একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার ৮ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়েছে। আগামী ২৫ মে পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম।

আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী। তার সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর আবুল কালাম আজাদ। আসামিদের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আব্দুস সুবহান তরফদার ও মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন।

আইনজীবী সৈয়দ হায়দার আলী জানান, ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই এ মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশের মাধ্যমে ৯ জনের বিচার শুরু হয়। তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়েছে। যদিও মামলায় এখন আসাসি ৮ জন। আরেকজন আসামি মারা গেছেন।

আসামিদের মধ্যে ছয়জন গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। তারা হলেন- মো. আব্দুস সালাম (৭৫), সুরুজ আলী ফকির (৬২), মো. জয়েনউদ্দিন (৬০), মো. আব্দুর রহিম ওরফে নুরু বিএসসি (৬৭), মো. জালাল উদ্দিন (৫৯) ও মো. রোস্তম আলী (৭০)। পলাতক ছিলেন তিনজন। তারা হলেন- শমসের ফকির (৬৬), ফজলুল হক (৫৯) ও সামসুল হক (৭০)। এদের মধ্যে পলাতক অবস্থায় একজন মারা গেছেন।

২০১৭ সালের ১৯ জুন তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। গত বছরের ২৯ মার্চ ৯ জনের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। ২০১৬ সালের ১৭ মে আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে ২৯ মার্চ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন মো. রুহুল আমিন।

আসামিদের বিরুদ্ধে মোট চার খণ্ডে ৪২৯ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়। মামলায় ৫২ জন প্রসিকিউশনে সাক্ষী ও জব্দ তালিকার তিনজনসহ মোট ৫৫ জন সাক্ষী রয়েছেন।

আসামিদের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা ও কোতোয়ালি থানার বিভিন্ন এলাকায় ১০১ জনকে খুন ও ১২ থেকে ১৩ জনকে আহত, একজন নারীকে ধর্ষণ, শতাধিক বাড়িতে অগ্নিসংযোগসহ অপহরণ, আটক, নির্যাতন, হত্যা ও গণহত্যার ৮টি অভিযোগ আনা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামী ও মুসলিম লীগ ছাড়াও একজন আওয়ামী লীগ সমর্থক রয়েছেন।