২ মণ ধানের দামেও মিলছেনা একজন শ্রমিক, পাকাধান বর্গা দিচ্ছেন কৃষক

শেরপুর জেলার নকলা উপজেলায় ধান কাটা শ্রমিকের আকাল পড়েছে। ২ মণ ধানের দামেও মিলছেনা একজন ধানকাটা শ্রমিক। চলতি মৌসুমে মাঝে মধ্যে ঝড়, বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন কৃষক। এছাড়াও ধান কাটতে গিয়ে পড়েছেন মহাবিপাকে। পাওয়া যাচ্ছে না পর্যাপ্ত শ্রমিক। আর যাও মিলছে, প্রতিজনের দৈনিক মজুরি ৯০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকা।

যেখানে একমণ ধানের বর্তমান বাজার মূল্য ৪৫০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা, সেখানে একজন ধানকাটা শ্রমিকের দৈনিক মজুরি বাবদ কৃষককে গুণতে হচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ টাকা। এক দিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অন্যদিকে মানব সৃষ্ট শ্রমিক সংকটের কবলে পড়ে কৃষকরা আজ দিশেহারা হয়ে পড়ছেন। কেউ কেউ পাকা ধানের ক্ষেত বর্গা দিয়ে দিচ্ছেন।

উপজেলার অনেক কৃষক তাদের খেতের ধান শ্রমিকের অভাবে কাটতে না পেরে, শুধু কাটা ও মাড়াই করে দিতে শ্রমিকদের অর্ধেক ধানের বিনিময়ে অর্থাৎ বর্গা হিসেবে দিয়েছেন। এতেকরে কৃষকের জমি, বীজ, জমি তৈরী, চারা রোপন, নিড়ানি, সার, কীটনাশক, সেচ ও নিজের শ্রম খরচসহ অন্যান্য খরচ করার পর যা পাচ্ছেন শ্রমিকরা শুধু কেটে এনে মাড়াই করেই তা পাচ্ছেন। এতে সুস্পষ্ট যে, আগামীতে এসব কৃষক আর ধান রোপন করবেন না। তাই সরকারকে এবিষয়ে এখনই নজর দিতে হবে বলে মনে করছেন সুশীলজন। যদিও কেউ কেউ বলছেন শ্রমিক সংকট দেখা দেওয়া একটি দেশের জন্য ভালো লক্ষণ। কারণ হিসেবে জানান, মানুষের জীবন মানের উন্নয়ন হচ্ছে বলেই তারা শ্রম বিক্রি বন্ধ করে দিচ্ছে, ফলে দিন দিন শ্রমিক সংকট বাড়ছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, নকলায় এবছর ১৩ হাজার ২৪৭ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল। কিন্তু আবাদ হয়েছে ১৩ হাজার ২৯২ হেক্টর জমিতে, যা লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে ৪৫ হেক্টর বেশি। এরমধ্যে উফশী জাত ৫ হাজার ৩৪৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে, এ জমিতে উৎপাদিত ধান থেকে চাল পাওয়ার জাতীয় হিসেবে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি হেক্টরে ৩.৯২ মেট্রিকটন করে ২০ হাজার ৯৫২ মেট্রিকটন। হাইব্রীড জাত ৭ হাজার ৯২০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে, এতে উৎপাদিত ধান থেকে চাল পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি হেক্টরে ৪.৭৫ মেট্রিকটন করে ৩৭ হাজার ৬২০ মেট্রিকটন এবং স্থানীয় জাত অন্তত ২৭ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে, এতে উৎপাদিত ধান থেকে চাল পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি হেক্টরে ১.৯৪ মেট্রিকটন করে ৫৩ মেট্রিকটন।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর