সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খুন

বগুড়ার উপশহরে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম শাহীন খুন হয়েছেন। রোববার (১৪ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে উপশহর বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শাহীনের বাড়ি শহরের বারোপুর এলাকায়। তবে কে বা কারা এ হত্যাকাণ্ড করেছে সেটি এখনও জানা যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অন্যান্য দিনের মতো রোববার রাতেও বিএনপি নেতা শাহীন একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন। এসময় অতর্কিতে ৮/১০ জন দুর্বৃত্ত তার ওপর হামলা চালায়। তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে শাহীনকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে সটকে পড়ে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, অ্যাডভোকেট মাহবুব আলম শাহীন প্রতি রাতে নিশিন্দারা উপ-শহর বাজারে নুনগোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলীমুদ্দিন ও কয়েকজনের সঙ্গে আড্ডা দিতেন। রোববার রাত ১০টার আগে তিনি তার প্রাইভেটকার নিয়ে উপ-শহর বাজারে আসেন। গোলাম মোস্তফা আবু তাহের নামে এক ব্যবসায়ীর বিসমিল্লাহ চাউল আড়ৎ থেকে চাল কেনেন।

চালগুলো প্রাইভেটকারে রেখে দোকানীকে তিনি জানান, তিনি মোবাইল ফোনে ফ্লাক্সিলোড দিবেন।

পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে দুর্বৃত্তরা তার উপর হামলা করে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত ও দায়ের কোপ দিয়ে পালিয়ে যায়। তিনি দৌঁড়ে কিছুদিন যাবার পর রাস্তার পাশে পড়ে যান। সব দোকানপাট বন্ধ করে ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা চলে যান।

এ সময় ইব্রাহিম ও ডিউক নামে দুজন পথচারী রক্তাক্ত শাহীনকে উদ্ধার করে প্রথমে নামাজগড় এলাকায় স্বদেশ ক্লিনিকে নেন। সেখান থেকে চিকিৎসকরা তাকে ফিরিয়ে দেন। এরপর মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা, পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সনাতন চক্রবর্তী ও অন্যান্য কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান। সেখানে রাস্তার উপর কয়েক স্থানে রক্ত পড়েছিল। তারা পাশের ভবনের সিসি ফুটেজ নিয়ে ঘাতকদের সনাক্ত করার চেষ্টা করেন।

বগুড়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ সার্জিল আহমেদ টিপু জানান, বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট শাহীন প্রায় প্রতি রাতে উপ-শহর বাজার এলাকায় নুনগোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলীমুদ্দিন ও অন্যদের সঙ্গে আড্ডা দিতেন। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে এ হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে পারেননি।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সনাতন চক্রবর্তী জানান, রোববার রাত দেড়টা পর্যন্ত কোনো ক্লু পাওয়া যায়নি। নিহত পরিবারের সদস্যরাও কোনো মন্তব্য করতে পারেননি।

এদিকে সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুব আলম শাহীন হত্যার খবর পেয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চাঁন শজিমেক হাসপাতালে যান।

তারা এ হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে অবিলম্বে ঘাতকদের চিহ্নিত এবং তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। অন্যথায় তারা আন্দোলন গড়ে তুলবেন বলে জানিয়েছেন।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর