কিশোরগঞ্জের ভেটেরিনারি সার্জনের বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ

আতিকুর রহমান কাযিন, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ কিশোরগঞ্জ জেলা ভেটেরিনারি হাসপাতালের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. বাহাদুর আলীর বিরুদ্ধে চিকিৎসার নামে অনৈতিক কর্মকা- ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে তদন্ত করছে মৎস্য ও প্রাণিসম্মদ অধিদপ্তর।

এই চিকিৎসা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে খামারিদের ব্যবস্থাপত্রে অপ্রয়োজনীয়, মানহীন ও অখ্যাত কোম্পানির ওষুধপত্র লেখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে খামারিরা সুফল পাওয়ার পরিবর্তে অর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে জানা গেছে। খামারিদের অভিযোগ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অনুমোদন নেই, এমন ওষুধপত্র, এন্টিবায়োটিক ব্যবস্থাপত্রে লিখে দিচ্ছেন দেদারছে।

জানা গেছে, বিভিন্ন কোম্পানির কাছ থেকে কমিশন নিয়ে তিনি দিনের পর দিন এসব অপকর্ম করে যাচ্ছে।
একটি সূত্র জানিয়েছে, তিনি নিজেই কয়েকটি কোম্পানির স্থানীয় পরিবেশক। লোক রেখে ওইসব কোম্পানির মানহীন ওষুধপত্রের বাজারজাত করেন। তিনি ২০০৮ সাল থেকে কিশোরগঞ্জে আছেন। এ ব্যাপারে গত ২০মে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাণিসম্পদ-৩ অধিশাখা থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।

উপসচিব শাহীন মাহবুবা স্বাক্ষরিত নোটিশে বলা হয়, তিনি বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের কাছ থেকে মাসোহারা নিয়ে পোল্ট্রি শিল্পের জন্য ক্ষতিকার ও অনুমোদনবিহীন অবৈধ বিদেশি ভিটামিন এবং এন্টিবায়োটিক ওষুধ এবং অপ্রয়োজনী ওষুধ ব্যবহারে জন্য খামারিদের প্রেসক্রাইব করেন। ফলে একদিকে যেমন খামারিরা প্রতারণা শিকার হচ্ছে অন্যদিকে পোল্ট্রি শিল্পও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অনুমোদনহীন অবৈধ ওষুধপত্র বাজারজাতকরণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করা আইনত অপরাধমূলক কাজ। এছাড়া নোটিশে তিনি ঠিকমতো অফিস করেন না বলেও অভিযোগ করা হয়। নোটিশে তাঁর বিরুদ্ধে কেন বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না এক সপ্তাহের মধ্যে জাবাব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

কিশোরগঞ্জ সদরের পোল্ট্রি খামারি মো. সাইফুল ও হোসেনপুরের পোল্ট্রি খামারি মো.স্বপনের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, তাদের খামারের মুরগির রোগ দেখা দিলে তারা এ চিকিৎসকের কাছে যান। তিনি ব্যবস্থাপত্রে একগাদা অপ্রোয়জনীয় ওষুধ লিখে দেন। এগুলো ব্যবহার করে তারা কোনো উপকার পাননি। পরে অন্য চিকিৎসক দেখিয়ে ওষুধ নিয়ে তাদের মুরগি ভাল করেন।

এ ব্যাপারে কথা বলতে ডা. বাহাদুর আলীর সঙ্গে কথা হলে তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, একটি মহলের চক্রান্তের শিকার হয়েছেন তিনি। তাদের অভিযোগের ফসলই হয়তো এই কারণ দর্শানোর নোটিশ। আমি ওই নোটিশের জবাব দিয়েছি। নোটিশের অভিযোগগুলো সত্য কি-না জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি আমি আনঅফিসিয়ালি জেনেছি। আমাকে ওই নোটিশের কোনো অনুলিপি দেওয়া হয়নি।

আতিকুর রহমান কাযিন
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর