কুড়িগ্রামে শুরু হলো ৩ দিনের দোল উৎসব

একে অপরকে রঙ মাখিয়ে পালন করা হয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের রঙের উৎসব যাকে বলে দোল খেলা বা হোলি খেলা। আজ দোল পূর্নিমা। কুড়িগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় জাকজমকভাবে এই উৎসব পালিত হচ্ছে ।

ফাগুনের রঙ্গে সবার হৃদয় রঙ্গিন হোক। আনন্দে উচ্ছাসে ভরে উঠুক সবার জীবন। সবাইকে দোল পূর্ণিমার শুভেচ্ছা।

দিনের প্রথম ভাগে রং দিয়ে ভরিয়ে ফেলা হয় সব এলাকা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অনেকেই একে অন্যের গায়ে রঙ মেখে চেহারাই বদলে ফেলেন। সারা দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা এইদিনে রঙ খেলার উৎসবে মাতেন। আত্মীয় এবং প্রতিবেশীরা একে অন্যের বাড়িতে গিয়ে রং দিয়ে আসে।
খ্রিস্ট জন্মেরও কয়েক শ’ বছর আগে থেকে হোলি উদযাপন করা হতো বলে জানা যায়। ভারতবর্ষের পূর্বাঞ্চলের প্রাচীন আরিয়ান জাতির কাছ থেকে এই উৎসবের জন্ম বলে ধারণা করা হয়। এই উৎসবের নমুনা পাওয়া যায় খ্রিস্ট জন্মেরও প্রায় ৩০০ বছর আগের পাথরে খোদই করা একটি ভাস্কর্যে। তাছাড়া এই উৎসবের উল্লেখ রয়েছে হিন্দু পবিত্র গ্রন্থ বেদ এবং পুরানেও।

দোলযাত্রা একটি হিন্দু বৈষ্ণব উৎসব। এই উৎসবের অপর নাম বসন্তোৎসব। ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে দোলযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। বৈষ্ণব বিশ্বাস অনুযায়ী, ফাল্গুনী পূর্ণিমা বা দোলপূর্ণিমার দিন বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ আবির ও গুলাল নিয়ে রাধিকা ও অন্যান্য গোপীগণের সহিত রং খেলায় মেতেছিলেন। সেই ঘটনা থেকেই দোল খেলার উৎপত্তি হয়।

দোলযাত্রার দিন সকালে তাই রাধা ও কৃষ্ণের বিগ্রহ আবির ও গুলালে স্নাত করে দোলায় চড়িয়ে কীর্তনগান সহকারে শোভাযাত্রায় বের করা হয়। এরপর ভক্তেরা আবির ও গুলাল নিয়ে পরস্পর রং খেলেন। দোল উৎসবের অনুষঙ্গে ফাল্গুনী পূর্ণিমাকে দোলপূর্ণিমা বলা হয়। আবার এই পূর্ণিমা তিথিতেই চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্ম বলে একে গৌরপূর্ণিমা নামেও অভিহিত করা হয়।

উৎসবটি উপলক্ষে আজ থেকে কুড়িগ্রাম কেন্দ্রীয় রাধা-গোবিন্দ মন্দিরে শুরু হয়েছে ৩ দিন ব্যাপী দোল উৎসব । উৎসবের প্রথম দিন ভোর থেকে মন্দিরে চলছে নাম কীর্তন ও ভগবানের চরণে আবির দেয়া ,এরপর দ্বিতীয় দিন অনুষ্ঠিত হবে হোলি খেলা,অষ্টকালীন লীলা কীর্তন ও প্রসাদ বিতরণ,এবারের লীলা কীর্তনে কুড়িগ্রামে ভারত থেকে ৩ টি দল আসছে,উৎসবের শেষ দিন হবে মহাপ্রভুর ভোগ আরতি, মোহন্ত বিদায়. ও প্রসাদ বিতরণ । এছাড়াও দোল পূর্নিমা কে ঘিরে কুড়িগ্রাম নামহট্ট জগন্নাথ ইসকন মন্দির থেকেও ২ দিনের উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে ।

দোলযাত্রা উৎসবটি ধর্মনিরপেক্ষ দিকও রয়েছে। এই দিন সকাল থেকেই নারীপুরুষ নির্বিশেষে আবির, গুলাল ও বিভিন্ন প্রকার রং নিয়ে খেলায় মত্ত হয়। হোলি খেলা এতটাই মজার যে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাই মাতে এ উৎসবে।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর