ঢাকার সাভারের সিএন্ডবি থেকে আশুলিয়া বাজার পর্যন্ত রাস্তার বিভিন্ন অংশ চলাচল অনুপযোগী হওয়ায় জনজীবনে বেড়েছে দুর্ভোগ। দীর্ঘদিন ধরেই পুরো সড়কজুড়ে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। একারণে সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কে পানি জমে। ফলে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে ফেঁসে যায় রিকশা, ভ্যান সহ অন্যান্য যানবাহন। এদিকে বর্ষা আগত। ইতোমধ্যে রাস্তাটির সংস্কার না করলে এটা চলাচলের সম্পূর্ণ অযোগ্য হবে বলে মন্তব্য করেছেন এইপথে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ।

অনিক আনোয়ার ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’র ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্টের ছাত্র। এই রাস্তা দিয়েই তাকে নিত্য যেতে হয়। তিনি জানালেন তাঁর দুর্ভোগের কথা।

বার্তা বাজারকে তিনি বলেন, ‘এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াতে ভাঙ্গা রাস্তার জন্য জ্যামে পড়ি। যেটা আমাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে। একই সাথে বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই, বর্ষার সময় প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করা লাগে। প্রায়ই অটো রিক্সা উল্টে যায়।রাস্তাটি সংস্কারের জোর দাবী জানাই’।

একই সমস্যার কথা জানালেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’র সিএসই ডিপার্টমেন্টের ছাত্র নাহিদ রেজা।

উল্লেখ্য, সিএন্ডবি থেকে কলমা হয়ে একটি রাস্তা বিরুলিয়ার দিকে চলে গেছে। এই পথ ব্যবহার করে বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, মানারাত ইন্ট্যারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইস্টার্ণ ইউনিভার্সিটি, সিটি ইউনিভার্সিটি প্রভৃতি। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসকল ছাত্র-ছাত্রী সাভার ও আশুলিয়ায় বসবাস করে, তারা সিএন্ডবি দিয়ে কলমা হয়ে যাতায়াত করে। আর এই রাস্তার সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ভগ্নদশা কলমা এলাকায়।

সরেজমিন দেখা গেছে, সিএন্ডবি থেকে আশুলিয়া বাজার পর্যন্ত কলমা, আনারকলি, দোসাইদ বাজারের একটু আগে এবং চারাবাগের নতুন কাজ হওয়া রাস্তার সম্মুখে বিভিন্ন স্পটে রাস্তার অবস্থা খুবই শোচনীয়।যদিও আশুলিয়া বাজার থেকে কিছু অংশে ঢালাই রাস্তার কাজ শুরু হয়েছে। তবে সর্বোপরি এই রাস্তা বর্তমানে চলাচল অনুপযোগী।

সিএন্ডবি থেকে এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন আশুলিয়া বাজার হয়ে উত্তরা এবং কলমা দিয়ে বিরুলিয়া হয়ে দিয়াবাড়ি যায় হাজারো মানুষ। এই রাস্তা সাভারের দুইটি ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত। সাভার ইউনিয়ন ও আশুলিয়া ইউনিয়ন। কলমা হয়ে যেতে হয় সাভার ইউনিয়নে। এপথ দিয়ে জিঞ্জিরায় ফাইলেরিয়া হাসপাতালে যায় অনেক রোগী। এরা এই রাস্তার কলমা অংশে ভোগান্তিতে পড়েন।

এছাড়া, আশুলিয়া সাব রেজিষ্ট্রারের কার্যালয়, আশুলিয়া পুলিশ ফাঁড়ি, আশুলিয়া স্কুল ও কলেজ, আশুলিয়া বাজার, আশুলিয়া গরুর হাট যেতে এই রাস্তা ব্যবহার করতে হয়। এখানে রয়েছে অনেক তৈরি পোশাক কারখানা। সেখানে কাজ করা হাজারো শ্রমিক ব্যবহার করেন এই পথ। তারাও তাদের অবর্ণনীয় কষ্টের কথা উল্লেখ করে অবিলম্বে রাস্তাটি সংস্কারের আবেদন জানান।

পাশাপাশি, এই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী লেগুনা, বাস এবং ট্রাক ড্রাইভাররা জানান, এই রাস্তা দিয়ে চলাচলে তাদের সময় নষ্ট হয়, গাড়ি রাস্তায় আটকে যায় এবং গাড়ির অনেক ক্ষতিও হয়।

রাস্তাটির সংস্কারের বিষয়ে মুঠোফোনে সাভার উপজেলা প্রকৌশলী তরুণ কুমার বৈদ্য’র নিকট জানতে চাওয়া হয়। বার্তা বাজারকে তিনি বলেন, ‘সিএন্ডবি থেকে আশুলিয়া বাজার পর্যন্ত রাস্তার আড়াই কিলোমিটার অংশ রোডস এন্ড হাইওয়ের। তাদের অংশটুকু ভালো আছে, আমাদের অংশটুকু খারাপ। ইতোমধ্যে আমরা ২০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প তৈরি করে অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছি। এই বর্ষায় এ পথে চলাচলকারী মানুষের কষ্ট হবে বুঝতে পারছি। এজন্য আমার ডিপার্টমেন্ট থেকে কিছু বরাদ্দ নিয়ে আপাতত চলাচলের জন্য রাস্তার সংস্কার করার পরিকল্পনা নিয়েছি। দ্রুতই কাজ শুরু হবে বলে আশা করছি।

বার্তা বাজার/জে আই