রেকর্ডের ছড়াছড়ি মুশফিকের, দাঁড়ালেন ধোনি–সাঙ্গাকারাদের সঙ্গে

শুধু বল করছেন না, আর নয় মাঠে সব ফরম্যাটেই দুর্দন্ত মুশফিকুর রহিম।তাই ভক্তদের মাঝে মধ্যে দ্বিধায় পড়ে যেতে হয় ‘লটল মাস্টারের’ফেভারিট প্লেস কোনটি? উইকেটের পেছনে থাকা, না সামনে? মুশফিকের কাছে কোনটা আগে—ব্যাটিং না কিপিং? এ নিয়ে বিতর্কও আছে অনেক।

ক্রিকেট বোদ্ধাদের মতে, মুশফিক শুধু ব্যাটিং নিয়ে ভাবলে আরও অনেক দূর যেতে পারতেন। কিন্তু ব্যাটিং গ্লাভসকে যতটা কিপিং গ্লাভসকেও ঠিক ততটাই ভালোবাসেন মুশফিক। অন্তত এ দুটি দায়িত্বে তার আত্মনিবেদনের কমতি নেই। মুশফিক আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে কাল এই আত্মনিবেদনের বড় এক পুরস্কারই পেলেন।

উইকেটরক্ষক হিসেবে ওয়ানডেতে ৫ হাজার রান পূর্ণ করতে মাত্র ৩৫ রান দরকার ছিল মুশফিকের। ৩৩তম ওভারের ওভারের দ্বিতীয় বলে চার মেরে এ মাইলফলক ছুঁয়ে পরের বলেই আউট হন মুশফিক। এর মধ্য দিয়ে তিনি জায়গা করে নিলেন ওয়ানডের কিংবদন্তি উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানদের কাতারে। যেখানে আছেন কুমার সাঙ্গাকারা, অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, মহেন্দ্র সিং ধোনি, অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারদের মতো নাম। কাল এ তালিকায় নাম লেখালেন মুশফিক। তালিকাটা হলো ওয়ানডেতে ন্যূনতম ৫ হাজার রান আর ২০০ ডিসমিসালের মালিকদের।

তবে শুধু ফ্লাওয়ার ছাড়া বাকি তিনজন থেকে মুশফিক অনেক পিছিয়ে। বিশেষজ্ঞ উইকেটরক্ষক হিসেবে ১৮৬ ম্যাচ খেলে ৫ হাজার ৮৪৫ রান করেছিলেন জিম্বাবুয়ে কিংবদন্তি ফ্লাওয়ার। মুশফিক যে তাঁকে ধরে ফেলবেন তা নিশ্চিত। বিশেষজ্ঞ উইকেটরক্ষক হিসেবে ১৯১ ম্যাচে মাঠে নামা মুশফিকের রানসংখ্যা ৫ হাজার। পার্থক্য মাত্র ৮৪৫ রানের।

এই তালিকায় শীর্ষ তিনে রয়েছেন য়ারা, তাদের এক নজরে দেখে নেয়া যাক। শ্রীলঙ্কার হয়ে বিশেষজ্ঞ উইকেটরক্ষকের ভূমিকায় ৩৬০ ম্যাচ খেলে ১৩ হাজার ৩৪১ রান করেছেন সাঙ্গাকারা। ভারতের হয়ে একই ভূমিকায় ৩৪১ ম্যাচে ধোনির রানসংখ্যা ১০ হাজার ৫০০। আর অস্ট্রেলিয়ার হয়ে গিলক্রিস্টের রানসংখ্যা ২৮২ ম্যাচে ৯ হাজার ৪১০। ৩১ বছর বয়সী মুশফিক তাঁদের ধরতে পারবেন কি না, সেই প্রশ্নটা কিন্তু থেকেই যায়। তবে ফ্লাওয়ারকে একটি জায়গায় ইতিমধ্যেই টেক্কা দিয়েছেন মুশফিক।

ওয়ানডেতে ন্যূনতম ৫ হাজার রান ও ২০০ ডিসমিসালের তালিকা করলে খুব বেশি উইকেটরক্ষককে পাওয়া যায় না। মাত্র চারজন। মুশফিক এ তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন। ওদিকে ১৬৫ ডিসমিসাল নিয়ে থামতে হয়েছে ফ্লাওয়ারকে। আর মুশফিক কাল ৫ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়ে নাম লিখিয়েছেন সংক্ষিপ্ত এ তালিকায়। যেখানে ৪৮২ ডিসমিসাল নিয়ে শীর্ষে সাঙ্গাকারা, ৪৭২ ডিসমিসাল নিয়ে দ্বিতীয় গিলক্রিস্ট, ৪৩৪ ডিসমিসাল নিয়ে তৃতীয় ধোনি এবং ২০৯ ডিসমিসাল নিয়ে চতুর্থ মুশফিক।

বাংলাদেশের প্রথম উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডেতে ৫ হাজার রানের মাইলফলকও গড়েছেন মুশফিক। আর দুই শর বেশি ডিসমিসাল তো থাকছেই। অবশ্য এটাই হওয়ার কথা।

মুশফিকের আগে বাংলাদেশের আর কোনো উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান যে এত ম্যাচ খেলার পাশাপাশি এতটা সফলতাও পাননি। ১২৬ ম্যাচে ঠিক ১২৬ ডিসমিসাল আর ১ হাজার ৮১৮ রান নিয়ে দুইয়ে খালেদ মাসুদ পাইলট। এই খালেদ মাসুদ নেতৃত্বে থাকতেই ২০০৬ সালে ওয়ানডে অভিষেক ঘটেছিল মুশফিকের। তাঁর ক্যারিয়ারের শুরুতে পাইলটই দাঁড়াতেন উইকেটের পেছনে।

শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলে ১৩ ম্যাচে ৫২.২০ গড়ে ৫২২ রান করেছেন মুশফিক। আর উইকেটরক্ষকের ভূমিকায় তার রানসংখ্যা তো বলাই হল। এ ভূমিকায় তার ব্যাটিং গড় ৩৩.৭৮। পার্থক্যটা কিন্তু পরিষ্কার!

বার্তাবাজার/এএস

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর