ওজিলের বিয়েতে এরদোগান, সামালোচনায় মুখোর জার্মান
অবশেষে বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন মেসুত ওজিল। তুরস্কের রাজধানী ইস্তানবুলের বস্পোরাস স্ট্রিটের অভিজাত এক হোটেলে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারেন তিনি।
এদিন প্রেমিকা অ্যামিনে গুলসকে খাতাপত্রে নিজের করে নেন এই ফুটবল তারকা। ওজিলের স্ত্রী পেশায় মডেল ও অভিনেত্রী। তিনি তুর্কি বংশোদ্ভূত হলেও সুইডেনের নাগরিক। ২০১৪ সালে ‘মিস তুর্কি’ নির্বাচিত হন তিনি। একই বছর ‘মিস ওয়ার্ল্ড-২০১৪’এ অংশ নেন এ তরুণী। ওজিলের সঙ্গে তার সম্পর্ক দীর্ঘদিনের।
ওজিলের বিয়েতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান।
জানা গেছে, এরদোগান অনুষ্ঠানে না আসা পর্যন্ত বিয়ের কোনো কাজে হাতই দেয়নি ওজিল ও তার পরিবার।
গতকাল রাতে বিয়ের সেই ছবি ইতিমধ্যে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শেয়ার করেছেন ওজিল। ছবির ক্যাপশনে ওজিল লিখেছেন, মিসেস এবং মি. ওজিল।
আপলোডের পর গত ৮ ঘণ্টায় ৪ লাখ ৭৫ হাজার লাইক জমা পড়েছে এতে। ১২ হাজারের বেশি শেয়ারের সঙ্গে ওজিলভক্তরা ২০ হাজার কমেন্টে ভাসিয়েছেন ওজিলকে।
ভক্ত-অনুরাগীরা শুভেচ্ছা ও নতুন জীবনের শুভকামনা পাঠাচ্ছেন।
নববধুর সঙ্গে ছবি ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ গণমাধ্যমে যে ছবিটি বেশি প্রচার পেয়েছে সেখানে দেখা গেছে, বিয়ের মঞ্চে সহধর্মিণীসহ নব দম্পতির সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছেন এরদোগান ও তার স্ত্রী। এ সময় মঞ্চে ওজিলের বাবাও উপস্থিত ছিলেন।
ওজিলের সঙ্গে অত্যন্ত সুসম্পর্ক থাকার কারণেই বিয়েতে প্রধান অতিথি হিসেবে নিমন্ত্রণ পান তুরস্কের রাষ্ট্রপতি।
গত মার্চ মাসে সাক্ষাৎ করে তুর্কি প্রেসিডেন্টের হাতে বিয়ের নিমন্ত্রণপত্র দিয়ে এসেছিলেন ওজিল ও গুলসে। সেসময় তাদের আশীর্বাদ করেন এরদোগান। আলোচিত বিয়েতে উপস্থিত হবেন বলে কথাও দিয়েছিলেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট।
সেই কথা তো রাখলেনই পাশাপাশি বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার গুরুদায়িত্বও নেভান এরদোগান। অথচ এরদোগানের সঙ্গে সুসম্পর্কের কারণে অকালে জাতীয় দল থেকে অবসর নিতে হয় ওজিলকে।
গত বছর রাশিয়া বিশ্বকাপের আগে এরদোগানের সঙ্গে ওজিল ও তার জার্মান দলের সতীর্থ ইলকায় গুন্দোগান ছবি তোলেন। সে ছবি ভাইরাল হলে জার্মানে বেশ সমালোচিত হন ওজিল।
সে সময় একটি ভিডিও ক্লিপ নিজের ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেন ওজিল। তাতে দেখা যায়, এরদোগানকে আর্সেনালের জার্সি উপহার দিচ্ছেন তিনি।
আর বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেননি জার্মানরা। এরপর বিশ্বকাপে দ্বিতীয় রাউন্ডেও উঠতে পারায় এর সমস্ত দায় ওজিলের ঘাড়ে চাপিয়ে দেন জার্মানের সাবেক ফুটবলাররা।
তুরস্ক প্রীতির কারণে হৃদয় দিয়ে মাঠে খেলেননি ওজিল এই অভিযোগ এনে ওজিলকে দল থেকে বাদ দিতে নানা কথা ওঠান তারা। উগ্র সমর্থকদের কাছ থেকে ঘৃণিত বার্তা হতে শুরু করে মৃত্যু হুমকিও পান তিনি। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে জাতীয় দল থেকে অবসর নেন ২৯ বছরের মিডফিল্ডার।
২০১৪-এর বিশ্বকাপে জার্মানকে শিরোপা এনে দিয়েছেন ওজিল।আর এবার সেই জার্মান ব্যর্থ হওয়া দোষ চাপানো হয় ওজিলের ঘাড়ে।তাই ক্ষিপ্ত হয়ে অবসরের সময় একটি কথাই বলেছেন ওজিল, ‘আমরা জিতে গেলেই আমি জার্মান, আর হেরে গেলেই যেন অভিবাসী!’
ওজিলের বিয়েতে এরদোগানকে প্রধান অতিথি হিসাবে নিমন্ত্রণ দেয়াটাকে ভালো চোখে দেখছেন না জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলের চিফ অব স্টাফ হেল্গ ব্রউন।
তিনি জানিয়েছেন, একবার এরদোগানের সঙ্গে ছবি তুলে সমালোচিত হওয়ার পর ফের ওজিলের এই কাজ আরও সমালোচনার সৃষ্টি করবে।
যদিও তুরস্কের বংশোদ্ভূত জামার্ন নাগরিক এসব সমালোচনাকে পাত্তাই দিচ্ছেন না।