বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরে শেখ হাসিনা সরকারের জন্য কোনো লাভ হয়নি। নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে বর্তমান সরকারের আশায় গুড়ে বালি। রোববার (২৫ জুন) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফর প্রসঙ্গে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ঢাকাস্থ ফেনী জেলা জাতীয়তাবাদী পরিষদের উদ্যোগে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বর্তমান সরকার ভেবেছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমেরিকা যাবেন, এ ওছিলায় একটা কিছু ম্যানেজ করবেন। যাতে তারা আবার সরকারে আসতে পারেন। কিন্তু আমার মনে হয় কোনো লাভ হয়নি। মোদি কি করবেন? তিনি কি নিজের গদি রক্ষা করবেন, নাকি শেখ হাসিনার গদি রক্ষা করবেন? তারই তো সমস্যার শেষ নেই। সে আবার কার জন্য সুপারিশ করবে? চিন্তা করে দেখুন, যে দেশ আমাদের সীমান্তে কুকুর-বিড়ালের মতো মানুষ মারে সেই দেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার ক্ষমতা যার নেই তিনি আবার আমেরিকাকে চ্যালেঞ্জ করেন। আমেরিকা যদি আমাদের পোশাক না নেয়, তাহলে কী অবস্থা হবে ভাবুন তো। সরকারের অবস্থা হচ্ছে বাঘের লেজ দিয়ে কান খোঁচানোর মতো।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করবেন। তবে, তিনি কার কাছে ক্ষমতা দেবেন সেই মানুষ খুঁজে পাচ্ছেন না। ক্ষমতা ছেড়ে তিনি কোন দেশে যাবেন তা-ও খুঁজে পাচ্ছেন না। সেন্টমার্টিন আমেরিকাকে দিলে নাকি তিনি ক্ষমতায় থাকতে পারবেন। অথচ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে সেন্টমার্টিন তারা চাননি। আসল কথা হচ্ছে, শেখ হাসিনা দেশটা দিয়েও যদি ক্ষমতায় থাকতে পারতেন, তাহলে তিনি সেই কাজটি করতেও ভুল করতেন না। আমার মনে হয়, পাশের দেশে গেলে ১৯৭১ সালের মতো শরণার্থী হিসেবে যেতে পারবেন। কারণ, এর আগে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ভারতকে যা দিয়েছি তা তারা চিরদিন মনে রাখবে। তাদের দেওয়ার মতো কিছু নেই।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরও বলেন, শেখ হাসিনা সরকারকে সরালেই সবাই মুক্ত হবে, সে কাজটি আমাদের করতে হবে। সরকার আমাদের আন্দোলনকে নানাভাবে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবে, এ ব্যাপারে আপনাদের সাবধান থাকতে হবে। সরকারের যে শক্তি পুলিশ বাহিনীসহ অন্যান্যদের ঐক্যবদ্ধ রাখতে নানা গুজব ছড়াবে। গণমাধ্যমেও খবরগুলো এমনভাবে আসছে সেগুলো দেখলে মনে হবে সত্য, আসলে এগুলো সত্য নয়। এখন একটি গুজব ছড়াচ্ছে যে, আমরা নাকি পুলিশের তালিকা করছি। আমাদের কেন পুলিশের তালিকা করতে হবে? এ সরকার গেলে কে কী করেছে সেগুলো পুলিশই বলে দেবে। যেটি এরশাদের পতনের পর হয়েছে। মূলত পুলিশের তালিকা করছে বিএনপি- এ রকম একটি গুজব ছড়িয়ে সরকার পুলিশকে ঐক্যবদ্ধ করতে চায়, যাতে করে তারা শেখ হাসিনা সরকারকে আবার ক্ষমতায় রাখতে অটুট হয়।

পুলিশের সবাই খারাপ নয়, এমন মন্তব্য করে বিএনপির এ নেতা বলেন, পুলিশের ৯৮ শতাংশ ভালো। যারা খারাপ তাদের তালিকা বিভিন্ন দেশে আছে। সে সংখ্যা ৫০ জনের মতো হতে পারে। তাদের কোনো দেশ নেবে না। এ সময় তিনি বিএনপির নেতাকর্মীদের কোরবানি ঈদের পর দ্রুত ঢাকায় ফেরার আহ্বান জানান।

নুরুল আমিন ভূঁইয়া বাদশার সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, বিএনপি নেতা সরফত আলী সপু, নবী উল্লাহ নবী ও যুবদলের খন্দকার এনামুল হক।

বার্তা বাজার/জে আই