প্রস্তাবে রাজি না হলে ছাদ থেকে ফেলে দেবেন শিক্ষক

শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে মতিউর রহমান ফকির নামে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে অনৈতিক কাজের প্রস্তাব দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে রাজি না হলে তাকে ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে মেরে ফেলবেন বলেও হুমকি দিয়েছেন ওই শিক্ষক। সেই ভয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে ওই ছাত্রী।

অভিযুক্ত মতিউর রহমান ফকির উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নে অবস্থিত ৬৬ নং বিনটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী একই বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নের মহেশ্বরপট্রি গ্রামের বাসিন্দা।

ভুক্তভোগী ছাত্রী ও তারর পরিবার জানায়, গত মার্চ মাস থেকে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মতিউর রহমান ফকির বিভিন্ন সময় পঞ্চম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে অনৈতিক কাজের প্রস্তাব দিয়েছেন। এতে রাজি না হওয়ায় গত মঙ্গলবার ওই ছাত্রী বিদ্যালয়ে গেলে আবার তাকে অনৈতিক কাজের প্রস্তাব দেন শিক্ষক মতিউর রহমান ফকির। এতে রাজি না হলে মেয়েটির মুখ চেপে ধরে বিদ্যালয়ের দোতলায় নিয়ে যান মতিউর রহমান ফকির এবং বলেন- ‘যদি রাজি না হছ, তাহলে দোতলার ছাদ থেকে ফেলে দেব। জানি তোর মৃগী রোগ আছে, মরে গেলে আমার দোষ হবে না।’

ওই ছাত্রীর মা বলেন, মতি স্যারের এমন আচরণে ভয়ে গত মঙ্গলবার থেকে মেয়েকে স্কুলে যেতে দেই না। তারা প্রভাবশালী, ভয়ে কারেও কাছে বলতে পারছি না। আমরা গরিব মানুষ, তাই আল্লাহর কাছে বিচার চাই।

তবে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক মতিউর রহমান ফকির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি গোসাইরহাট উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও গোসাইরহাট থানার মামলা লিখি। আমার ব্যাপারে সবাই জানে। মেয়েটি আমার ছাত্রী, সে আমার মেয়ের মত। ওর সঙ্গে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

এলাকাবাসী জানায়, শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের কাছে সন্তানের মত। সেই শিক্ষার্থীদের উপর যে শিক্ষকরা এমন আচরন করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিৎ। যাতে করে এমন ঘটনা আর না ঘটে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিউটি মন্ডল বলেন, আমি চোখে দেখিনি। মেয়েটির অভিভাবকরা অভিযোগও করেনি। ব্যাপারটি দেখছি।

গোসাইরহাট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. কুদ্দুস হাওলাদার বলেন, ঘটনার সত্যতা পেলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলমগীর হুসাইন বলেন, বিষয়টি খুবই ভয়ঙ্কর। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গোসাইরহাট সার্কেল) মোহাইমিনুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। মেয়ের বক্তব্য পেলে ওই শিক্ষককে আইনের আওতায় আনা হবে।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর