কক্সবাজারে জোরপূর্বক সমকামিতায় বাধ্য করায় ক্ষুব্দ হয়ে আ.লীগ নেতা সাইফুদ্দীনকে খুন করেছে বলে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে ওই ঘটনায় আটক আশরাফুল ইসলাম।

মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কক্সবাজারের জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান।

গ্রেপ্তার আশরাফুল ইসলামের বাড়ি কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ পাহাড়তলীর ইসলামপুর এলাকায়। সে হাসেম মাঝির ছেলে। নিহত সাইফুদ্দীন কক্সবাজার শহরের ঘোনার পাড়া এলাকার অবসরপ্রাপ্ত আনসার কমান্ডার আবুল বশরের ছেলে। তিনি কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।

পুলিশ সুপার বলেন, ‘সপ্তাহ খানেক আগে সাইফুদ্দিনের সাথে পরিচয় হয় আশরাফুলের। তারা ফেসবুকে বন্ধু হয়। পরে নাম্বার আদান-প্রদান হয়। বাড়তে থাকে ঘনিষ্ঠতা। সর্বশেষ গত ২০ আগস্ট বিকেলে আশরাফুলকে নিজের মোটরসাইকেলে চড়িয়ে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করেন সাইফুদ্দিন।

সেদিন তারা বড় বাজার রাখাইন পাড়া থেকে বাংলা মদ ও পেয়ারা কিনে। পরে হোটেল সানমুনের দোতলায় গিয়ে সময় কাটায়। এসময় সাইফুদ্দিন আশরাফুলকে সমকামিতায় বাধ্য করেন। পরে আশরাফুলকে ১শ টাকা পথ খরচ দিয়ে বিদায় দেয় সাইফুদ্দীন। ঘন্টা খানেক পর আবারও তাকে হোটেলের কক্ষে ডাকেন সাইফুদ্দিন। ফের হোটেল কক্ষে গিয়ে প্রতিবাদ করলে আশরাফুলের গলা চেপে ধরেন সাইফুদ্দিন। এসময় আত্মরক্ষার্থে আশরাফুল তার পকেটে থাকা ছুরি দিয়ে সাইফুদ্দিনকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে ধাক্কা দিয়ে বিছানায় ফেলে দেয়। গোঙানির শব্দ বন্ধ করতে চাঁদর দিয়ে গলা পেঁচিয়ে ধরে। আশরাফুল নিজের নিরাপত্তার জন্য সাইফুদ্দিনের কোমরের বেল্ট দিয়ে দুই হাত বেঁধে ফেলে। এভাবে মৃত্যু নিশ্চিত হলে আশরাফুল রক্ত ধুয়ে হোটেল থেকে পালিয়ে যায়।

আটক আশরাফুলের স্বীকারোক্তি মতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি, অন্যান্য আলামত ও মোটর সাইকেল জব্দ করা হয়।

প্রসঙ্গত, সোমবার সকালে কক্সবাজার শহরের হলিডের মোড় সংলগ্ন আবাসিক হোটেল সানমুনের দ্বিতীয় তলার ২০৮ নম্বর কক্ষে সাইফুদ্দিনের মরদেহ পাওয়া যায়। মরদেহের হাত বাঁধা অবস্থায় ছিলো। এছাড়া শরীরের নানা অংশে জখমের চিহ্ন ছিলো। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার সময় টেকনাফগামী একটি বাস থেকে হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ আশরাফুলকে গ্রেফতার করে।

বার্তাবাজার/এম আই