মামলায় নেই মূল হোতা, গ্রেফতার ২!

অপরাধ ছিলো নকলে বাঁধা দেয়া। আর সেই কারণেই সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজের প্রভাষক মাসুদুর রহমানকে কিল-ঘুষি, লাথিসহ মারধর করে ছাত্রলীগের ছেলেরা। সেই ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে পাবনা। এ ঘটনার মূল হোতা হিসেবে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা শামসুদ্দিন জুন্নুনকে বাদ দিয়ে মামলা করেছেন কলেজটির অধ্যক্ষ।

এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার মানববন্ধন করেছেন জেলার চারটি সরকারি কলেজের শিক্ষকরা। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি পাবনা জেলা শাখা আয়োজিত মানববন্ধনে শতাধিক শিক্ষক অংশ নেন। মানববন্ধনে তিন দিনের কালো ব্যাজ ধারণের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

এদিকে মামলা দায়েরের পর দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার দু’জন হলো ঈশ্বরদী উপজেলার গোকুলনগর গ্রামের শাহেদ আলীর ছেলে সজল ইসলাম (২০) ও পাবনা সদর উপজেলার মালঞ্চি গ্রামের ইউসুফ আলী শেখের ছেলে শাফিন শেখ (২১)। তারা দু’জন বুলবুল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শামসুদ্দিন জুন্নুনের ঘনিষ্ঠ, তবে ওই কলেজের ছাত্র নয়।

মানববন্ধনে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি, পাবনা শাখার সভাপতি অধ্যাপক মো. শহিদুল ইসলাম, সহযোগী অধ্যাপক আবদুর রব, রাজু আহমেদ, নুরে আলম, কামরুজ্জামান, আতিকুল ইসলাম বক্তব্য দেন। তারা অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক চাপে ঘটনার মূল হোতা বুলবুল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শামসুদ্দিন জুন্নুনের নাম বাদ দিয়ে মামলা করানো হয়েছে।

শিক্ষকদের অভিযোগ, জুন্নুনই হামলাকারীদের লেলিয়ে দেয় এবং পরে এসে তাদের ফিরিয়ে নেয়। এটা তার সাজানো নাটক।

কলেজে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়ে তারা বলেন, যারাই এ ঘটনায় হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছেন, তাদের কাছে অনুরোধ আপনারা সন্ত্রাসীদের পক্ষে অবস্থান নেবেন না। তারা বলেন, ছাত্রলীগ নামধারী এসব ছাত্র ও তাদের সঙ্গী বহিরাগতদের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। গত কয়েক বছরে কমপক্ষে ১৫ জন শিক্ষক এদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন।

পাবনা সদর থানার ওসি ওবায়দুল হক বলেন, বুধবার রাতে বুলবুল কলেজের অধ্যক্ষ এস এম আবদুল কুদ্দুস বাদী হয়ে দু’জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও তিন-চারজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত দুই আসামি সজল ও শাফিনকে গ্রেফতার করে।

মারপিটের শিকার প্রভাষক মাসুদুর রহমান বলেন, আমি এখনও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বাইরে বের হলেই অপরিচিতরা আমাকে অনুসরণ করছে, আমি জীবননাশের আশঙ্কা করছি।

তিনি বলেন, স্থানীয় এক রাজনৈতিক নেতার চাপে অধ্যক্ষ ঘটনার মূল হোতাকে বাদ দিয়ে থানায় মামলা করেছেন।

এ ব্যাপারে পাবনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স বলেন, আমি জেলা ছাত্রলীগকে ডেকে বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের শাস্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। মামলায় কারা আসামি হবে না হবে, সেটি বাদীর নিজস্ব ব্যাপার, এখানে আমার কিছু বলার নেই।

প্রসঙ্গত, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় নকলে বাধা দেওয়ায় গত ১২ মে কলেজ গেটেই প্রভাষক মাসুদুর রহমানকে কিল-ঘুষি ও লাথি মেরে চরম লাঞ্ছিত করে একদল যুবক। এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বুধবার সারাদেশে নিন্দার ঝড় ওঠে।

সূত্র: সমকাল

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর