আলফাডাঙ্গায় চলছে রমরমা আইপিএল জুয়া

ক্রিকেট খেলা সার্বজনীন খেলা হলেও এই ক্রিকেট এখন জুয়াবাজির অন্যতম কারণ হিসেবে স্থায়ী রুপ নিয়েছে সর্বত্র।চলতি মৌসুমের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (আইপিএল) ক্রিকেট খেলায় ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলাতে জমজমাট ভাবে দিন দিন বেড়েই চলছে আইপিএল জুয়া।শুধু বিত্তশালীরাই নয় আইপিএল জুয়ায় ক্রমেই আসক্ত হয়ে পড়ছেন দিনমজুর, চা-দোকানী, রিক্সা ভ্যানচালক, সিএনজি চালক, গ্যারেজ ব্যবসায়ী, মাছ ব্যবসায়ী, মুদি দোকানী, বিভিন্ন কাপড়ের দোকানের মালিক কর্মচারী, ভ্যারাইটিজ ষ্টোরের মালিক কর্মচারী ও স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও মেতে উঠেছে আইপিএল জুয়ায়।

ভারতের এই ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে উপজেলার অন্তত ১০টি স্থানে চলছে এসব জুয়ার আসর।আইপিএল ২০১৯ সালের এবারের দলগুলো হলো সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, দিল্লি, রাজস্থান, ব্যাঙ্গালুর, চেন্নাই , মুম্বাই, কলকাতা ও পাঞ্জাব।এসব দলের মধ্যে প্রতিটি ম্যাচেই হচ্ছে লাখ লাখ টাকার জুয়াবাজি।আইপিএলের আসর শুরু হওয়ার পর থেকেই এজুয়া এখন মহামারী আকার ধারণ করেছে।

জানা যায়, প্রতিদিন ম্যাচ শুরু হওয়ার পর থেকে উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার প্রায় গ্রামেই তরুণ সমাজ ও স্বীকৃত জুয়াড়িরা এই বাজি ধরছেন ম্যাচ প্রতি হাজার হাজার টাকা এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী জমজমাট হচ্ছে উপজেলার পৌর শহরের বিভিন্ন জায়গা,হেলেঞ্চা,নোয়াপাড়া,বাকাইল,জাটীগ্রাম,মহিষারঘোপ,বানা,গোপালপুরসহ বিভিন্ন বাজারে।

গত কয়েক দিনে আইপিএলের জুয়ায় সর্বস্বান্ত হয়ে অনেকেই এখন পথে বসেছেন। শুধু ম্যাচই নয় প্রতিটি বলে বলে ধরা হচ্ছে বাজি।এই বলে ছক্কা হবে এই বলে চার হবে। এই বলে আউট হবে এসব নিয়েও জুয়াবাজিতে সরগরম বাজির মাঠ।খেলা শুরুর পর থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাজি ধরা হয়েছে কয়েক লাখ টাকা।অনেক জুয়াড়ি নিজের কাছে রাখা গচ্ছিত টাকা হেরে চড়া সুদে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে ধরছেন বাজি।ফলে আইপিএলের জুয়ার বাজারে সুদি ব্যবসায়ীদের ব্যবসা এখন জমজমাট।তাছাড়া অনেক শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা সন্তানদেরকে আইপিএল জুয়া থেকে বিরত রাখতে না পেরে নিজ গৃহের ডিসলাইন সংযোগ বিছিন্ন করে দিয়েছেন।তার পরও কোন ক্রমেই বন্ধ করা যাচ্ছেনা আইপিএল জুয়া। এছাড়া ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ আইপিএলের জুয়ায় বাজি ধরে লাখ লাখ টাকা হেরে সর্বস্বান্ত হয়ে দেনার দায়ে অনেকেই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। আবার অনেক যুবকই বাজি ধরে হয়েছেন লাখ লাখ টাকার মালিক।

কয়েকটি চায়ের দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চায়ের দোকানেই এসকল বাজীর চুক্তি বেশী হয়ে থাকে।তবে ধূর্তরা এ চুক্তি মোবাইল ফোনেই সম্পন্ন করে থাকে।

চায়ের দোকানে অনুসন্ধানের সময় সরজমিনে দেখা যায়, মাত্র ১৫ বছরের এক যুবক চায়ের দোকানদারকে বলছে “আজ ৫ধরবো,পার্টি আছে নিকি?” পরে তার নিকট বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি উত্তর দেন এগুলো আপনারা বুঝবেন না।

উপজেলার কয়েকজন ব্যক্তি জানান,আইপিএল খেলাতে বাজী ধরার টাকা গোছাতে বিভিন্ন জায়গাতে চুরি-ডাকাতির সংখ্যা বেড়েই চলছে।এসকল নতুন চোর বাড়ীর হাঁস-মুরগি,ফসল ইত্যাদি সুযোগ পেলেই চুরি করছে।

এই আইপিএল জুয়া বন্ধের দাবীতে অনেক ভোক্তভোগী পরিবারই প্রশাসন ও সরকারকে দৃষ্টি দেওয়ার আহবান জানিয়েছেন।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর