্গলবার রাতে নদীতে অভিযান চালিয়ে দুই হাজার মিটার অবৈধ জাল আটক করে কোষ্টগার্ড। পরের দিন সকালে মজুচৌধুরী হাট নদী পাড়ে এনে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করে দেয় তারা। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে নিজেদের নির্মিত টং ঘর আগিসংযোগ করে স্থানীয় জেলে জামাল, জহির, নিজাম ও রিপনকে ফাঁসানো সহ হয়রানী চেষ্টা করেছে মহাজন কামাল ও তার লোকজন। একই সাথে চাঁদা দাবী, হামলা, লুটপাটসহ একাধিক মিথ্যা অভিযোগ এনে তাদের হয়রানী করছে বলে দাবী তাদের। অথচ কোনটির সাথে সম্পৃক্ততা না থাকার পাশপাশি এঘটনা সম্পর্কে কিছুই বলতে পারবেন না বলে জানান ভুক্তভোগীরা।

জানাগেছে, বিভিন্ন সময় নদীতে অভিযান পরিচালনা করেন কোস্টগার্ড। এসময় জেলেদের যখন যাকে সামনে পান সাথে করে অভিযানে নিয়ে যায় তাদের। তারই ধারাবাহিকতায় ওইদিন মঙ্গলবার নদীতে জামাল মাঝিকে সাথে নিয়ে যায় কোষ্টগার্ড। এসময় তার সহায়তায় অবৈধ দুই হাজার মিটার জাল জব্দ করা হয়। পরের দিন তা পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। তবে এসময় জহির, নিজাম কিংবা রিপন কেউ ছিলেন না।

এদিকে ওইঘটনার বিষয়ে চরমেঘার স্থানীয় সিরাজ মাঝি, ইয়াকুব ও শাহ সর্দারসহ অনেকে জানান, মঙ্গলবার রাতে ভোলা থেকে কিছু লোক এসে ইছুফ মাঝি, সেলিমসহ নিজেদের ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। এসময় কেন আগুন লাগানো হচ্ছে জানতে চাইলে তারা বলেন, জামাল, জহির এরা তাদের

খুঁটির জাল তুলে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলেছে এবং তাদের অনেক ক্ষতি করেছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে ঘর পোড়া মামলা করে শিক্ষা দেয়া হবে। এমতবস্থায় আগুন লাগানোর বিষয়টি নিয়ে হাস্যরস্যও করেন অনেকে।

ভুক্তভোগী জামাল জানান, আমরা কোষ্টগার্ডের সাথে কাজ করি, আমরা আমাদের পারিশ্রমিক পাই। তারা যে নির্দেশ দেয় আমরা তা করি। ওই দিন রাতে তাদের সাথে গিয়ে অবৈধ জাল জব্দ করছি। কিন্তু চের মেঘায় আমরা কেউ যায়নি। এসময় জহির, নিজাম এবং রিপন কেউ ছিলনা। এসব মিথ্যা বানোয়াট ও হয়রানীর তীব্র নিন্দা জানাই। এবং প্রশাসনের হস্তক্ষে কামনা করি।

এ ব্যাপারে কোস্ট গার্ড লক্ষ্মীপুর মজুচৌধুরীর হাট এর কন্টিজেন্ট কমান্ডার (সিসি) জাহিদ সাংবাদিকদের মুঠোফোনে জানান, দীর্ঘদিন থেকে চর মেঘায় মৎস্য শিকারীরা অবৈধ খুঁটি বসিয়ে ছাই জাল দিয়ে মাছ শিকার করে আসছে যা সম্পন্ন অবৈধ। আমরা অভিযান পরিচালনা করে মঙ্গলবার রাতে নদী থেকে দুই হাজার মিটার অবৈধ ছাই জাল জব্দ করা হয়।

এ ছাড়াও চর মেঘায় টংঘর অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। আমাদের মাঝি জামাল, রিপন, নিজাম ও জহির কখনো আমাদের জন্য জেলেদের কাছে চাঁদা দাবি করেনি। একথা গুলো সম্পন্ন মিথ্যা এবং অবান্তর। যাদের অবৈধ জাল ধ্বংস হয়েছে তারাই এসব কথা সাজিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করে।

Attachments area

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর