নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেছেন, আন্দোলনের নামে যারা নির্বিচারে আগুন দিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, তারাই আজ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের নামে আন্দোলনে নেমেছে। এরাই ২০১৩-১৪ সালে পাঁচ শতাধিক মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে। এরা এখন কোন ধরনের গণতন্ত্রের কথা বলে?

বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার তল্লা এলাকায় জাতীয় শোক দিবস ও বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের শহীদদের জন্য বিশেষ দোয়ার অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এদিন ফতুল্লা থানা ও মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শতাধিক স্থানে বিশেষ দোয়া ও খাবার বিতরণ করা হয়।

বিএনপির শাসনামলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নির্যাতিত হতে হয়েছে উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, বিএনপির শাসনামলে আমাদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন চালানো হয়েছে। কিন্তু আমরা ক্ষমতায় এসে কারও ওপর প্রতিশোধ নিইনি। কিন্তু তারা আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়িতে আগুন দিয়েছে, হত্যা করেছে, লুটপাট করেছে। ৪৯ জন নেতাকর্মীদের দাফন করেছি। লাশ নিয়ে কবরস্থানে যেতে পারিনি। লাশের ওপর গুলি করা হয়েছে। লাশ থেকে সেই গুলি বের করে দাফন করতে হয়েছে। তারপরও আমরা প্রতিশোধ নিইনি। কারণ আমাদের নেত্রী সহিংসতার শিক্ষা দেয়নি। তিনি আমাদের একটাই শিক্ষা দিয়েছেন, ‘যত দিন বেঁচে আছ, মানুষের জন্য কাজ করো, তাদের হৃদয়ে জায়গা করে নিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, দেশ সামনের দিকে এগিয়ে গেছে, আরও যাচ্ছে। এটা অনেকেই সহ্য করতে পারছে না। আমাদের বঙ্গোপসাগরে অপশক্তি ঘাঁটি করতে চাচ্ছে। তারা বাংলাদেশকে আফগানিস্তান, সিরিয়া বানাতে চাচ্ছে। দেশকে বাঁচাতে হবে, আপনারা ঘুম থেকে উঠুন। দেশ না থাকলে আপনার-আমার বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ কী হবে? সবার আগে দেশ, দেশকে বাঁচাতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রসঙ্গে শামীম ওসমান বলেন, আমাদের নেত্রী কখনো কারও কাছে মাথা নত করেননি। দেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয় এমন কারও সঙ্গে আপস করেননি। আমাদের পদ্মা সেতুর জন্য অর্থায়ন বন্ধ করে দেওয়া হলে তিনি নিজস্ব অর্থায়নে এই সেতু করে দেখিয়েছেন। রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র করেছেন, মেট্রোরেল করেছেন, বঙ্গবন্ধু টানেল করেছেন। এসব তিনি মুক্তির জন্য করেছেন। এই মুক্তি অর্থনৈতিক মুক্তি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তাকে ২১ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু পারেনি। মা-বাবাসহ পরিবারের সদস্যদের হারানোর পরও তিনি ভেঙে পড়েননি। তার সঙ্গে আল্লাহর রহমত আছে। আপনারা আগামী দিনের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য আবারও তাকেই নির্বাচিত করুন। তিনি শুধু আওয়ামী লীগের সম্পদ নয়। তিনি আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু, মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ্ নিজাম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও যুবলীগ নেতা এহসানুল হাসান নিপু, যুবলীগ নেতা জানে আলম বিপ্লব প্রমুখ।

বার্তা বাজার/জে আই