‘দেশে বর্ধিত জনসংখ্যার জন্য প্রয়োজন হচ্ছে বাড়তি বাসা-বাড়ি, কলকারখানা। এসব নির্মাণের জন্য জলাশয় ভরাট করা হচ্ছে। একারণে দেশের অনেক জলাশয় আমরা হারিয়েছি। ফলে প্রাকৃতিক অনেক ধরনের মাছ আমরা আর সেভাবে পাচ্ছি না। কৃত্রিমভাবে চাষ করার জন্যও যথেষ্ট জলাধার আমাদের নেই। এই অভাব পূরণ করছে বায়োফ্লক।’

সোমবার সকাল ১০টায় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) বহিরঙ্গন কার্যক্রম বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত ‘বায়োফ্লক প্রযুক্তিতে মৎস চাষ প্রশিক্ষণ ও মতবিনিময় ‘ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. অলোক কুমার পাল।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম বলেন, বিশ্বে নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হচ্ছে। যখন যে প্রযুক্তি আসবে তখন সেটাতে আমাদের চাষীদের দক্ষ করে তুলতে হবে। তবেই আমরা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারব। সে লক্ষ্যেই আমরা চাষীদের কৃত্রিম জলাধারে ‘বায়োফ্লক’ পদ্ধতিতে মাছ চাষের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি।

প্রশিক্ষণ প্রদানকালে শেকৃবির ফিশারিজ, অ্যাকোয়াকালচার অ্যান্ড মেরিন সাইন্স অনুষদের ডীন ড. এ. এম. সাহাবউদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলে থাকেন দেশের প্রতি ইঞ্চি জমি চাষের আওতায় আনতে হবে। কিন্তু মাছ চাষের জন্য অনেক জমির প্রয়োজন হয়। তাহলে আমরা কিভাবে ইঞ্চি জমিতে মাছ চাষ করবো? এটার উপায় হলো বায়োফ্লক। এই পদ্ধতিতে কয়েক মিটার জায়গায় কৃত্রিম জলাধার ব্যবহার করে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করা যায়। যাতে মাছের গুণাগুণ এবং স্বাদ সম্পূর্ণ বজায় থাকে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের লক্ষ্য হলো দেশের পাশাপাশি বিদেশে যেসব মাছের চাহিদা বেশি সেসব চাষ করে রপ্তানি বাজারে আমাদের অবস্থান আরো শক্ত করা। ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বে মাছের চাহিদা দ্বিগুণ হবে। আমরা যেন সেসময় মাছের বৈশ্বিক বাজার আমাদের অবস্থান শীর্ষে রাখতে পারি সেজন্য প্রাকৃতিক জলাধারের পাশাপাশি কৃত্রিম পদ্ধতিতে দেশের প্রতি ইঞ্চি জমি মাছ চাষের উপযোগী করতে চাই।

বহিরঙ্গন কার্যক্রম বিভাগের সহযোগী পরিচালক ড. দেবু কুমার ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায়, পরিচালক ড. শরমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে ২৫জন মাছ চাষী অংশগ্রহণ করেন। তাত্ত্বিক পদ্ধতির পাশাপাশি তাদেরকে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।

বার্তাবাজার/এম আই