শ্রমিক লীগ নেতার ডিবি পুলিশ নিয়ে বেফাঁস কথাবার্তায় আলোচনা-সমালোচনার ঝড়

সারা দেশের চলমান মাদক বিরোধী অভিযান এবং এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সরকারী অন্যান্য সংস্থার পাশাপাশি ঢাকা জেলা ডিবি (উত্তর) জিরো-টলারেন্স নীতিতে থেকে বিভিন্ন সফল অভিযানের মাধ্যমে সাভার/ধামরাইয়ের অভিভাবকমহল এবং সাধারণ মানুষের পাশাপাশি গণমাধ্যমকর্মীদের ভিতরেও আস্থার এবং জনবান্ধব একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে উপস্থাপন করতে পেরেছে। তবে গত ২ মে আশুলিয়া থানার ইয়ারপুরে শ্রমিক লীগের এক সভায় প্রকাশ্যে জাতীয় শ্রমিক লীগ, আশুলিয়া আঞ্চলিক কমিটির সভাপিতি আকবর হোসেন জানান, ফেন্সিডিলসহ একব্যক্তিকে ছেড়ে দেবার জন্য তিনি নিজেই ডিবি পুলিশ ঢাকা জেলা (উত্তর) কে ১ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা দিয়েছেন। পরে এই বিষয়ে জনসভায় ভাষণদানরত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এলে পক্ষে-বিপক্ষে বিভিন্ন আলোচনার জন্ম দেয়। সাভারের জনগন নামের একটি ফেইসবুক ভিত্তিক গ্রুপে মোঃ হুমায়ুন আহমেদ নামের একজন ওই ভাষণের সম্পূর্ণ ভিডিও ক্লিপসটি পোষ্ট করেন। তবে পরবর্তীতে পোষ্টটি ডিলিট করা হলেও ইতোমধ্যে অনেক গণমাধ্যমকর্মী বক্তব্যের সম্পূর্ণ ভিডিওটি ডাউনলোড করে নেন। এই প্রতিবেদকের নিকটও ভিডিওটি রয়েছে।

এর প্রেক্ষিতে বিষয়টি নিয়ে শ্রমিক লীগ নেতা আকবর হোসেন এর মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় শুনে এই প্রতিবেদককে কোনো কিছু বলতে না দিয়ে বলেন, আমি আপনাকে আগে বলি? আমার মধ্যে এরকম কোনো কথা নেই? এগুলো সব ডাবিং কাটিং করা। আর আপনার যদি আর কিছু জানার হয় তাহলে ভাই একটু সরাসরি আসবেন।

এই প্রতিবেদক তখন তার কথায় সায় দিয়ে জানতে চান, তাহলে এই জনসভায় ভিডিওতে শোনা কথাগুলি আপনার নয়? তিনি সম্মতি জানিয়ে বলেন ‘জি, ওগুলি কাটিং করা।’

‘তাহলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে এই ভিডিওটি প্রকাশ হলো সে ব্যাপারে আপনি কি বলবেন?’ এই প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নের জবাবে আকবর হোসেন জানান, এ বিষয় নিয়ে আরো পত্রিকায় নিউজ হইছে। আজকে (শনিবার) এক সাংবাদিক এসে আমাকে দুইটা পত্রিকা দিয়েও গেছে। আমার বিরুদ্ধে যে ডিবি পুলিশকে আমি নিজে টাকা দিয়েছি বলেছি, সেকথা লেখা নাই ওখানে। আর বিস্তারিত জানতে চাইলে ‘সেইভাবে’ আইসেন আপনি।

প্রসঙ্গত, সাভারে কর্মরত আরও একজন গণমাধ্যমকর্মীর নিকট মুঠোফোনে এই শ্রমিক নেতা নিজে ভিডিওতে যা বলেছেন সে কথা স্বীকার করে জানান, “বুঝেনই তো, রাজনীতি করি, অনেক সময় অনেক কথা বলতে হয়। আর এই কথাটাও হঠাৎ বলে ফেলেছি। ”

এব্যাপারে ঢাকা জেলা ডিবি (উত্তর) এর সুযোগ্য অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আবুল বাশার বলেন, যতদূর জানা গেছে এই শ্রমিক নেতা নিজেই জানে না কখন কি বলে।

এসময় গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম মহোদয়ের মাদকের বিষয়ে সর্বোচ্চ হার্ডলাইনে থাকার সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা অনুযায়ী নিয়মিত প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার সহ আমাদের মেধার সর্বোচ্চ রয়োগ করছি এবিষয়ে। সাভার/ধামরাইয়ে আমাদের এসংক্রান্ত বিভিন্ন সফল অভিযান গণমাধ্যমসহ সর্বস্তরে আলোচিত এবং প্রশংসিত হয়েছে। ঠিক এই মুহুর্তে এরকম একজন মানুষের এই মিথ্যাচার নিয়ে তদন্ত করে দেখা হবে। যদি প্রমান দেখাতে না পারে তাহলে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও গ্রহন করা হবে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শ্রমিক লীগের ওই সভার ভিডিওতে আশুলিয়া আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি আকবর হোসেন তার বক্তৃতায় এমন বলেন শোনা গেছে, “… ওইটারই একটা ভাইস-প্রেসিডেন্ট যারা নামধারী যারা নামে পরিচিত থানা কমিটির, তারে একসপ্তাহ আগে ডিবির পুলিশরা ফেন্সিডিলসহ এই ফ্যান্টাসির সামনে থেকে উঠিয়ে নিয়ে গেছে, সন্ধ্যায়। রাত সাড়ে বারটার সময় আমি বাসায় ঢুকে খাইতে বসার পর, আমাকে রিং করেছে। আমি খাবার রেখে নিচে নেমে তার ওয়াইফের কান্নায় তাকে আমি এক লক্ষ আটাইশ হাজার টাকার বিনিময়ে পুলিশের হাত থেকে রাখতে পারছিলাম, টাকাটাও বলে দিলাম।”

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর