সবকিছুই চলছে স্বাভাবিক নিয়মে। তবে পরিদর্শনে দেখা গেলো আর্থিক হিসেবে গড়মিল। আয়-ব্যয়ের হিসাবের সঠিক তথ্য দিতে পারেনি ভারপ্রাপ্ত হিসাবরক্ষক। যেই টাকা যেই খাতে যেভাবে জমা দেওয়ার কথা, তার কোনটাই ঠিক ভাবে করা হয়নি।

এমন ঘটনাই ঘটেছে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট পৌরসভায়। আর্থিক অসঙ্গতি থাকায় অসন্তুষ্টি জানিয়ে হিসাবরক্ষককে  তার পদ থেকে সরানোর জন্য পৌর মেয়রকে তাগিদ দিয়েছেন পরিদর্শনে আসা স্থানীয় সরকার বিভাগের কর্মকর্তা। গত সপ্তাহের সোমবার ঘোড়াঘাট পৌরসভা পরিদর্শনে আসেন দিনাজপুরের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (ডিডিএলজি মোখলেছুর রহমান। সে সময় পৌরসভার আয়-ব্যয় ও অন্যান্য আর্থিক হিসাব যথাযথ ভাবে দেখাতে ব্যর্থ হয় পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত হিসাবরক্ষক শাহাদত হোসেন।

আর্থিক হিসেবের নানা অসঙ্গতি মেলায় শাহাদত হোসেনকে হিসাবরক্ষক পদ থেকে সরাতে পৌরসভার মেয়র আব্দুস সাত্তার মিলনকে সুপারিশ করেন মোখলেছুর রহমান। তবে ঠিক কত টাকার হিসাবে গড়মিল আছে তা বের করতে একমাস ব্যাপী তদন্তের প্রয়োজন হবে বলে জানিয়েছেন পরিদর্শনে আসা ওই কর্মকর্তা।

গত ২০০৫ সালে ঘোড়াঘাট পৌরসভা সঠিত হয় এবং ২০১১ সালে নির্বাচনের মাধ্যমে মেয়র ও কাউন্সিলর নির্বাচন হয়। সে সময় প্রধান সহকারী হিসেবে চাকুরীতে যোগদান করেন শাহাদত হোসেন। পরে তাকে নিজ পদের পাশাপাশি ভারপ্রাপ্ত হিসাবরক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই থেকে দীর্ঘ সময় ধরে পৌরসভার হিসাব শাখার নিয়ন্ত্রন করছে শাহাদত। ফাঁকা থাকা অন্য পদে নিয়োগ হলেও অদৃশ্য কারণে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়নি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ।

এ বিষয়ে পৌর মেয়র আব্দুস সাত্তার মিলনের কোন বক্তব্য না পাওয়া গেলেও, অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত হিসাবরক্ষক শাহাদত হোসেন। তিনি বলেন, আমার দিক থেকে আমি ঠিক আছি। পুরোনো একটি কাগজ স্যার দেখতে চেয়েছিলেন। যেটা খুঁজতে একটু সময় লাগবে। বাকি টাকার হিসাব সব ঠিক আছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঘোড়াঘাট পৌরসভার একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী জানান, পৌরসভায় ভারপ্রাপ্ত হিসাবরক্ষকের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই নানা অনিয়মের স্বর্গ রাজ্য গড়ে তুলেছেন শাহাদত হোসেন।

নিজের পাশাপাশি স্ত্রীকেও চাকুরী নিয়ে দিয়েছেন পৌরসভায়। নিয়মিত হাট-বাজার ইজারা ও কর আদায় করা হলেও, মাসের পর মাস ধরে বেতন বন্ধ পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলর ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। অপরদিকে অবৈধ অর্থের পাহাড় গড়েছেন শাহাদত। দিনাজপুরের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোখলেছুর রহমান বলেন, যে টাকা যেভাবে জমা দেওয়ার কথা, তা সেভাবে দেওয়া হয়নি। আমি মেয়রকে বলেছি এধরণের ব্যক্তিকে এমন পদে রাখা ঠিক না। নিরীক্ষা প্রতিবেদন সহ আমি মন্ত্রনালয়ে চিঠি লিখবো। বাকি বিষয়ে মন্ত্রনালয় সিদ্ধান্ত নিবে।

বার্তাবাজার/রাহা