রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু করতে চীন ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। তারা কাজ করছে।

মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক পোগ্রাম শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

চলতি মাসের শুরুর দিকে নীরবে ঢাকা সফর করে গেছেন চীনের বিশেষ দূত দেং শিজুন। চীনের বিশেষ দূত ঢাকা সফরে ড. মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন। শিজুনের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনার বিষয়ে জানতে চান সাংবাদিকরা। জবাবে মোমেন জানান, রোহিঙ্গাদের কিভাবে তাড়াতাড়ি ফেরত পাঠানো যায় তা নিয়ে আলাপ হয়েছে। আমরা সবসময় আশাবাদী, রোহিঙ্গারা তাদের দেশে ফেরত যাবে।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীনের বিশেষ দূতের কোনো পরামর্শ ছিল কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা (চীন) কাজ করছে অনেক দিন ধরে। শুধু তারা (চীন) না, অনেকেই কাজ করছে।

চীনের বিশেষ দূত মিয়ানমার গেছে, বাংলাদেশও সফর করে গেছেন। তাহলে বেইজিং কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কি না? জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি জানি না। আমরা আশা করি, তারা (রোহিঙ্গা) যত তাড়াতাড়ি যায় তত আমরা খুশি।

এদিকে, চীনের বিশেষ দূতের ফিরতি সফর হিসেবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বর্তমানে বেইজিং সফরে রয়েছেন। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে,পররাষ্ট্র সচিবের বেইজিং সফরে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহযোগিতাসহ বৈশ্বিক সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

ঢাকার একটি কূটনৈতিক সূত্র বলছে, ৬ এপ্রিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ড. মোমেনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শিজুন। বৈঠকে বিশেষ আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ছাড়াও বেইজিংয়ের দিক থেকে রোহিঙ্গা সমাধানে বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতা আশ্বাস দেওয়া হয়। তবে পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে কিছু রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়ে জোর দেন বিশেষ দূত। প্রত্যাবাসন শুরু করতে রোহিঙ্গাদের রাজি করাতে প্রয়োজন হলে একাধিক প্রতিনিধিদলকে কক্সবাজার পাঠানোর প্রস্তাবও দেওয়া হয়। এছাড়া অবকাঠামোগত উন্নয়ন ছাড়াও যেকোনো ধরনের সহযোগিতা চাইলে ঢাকার পাশে থাকার জন্য বেইজিং প্রস্তুত আছে মর্মে দেশটির প্রেসিডেন্টের বার্তা পৌঁছে দেন বিশেষ দূত।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য বলছে, চীনের উদ্যোগে একটি পাইলট প্রকল্পের আওতায় এক হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে রাখাইনে ফিরিয়ে নিতে চায় মিয়ানমার। তাদের আগ্রহে আপত্তি নেই বাংলাদেশের। তবে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ কিছু শর্ত দিতে চায় ঢাকা। এর মধ্যে আছে পরবর্তীতে দ্রুত দ্বিতীয় দফা প্রত্যাবাসন শুরুর নিশ্চয়তা।

বার্তাবাজার/এ.আর