কলাপাড়ায় সর্বস্ব হারানোর শংকায় সংখ্যালঘু পরিবার

আহম্মেদ পাশা তানভীর, কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের আমিরাবাদ গ্রামের স্থাণীয় প্রভাবশালী ভূমি দস্যুদের প্রতারনাসহ অব্যাহত হুমকিতে বাপ-দাদার ভিটাসহ সর্বস্ব হারানোর শংকায় পরেছে সংখ্যালঘু সঞ্জিব চন্দ্র হাওলাদার।

চিহ্নিত এসব ভূমি দস্যুদের প্রতারনায় অসহায় হয়ে প্রতিকারের আশায় এখন তিনি ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রশাসনসহ জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে। সঞ্জিব চন্দ্র হাওলাদার জানান, পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের সোনাতলা মৌজার ৪০৮ নং এসএ খতিয়ানের ৬০৬৫ ও ৬০৬৬ দাগ থেকে ৩.০৪ একর জমি (১৮/০৫/১৯৬০ সালে) ৩৭১১ নং সাব কবলা দলিলমূলে ক্রয় করেন তার বাবা অতুল হাওলাদার।

নাম খারিজসহ সর্বশেষ বিএস জরিপ সম্পাদনের মাধ্যমে প্রায় ৬০ বছর ধরে তারা বসবাস করছেন। এসএ খতিয়ানের মূল মালিক একই এলাকার মৃত রাধা সুন্দর অধিকারীর পুত্র বাবু রাম অধিকারীর থেকে জমি ক্রয় করা হলেও নীলগজ্ঞ ইউনিয়ন আ.লীগ নেতা রহমান তালুকদার, যুবলীগ নেতা কবির তালুকদার, বিএনপি নেতা আইয়ুব আলী শরিফ, দলিল লিখক আব্দুল্লাহ্ আল-মামুনসহ ইউনূস, দুলাল, গৌতম মিস্ত্রি তার বসতভিটা দখলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে।

পার্শ্ববর্তী বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার বেতীপাড়া গ্রামের কৃষকান্তি সিপাই, দিজেন সিপাই, বিধান সিপাই, সঞ্জয় সিপাই, সুভাষ সিপাই, স্বপন সিপাইকে ওয়ারিশ দেখিয়ে চলতি বছরের ২২মে কলাপাড়া সাব রেজিষ্টার অফিসের মাধ্যমে বায়না চুক্তিপত্র দলিল করেন। (দলিল নং ২০৭৬,২০৮৬)। এরপরে একদল সন্ত্রাসী নিয়ে তাদের বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ করতে হামলাসহ একের পর এক মামলা দিয়ে হয়ারি করছে।

এ বিষয় জানতে চাইলে বায়না দলিল গ্রহীতা নীলগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা কবির বলেন, ভূয়া দলিলের মাধ্যমে সঞ্জিব প্রায় পচিশ বছর ধরে এই জমি ভোগদখল করে আসছে।অপর গ্রহীতা ইউনুস হাওলাদার জানান, জমির মূল মালিকের ওয়ারিশরা এই জমি সম্পর্কে অবহিত হয়ে আমাদের কাছে জমি বিক্রির জন্য আসলে কাগজপত্র সঠিক দেখে সাতজনে মিলে জমিক্রয়ের জন্য বায়না চুক্তি করি।

নীলগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা রহমান তালুকদার জানান, এই জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। আদালত যার পক্ষে রায় দেবে উক্ত জমি তার। এদিকে বায়নাচুক্তির অপর গ্রহীতা গৌতম মিস্ত্রি জানান, অপর ছয় গ্রহীতা প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে তাকে না জানিয়ে উক্ত দলিলে গ্রহীতা হিসাবে অন্তর্ভূক্তি করেছে। এসব প্রতারকদের সাথে তার কোন সংশ্লিষ্ঠতা নেই।

নিলগঞ্জ ইউনিয়নের ইউপি সদস্য জগৎ জীবন রায় জানান, পূর্ব পুরুষ থেকে সজ্ঞবীবের পরিবার ওই জমিতে বসতভিটা তুলে বসবাস করছে। ষাট বছরে কোন ওয়ারিশের দাবিদার না থাকলেও স্থানীয় চিহ্নিত ভূমি দস্যুরা ভূয়া ওয়ারিশ তৈরি করে সজ্ঞীবের জমি দখলের চেষ্টা করছে।নিলগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ্যাড. নাসির মাহমুদ বলেন, বায়না দলিল হওয়ার পরে বিষয়টি অবগত হয়েছি। মূল মালিকের নামে ভূল থাকার কারনে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে বলে জেনেছি। এ নিয়ে হামলা মামলার ঘটনা ঘটেছে বলেও শুনেছি।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর