পবিত্র মাসে অনৈতিক কার্যকলাপ, মসজিদের মাইকিংয়ে হুলস্থুল ব্যাপার!

রাজশাহী কলেজের এক ছাত্র দুই বন্ধুকে নিয়ে রোজার রাতে তাঁর প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গেলে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে পুঠিয়া উপজেলার হারুগাতি গ্রামে।

গ্রামবাসী ওই প্রেমিককে আটক করে গণধোলাই দিয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে পুলিশকেও অবরুদ্ধ করে রাখে উত্তেজিত গ্রামবাসী। পরে সোমবার (২৭ মে) সকালে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

মেয়েটি পুলিশকে জানিয়েছে, দেখা করতে এসে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে হায়দার তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে। এ সময় তার দুই বন্ধু পাশের বাজারে অপেক্ষায় ছিল। তবে ঘটনা টের পেয়ে স্থানীয়রা হায়দারসহ তার দুই বন্ধুকে আটকে গণপিটুনী দেয়। এক পর্যায়ে প্রেমিক হায়দারের এক পায়ে লোহার রডও ঢুকিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী।

পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে রাজশাহীর পুঠিয়া থানা পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যায়। তারা অভিযুক্তদের আটক করে থানায় নিতে যেতে চাইলে গ্রামবাসী বাধা দেয়। তারা পুলিশকে জানায়, সকালে স্থানীয় চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে বিচার হবে।

এ নিয়ে গ্রামবাসী ও পুলিশের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে মসজিদের মাইক থেকে পুলিশকে প্রতিহত করতে গ্রামবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় উত্তেজিত গ্রামের লোকজন পুলিশের গাড়ির হাওয়া ছেড়ে দিয়ে পুলিশকে অবরুদ্ধ করে রাখে।

গ্রামবাসী থানার নারী পুলিশ সদস্যদের লাঞ্ছিতও করে। এ সময় পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। পরে ভোরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে এক এক করে অভিযুক্তদের থানায় নিয়ে যায়।

রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদুল হাসান জানান, আহত হায়দারকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। হায়দারের প্রেমিকা পুলিশকে জানিয়েছে, দেখা করতে এসে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে হায়দার তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেছে।

এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা ধর্ষণের অভিযোগে পুঠিয়া থানায় হায়দারকে প্রধান আসামি এবং তাঁর দুই বন্ধুকে সহযোগী হিসেবে উল্লেখ করে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। হায়দার ও তাঁর দুই বন্ধুকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরো জানান, ঘটনার সময় পুলিশের ওপর হামলার কারণে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে পুঠিয়া থানা পুলিশের পক্ষ থেকে আরো একটি মামলা করা হয়েছে। পুলিশের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িতদের আটকের জন্য অভিযান চালানো হবে।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর