পাবনায় গমের বাম্পার ফলন, দাম নিয়ে হতাশ কৃষক

পাবনার সাঁথিয়া উপজেলায় গমের বাম্পার ফলন হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে এ বছর। ন্যায্য দাম পেলে লাভবান হবে কৃষক। বর্তমান বাজারে যে দামে গম বিক্রি হচ্ছে তাতে লাভের মুখ দেখছে না তারা। এতে হতাশ হচ্ছেন এলাকার প্রান্তিক চাষীরা। আগ্রহ হারাচ্ছেন গম চাষে।

সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়,এ বছর তাদের গম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৩ হাজার ২০০ শ’হেক্টর জমিতে। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গমের আবাদ হয়েছে ৫ হাজার ৮ শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে। সরকার এ বছর গম সংগ্রহের দাম ধরা হয়েছে কেজি প্রতি ২৮ টাকা। সরকার যদি প্রকৃত কৃষকের নিকট থেকে ২৮ টাকা দামে গম সংগ্রহ করতো তারা লাভবান হতো এমনটাই ধারণা করছে এলাকার কৃষকেরা।

এরই মধ্যে গমকাটা ও মাড়াইয়ের কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। হাটে উঠতে শুরু করেছে নতুন গম। এ বছর প্রতি বিঘা জমিতে ৮ থেকে ১০মণ করে গমের ফলন হয়েছে। ফলন বেশী হওয়ায় তাদের চোখে মুখে বিজয়ের হাসী। তবে কৃষকের উৎপাদিত গম তাদের নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বিক্রি করে আর্থিক লাভবান হতে পারবেন বলে আশা করলেও বাজারে যে দামে গম বিক্রি করছে তাতে লাভের মুখ দেখছেনা তারা । প্রান্তিক চাষীরা বলছে, যে দামে গম বিক্রি করছি তাতে তাদের লাভ হচ্ছে না।

সরেজমিন বুধবার এলাকার বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে দেখা যায় ৯৪০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০০০ টাকায় গম বিক্রি হচ্ছে। গম বিক্রি করতে আসা কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায় এ দামে খুশি না তারা।

ঘুঘুদহ গ্রামের কৃষক আব্দুল কাদের ও তার ছেলে জানায় ্ গতবারের চেয়ে বেশী করে এ বছর ৮ বিঘা জমিতে গমের আবাদ করেছি। বিঘাপ্রতি প্রায় ১০মণ করে ফলন হয়েছে। কয়েক মণ হাটে নিয়ে এসে ৯৪০ টাকা করে বিক্রি করতে হলো। উৎপাদন খরচ,কামলা, বিক্রি করতে পরিবহণসহ যতটাকা খরচ তাতে লাভ হচ্ছে না।
নওয়ানী গ্রামের রজব আলী জানান, আমার প্রায় ৪ বিঘা জমিতে আবাদ করেছি। ফলন ভাল হলেও আমি একজন কার্ড ধারী কৃষক সরকারী দাম না পেলে লাভের মুখ দেখবো না।

ঘুঘুদহ গ্রামের প্রান্কি চাষী খলিলুর রহমান জানান, বর্তমানে বাজারে যে দাম তাতে উৎপাদন খরচ বাদে মুখে মুখে লাভ নেই । বছরে তিন ফসলী জমি বিঘা প্রতি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা করে লীজ নিতে হয়।

উপজেলার করমজা ইউনিয়নের পুন্ডুরিয়া গ্রামের এনামুল হক শামীম জানান, তিনি পাঁচ বিঘা গমের আবাদ করেছেন। ভাল ফলন হয়েছে। এ বছর ফসলে পোকামাকড়ের উপদ্রব্ও অনেক কম হওয়ায় ভাল ফলন হয়েছে।

সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন গণমাধ্যম’কে জানান, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কৃষকরা বেশি গমের আবাদ করায় তারা সন্তুষ্ট। তবে দামের বিষয়ে তিনি বলেন, হাটে দাম একটু বেশী হলেতো লাভ হবেই। মাঠে সুষ্ঠু তদারকি ও কৃষকদের ভাল গম উৎপাদনে পরামর্শ ও সহযোগিতা করেছেন কৃষি অধিদপ্তর। এ বছর ১৮ হাজার ৭ শ’ ২০মেট্রিক টন গম উৎপাদন তাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

বার্তা বাজার .কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এই বিভাগের আরো খবর