সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে নুসরাতের চির বিদায়

দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে মারাত্মক দগ্ধ হয়ে চিকিৎসার পাঁচদিন পর গত বুধবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যাওয়া ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির জানাজায় হাজার হাজার মানুষের স্রোত। ঢাকা থেকে নুসরাতের লাশবাহী গাড়ি যখন তাঁর নিজ বাড়িতে পৌঁছে তখন মানুষের হাহাকার ও কান্নায় হৃদয়-বিদারক দৃশ্য সৃষ্টি হয় এবং হাজার-হাজার মানুষের ভিড় জমে। পরে নামাজে জানাজা শেষে সন্ধ্যায় দাদীর কবরের পাশে সমাহিত করা হয় নুসরাত।

বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) বিকেল ৫:৫০ মিনিটে সোনাগাজী মো. ছাবের সরকারি পাইলট হাই স্কুল মাঠে নুসরাতের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে জানাজা শেষে সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চর চান্দিয়ায় পারিবারিক কবরস্থানে দাদীর কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।জানাজার নামাজ পরিচালনা করেন নুসরাতের বাবা মাওলানা এ কে এম মুসা। নুসরাতের বাবা বলেন আমার মেয়ের আত্মা শান্তি তখন যখন তার খুনিরা শাস্তি পাবে, আমি অপরাধির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাই।
নুসরাতের ভাই নোমান বলেন আমার বোন গত পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে আমাদের কে চেড়ে গেল। নামাজের জানাজায় প্রধানমন্ত্রীর সাবেক প্রটোকল অফিসার আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, ফেনী জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজজামান, পুলিশ সুপার এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রহমান বি কম,সোনাগাজী উপজেলা নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন, সোনাগাজী পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকনসহ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আগত সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বুধবার রাতে মারা যান নুসরাত। এর আগে শনিবার গুরুতর অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় তিনি বার্ন ইউনিটে ভর্তি হন। তার আগে গত সোমবার তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয় ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাতকে গত শনিবার সকালে পরীক্ষা কেন্দ্রের ভেতরেই তিন তলা ভবনের ছাদে নিয়ে শরীরে আগুন দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। চারজন বোরকা পরে এ হত্যা চেষ্টায় অংশ নেয় বলে নুসরাত জানায়। চিকিৎসকরা জানান, তার শরীরের ৮০ শতাংশ দগ্ধ হয়। এর মধ্যে ৭০ শতাংশই গভীরভাবে দগ্ধ। এর আগে ২৭ মার্চ ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা তার নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে নুসরাতের শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় থানায় মামলা করলে গ্রেপ্তার হয় অধ্যক্ষ। নুসরাতের পরিবারের অভিযোগ, অধ্যক্ষের পক্ষের লোকই পরিকল্পিতভাবে নুসরাতকে হত্যা করতে চেয়েছিল।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর