‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ শ্লোগানে ফের উত্তাল রাজপথ

‘নিয়মের চক্রে মরে শেষ হচ্ছি’; ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’; আবিরের বুকে রক্ত কেন?, কয়লার সড়কে রক্ত কেন?; ‘নিরাপদ সড়ক চাই; ভাইয়ের বুকে রক্ত কেন?; ‘প্রশাসনের প্রহসন মানি না মানব না’; ‘জেগেছে রে জেগেছে ছাত্রসমাজ জেগেছে’; ‘সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধ হোক’; ‘আমার ভাইয়ের বুকের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’; ‘আবরার তোর স্মরণে, ভয় পাই না মরণে’ সহ নানা শ্লোগানে রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করছে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের (বিইউপি) দুই শতাধিক শিক্ষার্থী।

শিক্ষার্থীদের অবরোধে বিমানবন্দর থেকে বাড্ডা হয়ে রামপুরা-গুলিস্তান রুটের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে রামপুরা সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থলে ছুটে যান পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তারা গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। তবে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তারা সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন।

এ ব্যাপারে পুলিশের গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) আব্দুল আহাদ বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি। বাসচাপায় এক ছাত্রের নিহতের ঘটনায় ছাত্ররা বিক্ষোভ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করছে।’

মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে রাজধানীর নর্দ্দা এলাকায় বাসচাপায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরীকে চাপা দেয় সুপ্রভাত নামের একটি বাস। ঘটনার পর পরই নিহতের সহপাঠীরা রাস্তা অবরোধ করে প্রতিবাদ করতে থাকে। ধীরে ধীরে সেখানে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী সড়ক অবরোধে যোগ দেয়।

বিইউপি শিক্ষার্থী ও আবরারের সহপাঠী মাহমুদুল হাসান মাহি বলেন, আজ সকালে সুপ্রভাতের বাসচাপায় আবরার গুরুতর আহত হয়। সিএমএইচে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আবরারের সঙ্গে আমাদের আরও দু’জন সহপাঠী ছিল। তারা আমাদের জানালে আমরা সকালে নর্দায় যাই। এরপর আমাদের সঙ্গে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও প্রতিবাদে অংশ নেয়।’

বিইউপির আরেক শিক্ষার্থী জীবন পারভেজ জানান, ‘আমাদের শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় আমরা রাস্তায় নেমেছি। কোনও অবস্থাতেই আমরা রাস্তা থেকে যাবো না। বিচার না হওয়া পর্যন্ত রাস্তায় থাকবে।’

মিম জাহান নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘প্রতিদিন এই শহরে কেউ না কেউ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছে। কিন্তু কারও কোনও সুষ্ঠু বিচার হচ্ছে না। বিচার না হওয়ার কারণে দিনের পর দিন দুর্ঘটনার সংখ্যা যেমন বাড়ছে মায়ের বুকও তেমন ভাবেই খালি হচ্ছে। আমরা এর বিচার চাই।’

ডিএমপির গুলশান জোনের (বাড্ডা) সহকারী কমিশনার (এসি) মাহবুব রহমান বলেন, সকালে ৭টার দিকে সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাসের ধাক্কায় আবরার নামের ওই ছাত্র মারা যান। এরপর থেকেই বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে রেখেছে। আমরা তাদেরকে বুঝিয়েছি কিন্তু তারা কোনও অবস্থাতেও রাস্তা ছাড়ছে না।

তিনি বলেন, আমরা এরই মধ্যে ঘাতক বাস ও চালককে আটক করেছি। নিহতের লাশ কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষায় রাজধানীতে গত রোববার থেকে শুরু হয়েছে পঞ্চমবারের মতো ট্রাফিক সপ্তাহ। এরই মধ্যে বাসচাপায় একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হলো।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর