নেত্রকোনার দুর্গাপুরে পৌরসভাসহ সাতটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ৪৭টি করাতকল রয়েছে। তার মধ্যে ৪০টির নেই লাইসেন্স। লাইসেন্স ছাড়াই এ-সব করাতকল অবৈধভাবেই পরিচালিত হচ্ছে।

উপজেলা বন বিভাগের তথ্যমতে, দুর্গাপুর পৌরসভা, কুল্লাগড়া, চন্ডিগড়, বিরিশিরি, বাকলজোড়া, কাকৈরগড়া ও গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নে সব মিলিয়ে করাতকল রয়েছে ৪৭টি। তার মধ্যে লাইসেন্স আছে মাত্র ৭ টির। বাকি ৪০ টির নেই লাইসেন্স। এর মধ্যে লাইসেন্সের আবেদন পড়েছে ১২টি করাতকলের।

বন আইন অনুযায়ী কোনো করাতকল মালিক লাইসেন্স না নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন না। তবে এ-নিয়ে খোঁজ নিয়ে তথ্য মিলেছে, এ উপজেলার বন কর্মকর্তাকে চা-পান খরচের টাকা পাঠিয়েই লাইসেন্স বিহীন করাতকলের ব্যবসা পরিচালনা করতে পারছেন মালিকরা।

অন্যদিকে বন বিভাগের নজরদারি না থাকায় নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে এসব অবৈধ করাতকলে ফলদ,বনজসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ চেড়াই হচ্ছে। করাতকলে চেড়াই করতে আনা গাছ ফেলে রাখা হয় সড়ক ঘেঁষে। শুধু তাই নয়,লাকড়ি কিনতে ও গাছ নামাতে আসা গাড়িগুলো সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকার ফলে যানবহন চলাচলে চরম বিঘ্ন ঘটে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক করাতকলের মালিক জানান, দীর্ঘদিন ধরে আমার স’মিল চলছে। লাইসেন্স না নিয়ে স’মিল চালানো ঠিক না কিন্তু জায়গা সমস্যার জন্য লাইসেন্স করতে পারছি না। বন বিভাগের স্যার কিছু দিন আগে পরিদর্শন করে গিয়েছেন তখন তিনি বন্ধ রাখতে বলে যান। পরে অন্য এক স’মিল মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার মাধ্যমেই চা-পান খরচের জন্য ২ হাজার টাকা পাঠিয়েছি। কি আর করবো লাইসেন্স নেই এইভাবেই তো চালাতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ দেওয়ান আলী মিল মালিকদের থেকে টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে তিনি মুঠোফোনে জানান, চা-পানের খরচের কথাটি মিথ্যা কথা। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা আছে লাইসেন্স ছাড়া অবৈধভাবে করাতকল চালাতে পারবেনা। আমি নতুন এসেছি তাই সব চিনতে একটু সময় লাগছে। আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান জানান, পূর্বেও ভ্রাম্যমাণ পরিচালনা করা হয়েছিল। বন বিভাগের সঙ্গে কথা বলে আবারও ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অবৈধ করাতকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বার্তাবাজার/এম আই