ছাত্রীদের যৌন হয়রানি, সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিককে ধমকালেন অধ্যক্ষ

নাটোরের এন এস সরকারী কলেজে শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রীদের যৌন হয়রানির সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় সাংবাদিকের ওপর বেজায় চটেছেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সামসুজ্জামান। সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি তিনি আমলে না নিয়ে এবং সেই অপরাধী শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে উল্টো তিনি সংবাদকর্মীকেই ধমকাচ্ছেন। সংবাদ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদককে একদিন আগে নিজের বক্তব্য দিলেও একদিন পর বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মীদের দেয়া ছাত্রীদের চিঠি নিয়ে কেন সংবাদ প্রকাশিত হল এর ব্যাখ্যা চান তিনি।

শনিবার একটি শীর্ষস্থানীয় সংক্রান্ত সংবাদটি প্রকাশিত হয়।

প্রকাশিত সংবাদে নিজের বক্তব্যে অধ্যক্ষ জানিয়েছিলেন, অভিযোগটি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনে তিনি একটি তদন্ত কমিটি করবেন। আর শনিবার সংবাদ প্রকাশের পর সেলফোনে তার বক্তব্যের আপডেট জানতে চাইেল তিনি ক্ষিপ্ত হন। তিনি এই প্রতিবেদকের নিকট জানতে চান, অভিযোগটি কে করেছে। উত্তরে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রীদের কথা বলা হলে তিনি অভিযোগটিকে ভিত্তিহীন এবং চিঠিকে উড়োচিঠি বলে মন্তব্য করেন। তিনি দাম্ভিকতার সাথে জানতে চান, দেশের প্রধানমন্ত্রীর নামে এমন উড়ো চিঠি এলে সাংবাদিকরা সংবাদ প্রকাশ করবে কি না? সকল ছাত্রীর নামে লিখিত অভিযোগের সূত্র ধরে সংবাদটি করা হয়েছে-বিনয়ের সাথে জানালে অধ্যক্ষ সামসুজ্জামান এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজী না বলেই সেলফোনটি রেখে দেন।

এদিকে প্রকাশিত সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার হলে সমালোচনায় মূখর হন কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রনেতারা।

জয়নাল আবেদীন নামে একজন মন্তব্য করেন, প্রত্যেকটি বিভাগে এমন লোলুপ টাইপের শিক্ষক দুই-একটা থাকেই। প্রতিষ্ঠানের বদনাম হবে বলে বিষয়গুলো ধামাচাপা দেয় প্রশাসন, অনেকে আবার টাকা খেয়ে পক্ষপাতিত্ব করে। ঘৃণা হয় তখনই যখন দেখি শিক্ষকরা সমাজের আদর্শ হওয়ার বদলে ধর্ষক হয়ে ওঠে।

রাশেদুল ইসলাম নামের সাবেক এক ছাত্র মন্তব্য করেন, এ ধর‌নের অনৈতিক ক‌ার্যকলাপ থে‌কে আমা‌দের প্রা‌ণের বিদ্যাপীঠ‌কে নিরাপদ রাখ‌তে প্রশাসনসহ সকল ছাত্রছাত্রী‌দের স‌হযো‌গিতা কামনা ক‌রি।

আরেক সাবেক ছাত্র রাজ্জাক সরদার বলেন, আমাদের সময় কলেজের এমন পরিবেশ ছিল না। তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।

নাটোরের কৃতি সন্তান ও দেশবরেণ্য চিত্রশিল্পী এম আসলাম লিটন বলেন, এই নোংরামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ঝেঁকে বসেছে। যেখানেই শিক্ষকদের হাতে নম্বর, সেখানেই ছাত-ছাত্রীরা জিম্মি। তার সাথে যুক্ত হয়েছে যৌন নিপীড়ন। ঘটনার দ্রুত তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হোক। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হোক। আর অধ্যক্ষের ভূমিকা কী? উনি কেন শুনেও চুপ করে বসে আছেন? অভিযোগ পেলে তারপর ব্যবস্থা নেবেন- এটাই যদি তার মনোবৃত্তি হয়, তো অধ্যক্ষের দরকার কী?

পরে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে অধ্যক্ষ জানান, যেহেতু ভিকটিমের লিখিত কোন অভিযোগ নেই তাই কিছু করার নেই।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর