সেপ্টেম্বরের শুরুতে দুটি আলাদা সমাবেশ করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর ভাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ। সমাবেশ দুটিতে ব্যাপক জনসমাগমের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এ সমাবেশের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের প্রতি জনগণের ব্যাপক সমর্থন দেশের জনগণ ও বিদেশি বন্ধুদের সামনে তুলে ধরতে চায় ক্ষমতাসীন দলটি।

আগামী ২ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (কাওলা) থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন উপলক্ষে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের পুরাতন বাণিজ্য মেলা মাঠে সুধী সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ।

এর একদিন আগে আগামী ১ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের স্মরণে ‘ছাত্র সমাবেশ’ করবে ছাত্রলীগ।

২ সেপ্টেম্বরের সুধী সমাবেশে ব্যাপক জনসমাগম নিশ্চিত করতে মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) বিকেলে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ঢাকাসহ আশপাশের সাংগঠনিক জেলা নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতারা।

সুধী সমাবেশে ব্যাপক জনসমাগমের প্রস্তুতির কথা জানিয়ে মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী ২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা জনতার মহাসমুদ্র হয়ে যাবে।

সর্বাধিক জনসমাগম নিশ্চিত করতে নেতাকর্মীদের আন্তরিকভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে মতবিনিময় সভায় আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, বিএনপির বিদেশি বন্ধুদের দেখিয়ে দিতে হবে বাংলাদেশের জনগণ আমদের সঙ্গে আছে।

তারা আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে বিএনপি-জামায়াত সামনে দাঁড়াতে পারবে না।

আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা বলেন, সারাদেশ থেকে বিশেষ করে ঢাকা ও আশপাশের জেলাগুলো থেকে নেতাকর্মীরা সমাবেশে যোগ দেবে। ব্যাপক জনসমাগম নিশ্চিত করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

দেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক মহলের সামনে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা তুলে ধরতে সর্বাধিক জনসমাগমের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তারা।

ব্যাপক সমাগমের পাশাপাশি এবার শৃঙ্খলার ওপরও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সুশৃঙ্খল সমাবেশ নিশ্চিত করার অংশ হিসেবে এবার সমাবেশস্থলে ব্যানার নিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না নেতাকর্মীরা। এছাড়া নির্ধারিত আকারের চেয়ে বড় প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন নিয়েও সমাবেশ স্থলে প্রবেশ করতে পারবে না তারা।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, মূলত অতিরিক্ত ব্যানার ফেস্টুনের কারণে সমাবেশে জনসমাগম কম দেখা যায় এবং পেছনের লোকজন সামনের মঞ্চ দেখতে না পারায় বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এ সমস্যা এড়াতে এবার ব্যানার ফেস্টুনের ব্যবহার নিয়মের মধ্যে রাখা হবে।

এদিকে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় ‘ছাত্র সমাবেশের’ প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগের ভাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ।

সর্বাধিক নেতাকর্মী ও ছাত্র শুভাকাঙ্ক্ষীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ছাত্রলীগের সারাদেশের সব ইউনিটকে সাতদফা নির্দেশনা দিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।

ছাত্র সমাবেশ সফল করতে ছাত্রলীগের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়, মহানগর, জেলা, কলেজ, মেডিকেল কলেজ, উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন শাখাকে সর্বাধিক উপস্থিতি নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন তারা।

ছাত্র সমাবেশে উপস্থিত ইউনিটগুলোর মধ্য থেকে সেরা ইউনিটকে সাংগঠনিকভাবে পুরস্কার এবং কোনো ইউনিট উপযুক্ত অংশগ্রহণ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও ঘোষণা দিয়েছেন ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

আগামী ১ সেপ্টেম্বরের ‘ছাত্র সমাবেশ’ স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সমাবেশ হবে বলে আশা করছেন সাদ্দাম হোসেন এবং শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।

ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা বলেন, পহেলা সেপ্টেম্বরের ছাত্র সমাবেশে ব্যাপক উপস্থিতির মাধ্যমে ছাত্রলীগ দেখাতে চায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের ছাত্র ও তরুণ সমাজ আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে আছে।

বার্তাবাজার/এম আই