সিরাজগঞ্জে শ্রমিক সংকটে কৃষকের কপালে ভাঁজ

সিরাজগঞ্জে বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে এখন পাকা ধানের ছড়াছড়ি। তবে ধান কাটা শ্রমিক সংকটে কৃষকের কপালে ভাঁজ পড়েছে। কারণ ধানের দাম কম আর শ্রমিকের মজুরী বেশি। প্রায় এক,দেড় মণ ধানের দামে মিলছে একজন শ্রমিক ।

নিরূপায় হয়ে বাড়তি টাকা দিয়েই শ্রমিক লাগিয়ে তারা ধান কাটছেন অনেকে নিজেই ধান কাটছেন । ফলে বোরোর বাম্পার ফলন হলেও বাড়তি ব্যয়ের জন্য লোকসানের আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের কৃষক পলান সেখ বলেন, আমি ৬ বিঘা জমিতে বোরো ধান লাগিয়েছি। অর্ধেক ধান কাটা হয়েছে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না,বাধ্য হয়ে ছেলেকে সাথে নিয়ে নিজেই ধান কাটছি,প্রতি বিঘাতে প্রায় ২০ মণ করে ধান হয়েছে।

তাড়াশ উপজেলার কয়েকজন কৃষক জানান, এ বছর জমিতে ইরি,বোরো ধান চাষ করেছেন। শ্রমিক না পাওয়ায় এখনো জমির সব ধান কেটে ঘরে তুলতে পারেননি। কৃষক মোতাহার জানান ধানের ফলন ভালো তবে দ্বিগুণ টাকা দিয়ে ধান কাটতে হচ্ছে, এই বাড়তি খরচের কারণে কৃষকদের আরো বেশি লোকসানে পড়তে হবে।

কাজিপুর,শাহাজাদপুর,কামারখন্দ ও উল্লাপাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শ্রমিকের অভাবে বোরো ধান কাটা নিয়ে তারা পড়েছেন বিপাকে। একজন শ্রমিকের মুজরি দিতে হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। শ্রমিক সংকট তীব্র হওয়ায় এমন মুজরি দিতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকরা।

এদিকে রায়গঞ্জ মাত্রারিক্ত ইটভাটার কারনে শ্রমিক সংকট আরো প্রখর। এ এলাকায় বেশি শ্রমিক পাওয়া যায় না তাই বিভিন্ন উপজেলা থেকে শ্রমিক এসে কাজ করছেন। খুচরা শ্রমিক চড়াদামেও মিলছে না,চুক্তিতে ১ মণ ধান কাটতে ১২ কেজি থেকে ২০ কেজি র্পযন্ত দিতে হচ্ছে শ্রমিকদের কে ,অর্থাৎ অর্ধেক ধান দিতে হচ্ছে শ্রমিকের পারিশ্রমিক । বগুড়া ধুনট থেকে আগত শ্রমিক ইউসুফ বলেন প্রতি দিন ১মণ থেকে দেড়মণ ধান পাচ্ছি। তবে তীব্র গরমে অনেক কষ্ঠ হচ্ছে ।

এসব ধান স্থানীয় বাজারে বিক্রী হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা মণ। কোনোভাবেই ক্ষেত গিরাস্থীর হিসাব মিলানো যায় না । জেলার সব গুলো উপজেলায় প্রায় ৫০ শতাংশ বোরো ধান কাটা হয়েছে। উপজেলার সচেতন মহল মনে করছেন ধানের দাম বাড়বে,তবে জন মনে প্রশ্ন কবে বাড়বে এই দাম,প্রান্তিক চাষী ,বর্গা চাষী যারা তারা তো ধান রাখতে পারে না । ধানের দাম নিয়ে হতাশ ,দিশেহারা কৃষককুল ।

এ ব্যাপারে রায়গঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাজমুল হক মন্ডল বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে ইরি বোরো ধানের চাষ বেশ ভাল হয়েছে। কিন্তু ঘূর্ণী ঝড় ফণীর প্রভাবে ২৭০০ হেক্টর জমির ধান মাটির সাথে নুয়ে পরে ফলে এসব ধান কাটতে শ্রমিক মজুরি বেশি দিতে হচ্ছে ।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর