কলাপাড়ায় ভিজিএফ’র চাল বিতরনে অনিয়ম ধামা চাপা দিতে মামলা

আহম্মেদ পাশা তানভীর, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে সরকারের বরাদ্দকৃত মৎস্যজীবি জেলেদের মধ্যে ভিজিএফ’র চাল বিতরনের সময় দু’লাখ টাকা চাঁদার দাবীতে ৯০০ কেজি চাল ছিনিয়ে নেয়ার কথিত ঘটনায় মামলা হয়েছে।

বুধবার মহিপুর ইউপি সদস্য মো. মামুন হাওলাদার বাদী হয়ে কলাপাড়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে ২০/২৫ জন অজ্ঞাত আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি দায়েরের পর বিজ্ঞ আদালত মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ঘটনার তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন।

মামলার বিবরনে জানা গেছে, গত রবিবার (২৬ মে) সকাল ১০ টার দিকে উপজেলার মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের নিচতলায় জেলেদের মধ্যে চাল বিতরনের সময় ওই ৬ আসামী সহ অজ্ঞাত পরিচয়ধারী ২০/২৫ জনের একদল সন্ত্রাসী চেয়ারম্যান আ. ছালাম আকনের কাছে ১২ টন চাল কিংবা দু’লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। এতে চেয়ারম্যান ওই চাল কিংবা টাকা দিতে অস্বীকার করায় সন্ত্রাসীরা খুন-জখমের ভয় দেখিয়ে জোর পূর্বক ৩০ বস্তা (৯০০) কেজি চাল ছিনিয়ে নেয়।

এর আগে ২৫ মে শনিবার মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদে জেলেদের জন্য সরকারের বিশেষ বরাদ্দের ৩০ কেজি করে চার মাসের চাল বিতরণ করা হয়। চাল বিতরণ কালে ১২০ কেজির পরিবর্তে ১০৫ কেজি চাল জেলেদের দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন জেলেরা। এতে প্রকৃত জেলেরা চাল না পেয়ে ফুঁসে উঠতে শুরু করে।

এছাড়া জেলেদের চালের তালিকায় রয়েছে মৃত ব্যক্তি, প্রবাসে থাকা ব্যক্তি, হোন্ডাচালক, ভ্যান চালক, দোকানদার, বিত্তশালী ব্যক্তিদের নাম। যে সকল জেলেরা জীবনবাজী রেখে বঙ্গোপসাগরে ইলিশ আহরন করে তাদের নাম নেই জেলে তালিকায়। মহিপুর ইউনিয়নের জেলেদের চাল বিতরণ তালিকার ৮৮ নং ক্রমিকে লাল মিয়ার পুত্র মৃত বাবুল হাং, ১২৩ নং ক্রমিকের রমজান আলি হাওলাদারের পুত্র মৃত আবুল কাশেম হাং, ১৪৮ নং ক্রমিকে মালেক মোল্লার পুত্র মৃত মাহবুব মোল্লার নামে চাল উত্তোলন করার অভিযোগ উঠেছে।

এছাড়াও ছত্তার খাঁনের পুত্র মালয়েশিয়া প্রবাসী ইউসুফ খাঁন হোসেন আলী জমাদ্দারের পুত্র রবিউল জমাদ্দারও প্রবাসী হয়ে দেশে অনুপস্থিত থেকে জেলেদের নামের চাল উত্তোলন করেন। এসব অনিয়ম ধামা চাপা দিতে পরিষদ থেকে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলছেন স্থানীয়রা। এমনকি যে সব জেলেরা চাল বিতরনের অনিয়ম নিয়ে সাংবাদিকদের তথ্য দিয়েছেন তাদেরকে মামলায় আসামী করা হয়েছে বলছেন ভুক্তভোগী চাল বি ত জেলেরা।

এ বিষয়ে মহিপুর সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আ: মালেক আকন জানান,’ চাল নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম ধামা চাপা দিতে হতদরিদ্র জেলেদের নামে মামলা দেয়া হয়েছে। তিনি মিথ্যা মামলা দায়েরের প্রতিবাদ ও নিন্দা জ্ঞাপন করেন।

তিনি আরও জানান, জেলেদের চাল পরিমাপে কম দিয়ে উদ্বৃত্ত চাল কালোবাজারে বিক্রী করে ক’জন ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যান ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। জেলেরা চাল নিয়ে অনিয়মের বিষয়ে ইউএনও’র কাছে অভিযোগ দিলে তিনি মৎস্য কর্মকর্তাকে তদন্ত করার নির্দেশ দেন বলে জানান তিনি।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর