ছাত্র নেতাদের আরো সহনশীল হতে হবে

পদ-পদবী ছাড়াও রাজনীতি করা সম্ভব। নানা বয়সী, নানা শ্রেণী পেশার লক্ষ লক্ষ ফেসবুক যোদ্ধা-বন্ধু, সরকার তথা আওয়ামী লীগের পক্ষে জোরালো ভূমিকা রাখছেন। তেমনি অন্যান্য দলের কর্মী-সমর্থকরাও স্ব স্ব দলের পক্ষে কাজ করছেন সম্পূর্ণ নির্মোহ ভাবে। ছাত্রলীগের বন্ধুরা কি এই বিষয়টি একটিবারও ভেবে দেখেছেন?

এই সকল সম্মানিত সমর্থকগণ তাদের গাটের পয়সা খরচ করে রাত-দিন একাকার করে সরকারের নানা উন্নয়ন কাজের যেমন প্রচার করে তেমনি ভুলভ্রান্তি ধরিয়ে দিতেও পিছপা হয়না। কারণ বঙ্গবন্ধুর এই সংগঠনটিকে তাঁরা অন্তরে ধারন করে পরম শ্রদ্ধা ও যত্নে। তাঁরা তো কোনদিন বলেন না যে, আমাদের সময় ও শ্রমের মূল্য চাই?

আপনারা নিজেকে তৈরি করুন, গড়ে তুলুন। নেতৃত্ব আপনাদেরই গ্রহণ করতে হবে। তা নইলে ভবিষ্যত কাণ্ডারি আসবে কোত্থেকে? অতীতে আমাদের ছাত্র সমাজ আন্দোলন-সংগ্রামে গৌরবজনক ভূমিকা পালন করেছে। আপনাদেরকে আমরা তাদের মহান উত্তরসূরি ভাবতে চাই। কিন্তু আপনারা কি সেই গৌরবময় স্থানটি ধরে রাখতে পারছেন?

যদি না পেরে থাকেন, কেন পারেননি সেই আত্ম বিশ্লেষন করার সময় কি এখনো হয়নি? সেটি না করে নেতৃত্বে যাবার জন্য, পদ-পদবীর জন্য এতোটা মরিয়া কেন, কামড়াকামড়ি কেন? আপনাদের অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রছাত্রী। শিক্ষার সেই মহান ঔদার্য কই? সহনশীলতা কই, উদারতা কই?

যাঁরা ছাত্রলীগ করছেন, করতে চান তাঁরা কি ছাত্রলীগের অতীত ঐতিহ্য জানেন? বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠনটি তৎকালীন পাকিস্তানের প্রভাবশালী পশ্চিমা শাসককুলের শাহী তখত নাড়িয়ে দিয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করেছিল আগড়তলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে। মহান মুক্তিযুদ্ধে ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল। জীবন বাজি রেখে দেশ মাতৃকাকে পরাধীনতার নাগপাশ থেকে মুক্ত করেছিল।

নেতৃত্ব তো সেদিনও ছিল, কই আমরা তো সেদিন নেতৃত্বের জন্য কাদা ছুড়াছুঁড়ি চলতে দেখিনি। মারধোর কিংবা ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনা শুনিনি। আজ দেশ স্বাধীন। আপনাদের এ দেশ। এ দেশ আপনারা চালাবেন প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। আজ কেন আপনাদের নামে নানা বদনাম শুনতে হবে? নেতৃত্ব পেলে সামনে থেকে কাজ করা যায় মানি, কিন্তু রাজনৈতিক নেতৃত্ব ছাড়া দেশের সেবা অসম্ভব, তা তো নয়?

আজকাল পদ-পদবীর জন্য জান লড়িয়ে দিতে প্রস্তুত সবাই। কি ছাত্র সংগঠন, কি মূলদল। সর্বত্র একই দশা। এর মূল কারন আদর্শের দৈন্যদশা। এক সময় ছাত্রদের দেখলে মানুষ ভরসা পেতো, স্বস্তি পেতো। এখন সেটি নেই বরং ক্ষেত্রবিশেষে ভয় হয়। আমি সেই আলোচনায় যাবনা। কারণ তারা আমাদেরই সন্তান। শুধু প্রত্যাশা করবো, পদের আকাঙ্ক্ষী যেমন হবেন তেমনি নিজেদের বদনামগুলোও শোধরে নিবেন। আগামী প্রজন্ম আপনাদের অনুসরণ করবে। আপনারা আরো সহনশীল হোন আদর্শে, কাজে ও আচরণে।।

লেখকঃ উপ- সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রেস।।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর