দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়দের দাবি একটি সেতু। তবে তা পূরণ হয়নি। কবে হবে তাও অজানা তাদের। প্রসাশনের পক্ষ থেকেও মেলে আশ্বাস, মেলেনা প্রতিকার। পার হতে হয় খেয়া নৌকায়। ভোগান্তির শেষ নেই এখানকার বাসিন্দা, শিক্ষার্থী ও পর্যটকদের। বলছিলাম দারচিরা নদীতে খেয়া পারাপারের কথা। উপজেলা শহর‌ থেকে ৪ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে সদর ইউনিয়নের খালগোড়া এবং বড় বাইশদিয়া ইউনিয়নের চর গংগা এলাকায় মাঝে অবস্থিত এই খালটি। এক সময় খরস্রোতা নদী ছিল। এর তীব্র স্রোতে ভেঙে যেত নৌকার দার (বৈঠা) তাই এর নাম দারচিরা। খালটি কারণে বিচ্ছিন্ন রয়েছে দুটি ইউনিয়ন। খালটির একপাশে রাঙ্গাবালী সদর ইউনিয়ন এবং অপর পাশে বড় বাইশদিয়া ও মৌডুবি ইউনিয়ন। দুই ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ, মটরসাইকেল, বাণিজ্যিক মালামাল, পর্যোটকসহ সকলের পার হবার একটাই মাধ্যম খেয়া। প্রতিবার খেয়া আধঘন্টা থেকে একঘন্টা অপেক্ষার পর জনপ্রতি ১০ টাকা দিয়ে পার হতে হয় তাদের। ভোগান্তির শিকার মানুষগুলোর দাবি একটা সেতু যেন নির্মাণ করেন সরকার। সেতু নির্মাণ হলে ভোগান্তি লাঘবের পাশাপাশি বাড়বে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এমনটিও বলছেন তারা।

আজ বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পার হচ্ছে লোকজন। ঘাটেই কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা রেজাউল করিমের সাথে। তিনি বলেন, আমাদের এই দারচিরা নদীর উপর যে ব্রীজটা এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্রীজ। ব্রীজটি হলে আমাদের জাহাজ মারা তুফানিয়া সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়তো। দুই ইউনিয়নের মানুষও খুব ভোগান্তিতে আছে। শিক্ষার্থীদের পারাপারে সমস্যা হয়। ঘাটে আইসা অনেক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ব্রীজটি খুব প্রয়োজন রাঙ্গাবালীবাসীর জন্য।

স্থানীয় রাঙ্গাবালী সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী সানজিদা আক্তার বলেন, এই জায়গা দিয়ে যেতে অনেক কষ্ট হয়। খেয়া পার হয়ে যেতে হয়। স্কুল কলেজ সব হলো ওপারে। ঠিকঠাক মতো খেয়া পাওয়া যায় না। আসতে কষ্ট হয়। একটা ব্রীজ হলে আসা যাওয়া ভালো হতো।

জাহাজমারা সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে যাবেন পর্যটক জাহিদ হাসান। তিনি বলেন, জাহাজমারা যেতে হলে এখানে খেয়া পার হয়ে যেতে হয়। আপনারা জানেন যে অনেক দুরের একটা পথ। তারমধ্যে খেয়ায় আমাদের অনেক বড় একটা সময় চলে যায়। গাড়ি নিয়ে পার হতেও সমস্যা। এখানে একটি ব্রীজ হলে আমরা অনায়াসে নিজের গাড়ি করে সরাসরি জাহাজমারা যেতে পারবো। পাশাপাশি এই দুই ইউনিয়নের মানুষ ও খুব তাড়াতাড়ি তাদের বিভিন্ন কাজের জন্য ভোগান্তি ছাড়াই উপজেলা শহরে যাতায়াত করতে পারবে। এছাড়াও ব্রীজ নির্মাণ করা হলে অর্থনীতি আরো উন্নত হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, খালগোড়া ব্রীজটি আমাদের রাঙ্গাবালী ইউনিয়ন এবং বড় বাইশদিয়া ইউনিয়নের সংযোগস্থলে। এই ব্রীজটি ইতিপূর্বে দুই প্রজেক্টে পাঠানো হয়েছে। একটি তদূর্ধ্ব ১০০ মিটার এবং এলবিসি প্রকল্পে। আশা করি এটা দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সালেক মূহিদ বলেন, খালগোড়া থেকে চর গংগা যেই ব্রীজটির কথা বলা হয়েছে সেটা অনেক আগেই যাচাইসহ প্রকল্প পাস হয়েছে। এবং এটা টেন্ডার প্রক্রিয়ায় ও গিয়েছিল। ব্রীজটির হাইটের (উচ্চতা) ব্যাপারে একটু আপত্তি ছিল। তবে সে সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন হয়েছে। আশা করি এটা অল্প কিছুদিনের মধ্যেই টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যাবে।

বার্তাবাজার/এম আই