মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ীতে আগামীকাল (২৮ মে) থেকে শুরু হবে তিন দিনব্যাপী উপমহাদেশের অন্যতম শতাধিক বর্ষের সেই ঐতিহাসিক ‘কুম্ভমেলা’ বা কামনার মেলা। শ্রী শ্রী মহামানব গনেশ পাগলের এ মেলায় ভক্তরা আসেন পূণ্য অর্জনের জন্য। মেলাকে ঘিরে সেবাশ্রমে ও তৎসংলগ্ন ১৬৭ একর গোচারন ভূমিতে পুরো মাঠ জুড়ে বসেছে সারি সারি দোকান। এসব দোকানে পাওয়া যাচ্ছে পছন্দের সব জিনিসপত্র।

আয়োজকরা বলছেন, এ বছর প্রচুর পরিমানে ভক্তবৃন্দ ও দোকানীরা আসছেন মেলায়। বসছেন পসরা সাজিয়ে। দিন দিন মেলার জনপ্রিয়তা বাড়ায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লাখ লাখ মানুষের সমাগম ঘটবে। এদিকে মেলায় আগত মানুষের নিরাপত্তায় তিনস্তর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

জানা যায়, সত্য যুগে দেবতা ও অসুরদের সমুদ্র মন্থনে যে অমৃত সুধা উঠেছিল তা চারটি কুম্ভ পাত্রে হরিদ্বার, প্রয়াগ, উজ্জয়িনী ও নাসিক এ চারটি স্থানে রাখা হয়েছিল। এ ঘটনার পর থেকে মুনি ঋষিরা কুম্ভ মেলার আয়োজন করে আসছেন। ১৪০ বছর পূর্বে জ্যৈষ্ঠ মাসের ১৩ তারিখে ১৩ জন সাধু ১৩ কেজি চাল ও ১৩ টাকা নিয়ে রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ীর দীঘিরপাড় ভারতের কুম্ভমেলাকে অনুসরণ করে এ মেলার আয়োজন করেন। সেই থেকে কদমবাড়ীর দীঘিরপাড় শ্রীশ্রী গনেশ পাগল সেবাশ্রমে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এক রাতের মেলা হলেও মেলা চলে সপ্তাহব্যাপী। প্রায় ১৫ থেকে ২০ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটে এ কুম্ভমেলা। রোববার সকাল থেকেই দলে দলে জয় ডংকা ও নানা রকমের বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে জয় হরিবল ও জয়বাবা গনেশ পাগল ধ্বণি করতে করতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সাধু সন্যাসী ও ভক্তবৃন্দরা বাসে, ট্রাকে, ট্রলারে ও পদব্রজে আসতে শুরু করবে মেলা প্রাঙ্গণে। বরিশাল, পিরোজপুর, সাতক্ষীরা, রাজশাহী, বগুড়া, চিটাগং, রংপুর, যশোর, খুলনা, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, গৌরনদীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে দলে দলে মানুষ আসে। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল ও অন্যান্য রাষ্ট্র থেকেও বহু ভক্তবৃন্দ আসে ঐতিহ্যবাহী এ কামনার মেলায়। এ মেলা উপলক্ষ্যে প্রায় ৯ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বসেছে সারি সারি নানা রকমের দোকান। মেলার হাজারো দোকনে পছন্দের জিনিস সুলভে কিনতে পারবে ক্রেতারা। আর বেচাকেনা বাড়ায় খুশি হবে বিক্রেতারা।

আয়োজক কমিটির সভাপতি প্রণব বিশ্বাস জানায়, মেলায় আগত ভক্তদের জন্য চিড়ামুড়ি ও স্বাস্থ্যসেবাসহ সকল ধরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

মাদারীপুর পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, এই মেলাকে ঘিরে যাতে কোন বিশৃঙ্খলা বা অরাজকতার সৃষ্টি না হয়। সেই লক্ষে তিনস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

বার্তাবাজার/এম আই