খননের অভাবে আশাশুনির মরিচ্চাপ নদী বর্তমানে নালায় পরিণত

শেখ আমিনুর হোসেন, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: কালের আবর্তে আমাদের দেশের অনেক কিছু হারিয়ে যাচ্ছে। অনেক কিছু এমন পর্যায় এসে পৌঁছেছে যে ভাবতে অবাক লাগে এটি কি করে সম্ভব! এমনই একটি অসম্ভব পরিণতির শিকার খর স্রোতের মরিচ্চাপ নদী। সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বড়দল হতে শুরু হয়ে চাপড়ার গা ঘেষে উপজেলা সদরের সীমানা নির্ধারণ করে শোভনালী হয়ে ব্যাংদহা বাজার দিয়ে সাতক্ষীরার প্রাণ সায়ের খালে গিয়ে পৌঁছেছিলো মরিচ্চাপ নদী নামে একটি খর স্রোতের নদী। এ নদির একটি শাখা শালখালী হয়ে কালিগঞ্জের কাঁকসিয়ালি নদীতে গিয়ে নেমেছিলো।

মরিচ্চাপ নদী দিয়ে স্টিমার, লঞ্চ ও বড় বড় নৌকাসহ বাণিজ্যের কাজে ব্যবহৃত অনেক নৌযান এই পথে চলাচল করতো। দেশের বড় বড় শহর এবং ভারতের কোলকাতাসহ বিভিন্ন স্থানে মাদুর, তামাক, ধান, সোনালী আশ পাট আমদানী রপ্তানি ও ব্যবসা বাণিজ্যের প্রধান পথ ছিল এই নদী। নদীতে ছিল বড় আকৃতির ভয়াবহ প্রাণি ও সব ধরনের মাছে পরিপূর্ণ। কিন্তু এখন সে নদী আর নেই। কালের আবর্তে সবকিছু হারিয়ে গেছে। নদীটি বর্তমানে ছোট হতে হতে এখন নালায় পরিণত হয়েছে। নদীর দু’পাশের ভরাটি জমিতে এখন গড়ে উঠেছে অসংখ্য ঘরবাড়ি, স্থাপনা, ইটভাটা, মৎস্য ঘেরসহ অবৈধ ও ইজারা নেওয়ার পর দখল। ফলে নদী দখল হতে হতে এখন খুবই সংকীর্ণ হয়ে গেছে। দখলদারদের কবলে পড়ে নদী এখন খাল নয় বরং কয়েক গজের নালায় পরিণত হয়েছে। ভাটার সময় এখানে কোন পানি থাকেনা। সাধারণ জোয়ারেও পানি উঠেনা। অমাবস্যা, পুর্ণিমা তিথিতে সামান্য পানির ছোয়া পায় এই মৃত নদীটি। ফলে এলাকার পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়েছে।

ধান চাষ যেমন খুবই সমস্যা জর্জরিত, পাশাপাশি মৎস্যঘের গুলো লবণ পানির অভাবে চরম বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ৭/৮ বছর আগে খাল খননের কার্যক্রম হাতে নেওয়া হলেও শেষ করা হয়নি। অপর্যাপ্ত ভাবে ইল্লারচর, ব্যাংদহা এলাকার দিকে খাল খননের কাজ করা হয়েছিল। শোভনালী-নৈকাটির দিকে খনন কাজ করা হয়নি। ফলে সামান্য খননের কাজেরও কোন সুফল এলাকাবাসী দেখতে পায়নি। উপজেলা ও জেলা প্রশাসনসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে এলাকাবাসীর দাবী মরিচ্চাপ নদীটি পুনঃ খননের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হোক। সাথে সাথে নদীর পানি প্রাণ সায়েরে আটকে না থাকে সে ব্যাপারেও সুপরিকল্পিত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর