শিক্ষার ক্ষেত্রে সাতক্ষীরার মানুষকে জাগিয়ে তুলেছিলেন সাংবাদিক মোতালেব

শেখ আমিনুর হোসেন, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: মৃত্যুর কাছে মানুষ আবদ্ধ হয়ে হারিয়ে ফেলে আপন জন কিংবা প্রিয়জন। সেই মানুষের কাছে মানুষ হয়ে ওঠে উদ্বিঘ্ন, যার অস্তিত্বে চেতনায় ছিলো সংগ্রামিত সংযোগ, যার দৃষ্টির দরবারে ছিলো বিচক্ষনতার পরিচয়। সেই পরিচয়ের প্রতিনিধি আমাদের প্রয়াত প্রাণ প্রিয় মোতালেব ভাই। এই মোতালেব ভাই, বট বৃক্ষের মতো দাঁড়িয়ে ছিলেন আমাদের এই সাতক্ষীরায়। আজ তিনি নেই-তবু তাঁর কথা মনে পড়ে বার বার।

তাঁর কর্ম দক্ষতার ক্ষমতা ছিলো অসাধারন, অতুলনীয়, যার অভাবে অনেক স্বপ্ন ভেঙে গেছে আমাদের। তিনি ছিলেন বিদ্যা কর্মট এবং ভীষন সাহসী ও বুক বলের মানুষ। সেই মানুষটিকে কেন্দ্র করে নানান কাজের অনুশীলনে বসতো লোক সমাজের দরবার। লাভ ক্ষতি যাহাই হোক না কেন মানুষ তাকে ভালবাসতো কারন তিনি কাউকে বিমুখ করতেন না। আমি ব্যক্তিগত ভাবে তাকে কতো খানি জানি-তিনি একজন ব্যতিক্রম ধর্মী কর্তব্য পরায়ন মানুষ, তার মতো মানুষ আর জন্ম হবে না এখানে তিনি মানুষের জন্য যা করে গেছেন, সে কথা প্রকাশ করা হয়তো সব সম্ভব হবে না, তবে তাঁর কিছু কথা বলা যেতে পারে যেমন তিনি ছিলেন রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির ভাইস প্রেসিডেন্ট। সেই হিসাবে তিনি ইউরোপের বেলগ্রেড পর্যন্ত ছুটে যান, সমগ্র বাংলাদেশ এবং সাতক্ষীরার মুখ উজ্জ্বল করে অনেক সম্মানের সহিত খ্যাতি অর্জন করেন এবং দেশ ও দশের সেবায় আত্ম নিয়োগ করে তাঁর ব্যস্ততা ছিলো চঞ্চল হরিনের মতো। তাঁর সে সব অবদান এখনো আমরা দেখতে পাই, সে সব গুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

১৯৭১ সালে সাতক্ষীরা পৌর সভার মধ্যে তিনি ১১টি সম্পূর্ণ নতুন প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন-যাহার কোনো অস্তিত্ব ইতি পূর্বে ছিলো না এবং ঐ বিদ্যালয় গুলি তার একান্ত প্রচেষ্টায় সম্পূর্ণ সরকারি ভাবে অনুমোদিত হয়। যার ফলে বহু বেকার ছেলে, মেয়েদের কর্ম সংস্থান হয় এই অবদান চিরদিন স্মরণীয় হয়ে থাকবে। শুধু তাই নয় ঝড়, তুফান, বন্যায় প্রাকৃতিক দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের পাশে থেকে সকল ধরনের সহায়তা দিয়ে তাদের কষ্টকে দুরিভূত করার জন্য তাঁর প্রচেষ্টার শেষ ছিলো না। যাদের যে রকম সমস্যা সেই ভাবেই তিনি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতেন, ঘরহীন মানুষদের পুনঃবাসনের ব্যবস্থাপনায় তাঁর আন্তরিক প্রচেষ্টা ছিলো অব্যাহত। এত সব সমস্যার মধ্যে ও তিনি কুমিরা ডিগ্রী কলেজ ও কুমিরা মহিলা গার্ল হাই স্কুল, ছফুরন্নেছা ডিগ্রী কলেজ, সাতক্ষীরা দিবা নৈশ মহা বিদ্যালয় উনার একান্ত প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া জেলার সর্বত্র তাঁর প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে সমগ্র বাংলাদেশে ব্যাপি।

এই মহা মুল্যবান জীবনের প্রতিভা বিকশিত হয়ে আমি ও আমরা মর্মে মর্মে অনুভব করি তাঁর কৃর্তিগাথাকে, তাকে নিয়ে আমাদের অনেক আশা আজ অপূর্ণ রয়ে গেছে। তাঁর এই সমৃদ্ধশীল উন্নয়নে অবদান করে রেখেছে মানুষের অন্তর। শিক্ষার ক্ষেত্রে তিনি সাতক্ষীরার ঘুমান্ত মানুষকে জাগিয়ে তুলেছেন তারই প্রচেষ্টা এবং পরিশ্রমের মধ্যে। তিনি চলে গেছেন…………..আমাদের ছেড়ে। তবু ও এখনো আমাদের বুকের হাহাকার কমেনি। এমন গুনিজনকে হারিয়ে আমরা যেন অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছি। এমন মানুষকে আর কোথায় পাবো? তাকে ভাই বলে ডাকতাম-তিনি ও আমার বোনের মর্যাদার মূল্য দিয়ে গেছেন। আজ তাঁর জন্য দোয়া করি যেন তিনি বেহেস্তবাসী হয়ে চির শান্তির নিদ্রায় শায়িত থাকেন, মহান আল্লাহ পাক তাঁর রহমতে বর্ষনে আত্মার শান্তি দান করেন। আমীন

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর