নুসরাত, তুমি এখন পুলিশেরও প্রতিবাদের শক্তি

নতুন বছর ১৪২৬ কে মানুষ আনন্দ উৎসবে বরণ করে নিয়েছে নানা আয়োজনে। আবেগকে যুক্তি দিয়ে খণ্ডন করা যায় না। তাই আবেগের এক ক্রন্দন এবারের বৈশাখের আনন্দে সবার মাঝে ছিল।

আর সেই ক্রন্দনের নাম নুসরাত। যার প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর ছিল নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে। কিন্তু একজন ভোগলিপ্সু শিক্ষক আর তার সহযোগীরা নুসরাতকে আগুনে পুড়িয়ে থামিয়ে দিতে চেয়েছিল।

অপরাধ কোনদিন লুকিয়ে থাকে না বলে অধ্যক্ষ সিরাজের স্বরূপ দিনের আলোর মত প্রকাশিত আজ সারা দেশের কাছে। এখন অপেক্ষা নরপশুদের বিচারের জন্য। এদের বিচারের দাবি সকল মানুষের একান্ত মনের চাওয়া। তাই বর্ষবরণ নুসরাতকে কেউ ভুলেনি।

যার বহিঃপ্রকাশ ঘটে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের। বলিষ্ঠ শপথের প্রতিবাদী শ্লোগানে। যার ছবি সামাজিক মাধ্যমে ঘুরছে। প্রকৃতপক্ষে সমাজে আছে ভালো মন্দের মিশেলের মানুষ। আর সে মানুষ থেকেই পুলিশের পেশাতে যারা জড়িত আছে তাদের কেউ ভালো কেউ মন্দ।

কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, এ পেশায় ঘুষ, দুর্নীতি অনিয়ম এতটাই ছড়িয়ে গেছে যে, যা সংস্কার করা এখন কষ্টসাধ্য। তবু একটি দেশ-দেশের মানুষ ভালো কিছু হবার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যায়। আর সেখানে সিএমপির ‘দিনের আলোয় কাটুক সব অন্ধকার রাত এই বাংলায় চাই না আর কোন ভিকটিম নুসরাত’- এমন একটি দীপ্ত শপথের প্রতিবাদে পুলিশের কাছে মানুষের প্রত্যাশা বাড়ে। মনে হয় ওসি মোয়াজ্জেমের মত পুলিশদের কাছে গিয়ে বিচারের আশায় হেনস্থা হতে হবে না আর কোন নারীকে। জেরার নামে আবার নির্যাতিত হতে হবে না বাক্যবাণে।

অপরাধের আইনি প্রক্রিয়ার সূতিকাগার হলো থানা ও পুলিশ প্রশাসন। আইন তার বিধির বাইরে যেতে পারে না। সে কারণে পুলিশ অন্যায়ের প্রতিকার দিতে মামলাকে উত্থাপনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। নুসরাতের ঘটনাতে ওসি মোয়াজ্জেম তা নষ্ট করেছে শিক্ষক নামের কলঙ্ক সিরাজকে বাঁচাতে। আবার পিবিআই কালক্ষেপণ না করে আসামীদের গ্রেপ্তার করে প্রমাণ করছে পুলিশ নিষ্ঠাবান হলে সমাজ এতটা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে না।নুসরাতের পরিবার-প্রধানমন্ত্রী

কিন্তু স্বাভাবিক জনজীবনে দেশের মানুষ পুলিশ, থানার প্রতি আস্থা রাখতে পারে না। কারণ পুলিশ সদস্যদের ক্ষমতা অর্থ নিজের প্রতিপত্তির প্রতি আসক্তি তাদের জনসেবার ব্রতকে নষ্ট করে দিচ্ছে। যার ফল শ্রুতিতে ওসি মোয়াজ্জেমের মত পুলিশদের সংখ্যা বাড়ছে দিন দিন। আর ম্লান হচ্ছে এস আই মাসুদুর রহমানের মত অনেক পুলিশের মানবিকবোধের কাজ। এমন অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে এ পেশার মানুষদের নিজের বিবেকবোধকে জাগ্রত করতে হবে। নিজেকেই পরিবর্তন করতে হবে সবার আগে।

যে পরিবর্তনের প্রকাশ উঠে এসেছে সিএমপির প্রচারণাতে। একজন নারী হিসাবে এবারের বছরের শুরুতে মানুষ যেভাবে নুসরাতকে মনে রেখে বছর বরণ করেছে তাতে মনে হয়েছে নুসরাত হেরে যায়নি। সে সাথে একটা প্রত্যাশার জায়গা তৈরি হয়েছে সিএমপি’র পুলিশ বাহিনীর কাছে হতে। আর তাই সাধারণ জনগণের বিশ্বাসটা যেন না হারিয়ে যায় তার দায়ভার রইল পুলিশের বাহিনীর প্রতি।

‘দিনের আলোয় কাটুক
সব অন্ধকার রাত
এই বাংলায় চাই না আর
কোন ভিকটিম নুসরাত।”-

সিএমপির এ প্রতিবাদ যেন কেবল শ্লোগানে সীমাবদ্ধ থাকবে না এটাই কাম্য সারা দেশের জনগণের পুলিশ বাহিনীর কাছে।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর