ধোনির অশোভন আচরণ তরুণদের জন্য বাজে উদাহরণ

সাকিব আল হাসানের মাথা গরম করে ফেলার নজির আছে বেশ কিছুই। সেদিক দিয়ে মহেন্দ্র সিং ধোনির ঘটনাগুলো হাতে গুনে বলে ফেলা যায়। ক্যাপটেন কুল মেজাজ হারিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন গত বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশ সফরে, ইচ্ছাকৃতভাবে যখন সে সময়ের বিস্ময় মোস্তাফিজকে ধাক্কা মেরে বসলেন। ধোনি আবার বিতর্কে, আইপিএলে আম্পায়ারের সঙ্গে গলার সুর চড়িয়ে। এ ঘটনার সঙ্গে নিজের মেজাজ হারানোর মিল পাচ্ছেন সাকিব।

প্রায় ১৩ মাস আগে নিদাহাস ট্রফির অলিখিত সেমিফাইনালে বাংলাদেশ উত্তেজনার পারদ চড়িয়েছিল। সেবারও ঘটনার কেন্দ্রে ছিল একটি নো-বলের সিদ্ধান্ত। বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব এতটাই চটে গিয়েছিলেন, ড্রেসিংরুম থেকে নির্দেশ দিয়ে বসেছিলেন দুই ব্যাটসম্যান যেন সাজঘরে ফিরে আসে। এ নিয়ে তখন আগুনগরম পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গিয়েছিল। ধোনির ঘটনা ততটা উত্তাপ না ছড়ালেও সমালোচনা হচ্ছে। আম্পায়ারের সঙ্গে ধোনির মাপের একজন ক্রিকেটার এমন অশোভন আচরণ করা যে উঠতি তরুণদের জন্য বাজে উদাহরণ। ম্যাচ ফির অর্ধেকও খুইয়েছেন ধোনি। বিষয়টি এখন আইপিএলের টক অব দ্য মোমেন্ট। আজ সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা সাকিবকেও এ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হলো।

সাকিব অবশ্য এ নিয়ে ক্রিকেটীয় চেতনার জ্ঞান বিতরণের রাস্তায় গেলেন না। সরাসরি বলে দিলেন, ‘আমিও একই কাণ্ড করেছিলাম নিদাহাস ট্রফিতে। ফলে এ নিয়ে মন্তব্য করা আমার শোভা পায় না।’ তবে সাকিবের পরের কথাটা ধোনির পক্ষেই, ‘এটা আসলে ঘটনার আকস্মিকতায় ঘটে যায়। এটা এ–ও বলে দেয়, ক্রিকেটার হিসেবে আপনি কতটা আবেগ দিয়ে খেলেন। দলের জন্য কতটা জিততে চান।’আগামীকাল সাকিবের হায়দরাবাদ মুখোমুখি হবে দিল্লি ক্যাপিটালসের। ৬ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ছয়ে হায়দরাবাদ। দল খুব একটা ভালো অবস্থানে নেই। অবশ্য খুব যে খারাপ, তা–ও বলা যাবে না। কালকের ম্যাচ জিতলে ভালোমতোই রেসে ফিরবে হায়দরাবাদ। সাকিবের জন্য হতাশাটা হলো, এই চ্যালেঞ্জে সরাসরি অংশ নিতে পারছেন না। বসে থাকতে হচ্ছে ডাগআউটে। সাকিব হতাশাটাও আড়াল করলেন না, ‘একাদশে যে চারজন বিদেশিকে নেওয়া যায়, প্রত্যেকে খুব ভালো খেলছে। একাদশে না থাকাটা হতাশার, কিন্তু পরিস্থিতিও আপনাকে বুঝতে হবে। টিম ম্যানেজমেন্টের জন্য এটা খুব কঠিন। না খেললেও আমাকে ফিট আর প্রস্তুত থাকতে হবে। তা ছাড়া বিশ্বকাপও আসছে। ফলে অনুপ্রেরণার কোনো কমতি নেই। আর আমার সুযোগ যখন আসবে, আমিও দুই হাত ভরে তা নেব। আমি অনুশীলনও আগের চেয়ে অনেক বেশি করছি।’

যে দলের একাদশে সাকিবের মতো সেরা অলরাউন্ডারের জায়গা হয় না, সেই দলের অবস্থা পয়েন্ট টেবিলে এত করুণ কেন? সাকিব হায়দরাবাদের দুটি সমস্যাও চিহ্নিত করলেন, ‘শেষের ওভারগুলোতে আমরা ভালো বোলিং করছি না, এর আগে যেখানে আমাদের দারুণ অবস্থান ছিল। শেষ তিন ওভারে আমরা অনেক বেশি রান হজম করে ফেলছি। আমাদের কিন্তু সেই ক্ষমতা আছে, শেষ তিন ওভারে প্রতিপক্ষকে সামলে রেখে যতটা কম রান হজম করা যায়। তা ছাড়া আমাদের মিডল অর্ডারও এখনো জ্বলে ওঠেনি। তবে আমাদের দলে অনেক প্রতিভা আছে, যারা প্রতিপক্ষকে তছনছ করার সামর্থ্য রাখে।’ সাকিব প্রশংসা করলেন অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারের, ‘সানরাইজার্সের অনেক বড় প্রতিচ্ছবি সে। এক বছরের নিষেধাজ্ঞা শেষে এভাবে ফিরে আসা একদমই সহজ নয়। ও দেখিয়ে দিয়েছে, মানসিকভাবে ও কতটা শক্তিশালী। কখনো মনে হয়নি ও দলে ছিল না। গত বছর দলে না থেকেও ও আমাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উৎসাহ দিয়ে গেছে।’

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর