আ.লীগের একাধিক প্রার্থী, বিএনপি নিয়ে ধোঁয়াশা

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শপথ না নেওয়ায় শূন্য ঘোষিত বগুড়া-৬ আসনে উপনির্বাচন ২৪ জুন। গতকাল বুধবার আসনটির তফসিল ঘোষণা করেন ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। একই দিনে বিএনপির জন্য সংরক্ষিত একটি নারী আসনের তফসিলও ঘোষণা করা হয়েছে। বিএনপির সংসদ সদস্যরা শপথ নেওয়ায় এ আসন পাচ্ছে দলটি।

এদিকে, তফসিল ঘোষণার পর পরই উপনির্বাচনে প্রার্থীতা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়ে গেছে বগুড়ায়। আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থীর কথা শোনা যাচ্ছে। বসে নেই জাতীয় পার্টিও। তবে দল বা জোটগতভাবে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়ে গেছে। তফসিল অনুযায়ী, বগুড়া-৬ আসনে মনোনয়ন দাখিলের শেষ সময় ২৩ মে। বাছাই ২৭ মে, মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ সময় ৩ জুন। প্রতীক বরাদ্দ ৪ জুন।

আর নারী আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ২০ মে, বাছাই ২১ মে, প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৮ মে ও ভোট ১৬ জুন। তফসিল ঘোষণা করে ইসি সচিব বলেন, বগুড়া-৬ আসনের সব কটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। ভোটগ্রহণ হবে ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত। সাধারণত সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হয়ে থাকে। ইভিএম মেশিন সকালে কেন্দ্রে প্রস্তুত করা হবে, এ কারণে ভোটগ্রহণ ১ ঘণ্টা পেছানো হয়েছে। গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি থেকে ছয়জন বিজয়ী হন। কিন্তু পাঁচজন শপথ নিলেও ফখরুল নেননি। নির্দিষ্ট সময়ে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ না নেওয়ায় তার আসনটি গত ৩০ এপ্রিল শূন্য ঘোষণা করে জাতীয় সংসদ।

বগুড়া আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, সাধারণ ভোটাররা মির্জা ফখরুলকে ভোট দিয়ে জয়ী করেছিলেন। তিনি তাদের সেই সম্মান রাখেননি। এখন আবার ভোটের সুযোগ আসায় সেই ভুল আর তারা করবে না। বগুড়া-৬ (সদর) আসনে বরাবরই নির্বাচন করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে মির্জা ফখরুল বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেওয়ায় মহাজোটের প্রার্থী জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম ওমর বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।

এরই মধ্যে নৌকার মনোনয়ন পেতে মাঠে নেমেছেন জেলা আওয়ামী লীগের তিন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু, টি জামান নিকেতা ও মঞ্জুরুল আলম মোহন, জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক শাহাদৎ আলম ঝুনু, জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি মমতাজ উদ্দিনের ছেলে ও বগুড়া চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাসুদুর রহমান মিলন এবং কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহসম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক। এ ছাড়াও জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাবেক সাংসদ নূরুল ইসলাম ওমর মনোনয়ন চাইবেন বলে দলীয় নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়তে চান সাবেক মোটর শ্রমিক নেতা সৈয়দ করিম আহমেদ মিঠু।

মাসুদার রহমান মিলন বলেন, কেন্দ্র চাইলে প্রার্থী হতে রাজি আছি। বগুড়ার মানুষ ধানের শীষ ছেড়ে নৌকাকে ভালোবাসতে শুরু করেছে। এ মুহূর্তে নির্বাচন হলে ব্যালটে সেটি তারা দেখিয়ে দেবে। রাগেবুল আহসান রিপু বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেলেও পরে জোটকে তা ছেড়ে দিতে হয়েছে। এবার আশা করছি, দল আমাকে মনোনয়ন দেবে। টি জামান নিকেতা বলেন, আমি দলীয় মনোনয়ন চাইব। দলের মনোনয়ন বোর্ড আগ্রহীদের মধ্যে যোগ্যতর প্রার্থীকে নির্বাচিত করবেন। মঞ্জুরুল আলম মোহন বলেন, গত নির্বাচনেও মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলাম। এবারও দলের কাছে মনোনয়ন চাইব, তবে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নেবে দলের হাইকমান্ড।

নূরুল ইসলাম ওমর বলেন, সর্বশেষ নির্বাচনে আমি মহাজোটের প্রার্থী ছিলাম, এ কারণে উপনির্বাচনেও মনোনয়ন চাইব। বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান মজনু বলেন, কে প্রার্থী হবেন তা কেন্দ্রীয় নেতারা নির্ধারণ করবেন। এদিকে জেলা বিএনপির একাংশের আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম উপনির্বাচনে দলের প্রার্থীতা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে দলের অপর অংশের নেতা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা জানান, এ উপনির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না। এ কারণে কারো প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর