জাবিতে ‘ছাত্র শৃঙ্খলা বিধি’ বাতিল করতে ছাত্র ফ্রন্টের বিবৃতি

শিক্ষার্থীদের মতামত প্রকাশ ও প্রশাসনের সমালোচনার সীমানা বিমুর্তভাবে নির্ধারণ করে তৈরিকৃত ছাত্র শৃঙ্খলা বিধিকে দুরভিসন্ধিমূলক, স্বেচ্ছাচারী, অগণতান্ত্রিক ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণকারী উল্লেখ করে বিবৃতি প্রকাশ করেছেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। সোমবার দুপুরে সংগঠনটি থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

এক যৌথ বিবৃতিতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের জাবি শাখার সভাপতি সুস্মিতা মরিয়ম ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ দিদার এই দুরভিসন্ধিমূলক ধারা বাতিলের দাবী জানিয়ে বলেন- “মতামত প্রকাশের স্বাধীনতাকে আইন দিয়ে রুখতে যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বৈরাচারী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় এই আইন আরো বেশি ভয়ংঙ্কর। এটি রাষ্ট্রের বহু আলোচিত ৫৭ ধারারই নামান্তর। এর মধ্যদিয়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা এবং প্রতিবাদী মনোভাবকে বাধাগ্রস্থ করবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় তার অপকর্মগুলোকে অাইনের ফাঁদে ফেলে সবার সামনে প্রকাশ করতে দিবে না । রাষ্ট্র যেমন একভাবে করে সকলের স্বাধীনতাকে চেপে ধরছে, বিশ্ববিদ্যালয় ও ঠিক সেই পথেই হাটছে। অবিলম্বিতে এই স্বেচ্ছাচারী ধারার বাতিল চাই।”

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের শৃঙ্খলা-সংক্রান্ত অধ্যাদেশ হালনাগাদে দুটি সংশোধিত ধারা যুক্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। যার মধ্যে অধ্যাদেশের ৫-এর (ঞ) নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনও ছাত্র/ছাত্রী অসত্য এবং তথ্য বিকৃত করে বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত কোনও সংবাদ বা প্রতিবেদন স্থানীয়/জাতীয়/আন্তর্জাতিক প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক সংবাদ মাধ্যমে/সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ/প্রচার করা বা উক্ত কাজে সহযোগিতা করতে পারবে না।’

৫-এর (থ) নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনও ছাত্র/ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও ছাত্র/ছাত্রী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীর উদ্দেশে টেলিফোন, মোবাইল ফোন, ই-মেইল, ইন্টানেটের মাধ্যমে কোনও অশ্লীল বার্তা বা অসৌজন্যমূলক বার্তা প্রেরণ অথবা উত্ত্যক্ত করবে না।’

অধ্যাদেশ মতে, ধারা দুটির ব্যত্যয় ঘটলে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের চোখে ‘অসদাচরণ’ বলে গণ্য হবে। এজন্য লঘু শাস্তি হিসেবে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা, সতর্কীকরণ এবং গুরু শাস্তি হিসেবে আজীবন বহিষ্কার, বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার, সাময়িক বহিষ্কার ও পাঁচ হাজার টাকার উর্ধ্বে যেকোনও পরিমাণ জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

সংশোধিত অধ্যাদেশে যুক্ত হওয়া নতুন এ দুটি ধারা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মী, সাংবাদিক, অ্যাক্টিভিস্টরা ধারা দুটিকে নিবর্তনমূলক অ্যাখ্যা দিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতেই ধারা দুটি যুক্ত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সাংবাদিকতা বাধার মুখে পড়বে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর