বিএনপিকে বাইরে রেখেই হতে পারে আলাদা জোট

২০ দলীয় জোট ভেঙে গিয়ে বিএনপিকে বাইরে রেখেই আলাদা একটা জোট তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমান।

গত ১৩ অক্টোবর জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। ২০ দলকে গুরুত্বহীন করে ফ্রন্টকেই অগ্রাধিকার দেয় প্রধান শরিক বিএনপি।কিন্তু নির্বাচন এবং পরবর্তী সময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে এ জোটটি। যে লক্ষ্য, উদ্দেশ্য নিয়ে ফ্রন্ট গঠন করা হয়েছিল তা বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট কোনো রোডম্যাপ নেই। দীর্ঘদিন ফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক হয় না।

এভাবে চলতে থাকলে ফ্রন্ট জনগণের কোনো কাজে আসতে পারবে না বলে মনে করছেন অনেকেই। এমন পরিস্থিতিতে ফ্রন্টের শরিকরা যে যার মতো করে বেরিয়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করছে।সূত্র জানায়, শপথ ঘিরে ফ্রন্টের শরিকদের মধ্যেও চলছে অস্থিরতা। এমন পরিস্থিতিতে করণীয় চূড়ান্তে বৃহস্পতিবার জরুরি বর্ধিত সভার আহ্বান করেছে ফ্রন্টের শরিক বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ।

সভার পর তিনি জরুরি সংবাদ সম্মেলনও করবেন। সেখানে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে দলের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত তুলে ধরবেন বঙ্গবীর। অনেকেই ধারণা করছেন তিনি ফ্রন্ট ছাড়ার ঘোষণা দিতে পারেন।এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান মঙ্গলবার যুগান্তরকে বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় আমাদের দলের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হবে।

এরপর দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দলের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত তুলে ধরবেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমান যুগান্তরকে বলেন, দলগুলো এখনও বুঝতে পারছে না তাদের অবস্থানটা কি হবে। বিশেষ করে বিএনপির মধ্যে একটা অন্তর্দ্বন্দ্ব আছে।

সিনিয়র নেতারা সব নীরব হয়ে গেছেন। এরপর আবার বিএনপির সংসদে যাওয়া পুরো রাজনীতিকে ওলটপালট করে দিয়েছে। আমার যেটা ধারণা- প্রথমত ২০ দলীয় জোট ভেঙে যাবে, থাকবে না।যারা বেরিয়ে যাবে তারা আলাদা একটা ফ্রন্ট তৈরি করবে, বিএনপিকে বাইরে রেখে। সেক্ষেত্রে বিএনপির অলটারনেটিভ হচ্ছে এখন ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে থাকা। এটা ছাড়া বিএনপির কোনো উপায় নেই।

তিনি বলেন, ভুল রাজনীতির কারণে বিএনপি এখন রাজনৈতিক মাঠে একা হয়ে পড়েছে। ফলে বিএনপির যে একটা বড় দল হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা ছিল সেটা ধীরে ধীরে ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে। শিগগিরই আমরা দেখতে পাব খালেদা জিয়া জামিনে মুক্ত হয়েছেন এবং তিনি বিদেশে যাচ্ছেন।তারেক বলেন, যারা জোট থেকে বেরিয়ে যাবেন তারা তো বিএনপির ওপর ভরসা করত। বিএনপিকে হাতে রেখে যা পাওয়া যায়, হালুয়া-রুটি তাতেই তাদের লাভ। এখন তারা দেখছেন বিএনপি সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে সংসদে গিয়েছে, তাদের পাওয়ার তো কিছু থাকছে না।

লেবার পার্টি বলেন, বিজেপি বলেন, এরা সবাই এখন চেষ্টা করবেন আরেকজনকে সামনে রেখে কাউন্টার বিএনপির মতো একটা দল গঠন করতে।সেক্ষেত্রে আমার ধারণা এলডিপি, বিজেপি একটা ব্যানারে আসবে। হতে পারে আরও দু-চারটা দল নিয়ে তারা একটা ফ্রন্ট দাঁড় করাবে।

সূত্র: যুগান্তর ।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর