দেশের মোট জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশকে পেনশনের সুবিধায় আনতে যাচ্ছে সরকার। এর অংশ হিসেবে চার শ্রেণির প্রায় ১০ কোটি মানুষ পেনশন পেতে যাচ্ছেন।

আজ বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিধিমালা-২০২৩ এর উদ্বোধন উদ্বোধন করবেন। সকালে গণভবন থেকে এই কর্মসূচিতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন সরকারপ্রধান।

গত ১৪ আগস্ট এই বিধিমালা চূড়ান্ত করে অর্থ মন্ত্রণালয়। এতে চার শ্রেণিকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। সেখানে চাকরিজীবীদের জন্য চারটি পৃথক স্কিম রাখা হয়েছে। সেইসঙ্গে বিধিমালায় মোট ১৮টি ধারা রাখা হয়েছে।

এর আগে, গত ২৪ জানুয়ারি সব নাগরিককে পেনশনের আওতায় আনতে সংসদে ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল-২০২৩’ পাস হয়। বিলে ১৮ বছর থেকে ৫০ বছর বয়সী সব নাগরিকের নির্ধারিত হারে চাঁদা পরিশোধ করে ৬০ বছর পূর্তির পর আজীবন পেনশন সুবিধা ভোগ করার বিধান রাখা হয়। আজীবন বলতে পেনশনারের বয়স ৭৫ বছর পর্যন্ত বিবেচনা করা হয়েছে।

সর্বজনীন পেনশন বিধিমালায় পৃথক চারটি স্কিম হলো-

(ক) প্রবাস স্কিম (প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য): বিদেশে কর্মরত বা অবস্থানকারী যেকোনো বাংলাদেশি মাসিক পাঁচ হাজার, সাড়ে সাত হাজার ও ১০ হাজার টাকা চাঁদার সমপরিমাণ অর্থ বৈদেশিক মুদ্রায় দিয়ে এই স্কিমে অংশ নিতে পারবেন। প্রবাসী ব্যক্তি দেশে ফেরার পর সমপরিমাণ অর্থ দেশীয় মুদ্রায় পরিশোধ করতে পারবেন। প্রয়োজনে স্কিম পরিবর্তন করতে পারবেন। তবে, পেনশন স্কিমের মেয়াদ পূর্তিতে পেনশনার দেশীয় মুদ্রায় পেনশন প্রাপ্য হবেন।

(খ) প্রগতি স্কিম (বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের জন্য): বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোনো কর্মচারী বা প্রতিষ্ঠানের মালিক মাসিক দুই হাজার, তিন হাজার ও পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে এই স্কিমে অংশ নিতে পারবেন। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের এই স্কিমে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে স্কিমের চাঁদার ৫০ শতাংশ কর্মচারী এবং অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান দেবে। কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এই স্কিমে অংশ না নিলে, সেই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোনো কর্মচারী নিজ উদ্যোগে এককভাবে এই স্কিমে অংশ নিতে পারবেন।

(গ) সুরক্ষা স্কিম (স্বকর্মে নিয়োজিত নাগরিকদের জন্য): অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত বা স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিরা যেমন- কৃষক, রিকশাচালক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতি, ইত্যাদি শ্রেণির ব্যক্তি মাসিক এক হাজার, দুই হাজার, তিন হাজার ও পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে এই স্কিমে অংশ নিতে পারবেন।

(ঘ) সমতা স্কিম (স্বকর্মে নিয়োজিত স্বল্প আয়ের নাগরিকগণের জন্য অংশ প্রদায়ক পেনশন): বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো কর্তৃক সময় সময় প্রকাশিত আয়সীমার ভিত্তিতে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী স্বল্প আয়ের ব্যক্তিরা (যাদের বর্তমান আয়সীমা বাৎসরিক অনূর্ধ্ব ৬০ হাজার টাকা) মাসিক এক হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে এই স্কিমে অংশ নিতে পারবেন। এক হাজার টাকার মধ্যে চাঁদা দাতার ৫০০ টাকা ও সরকারি অংশ ৫০০ টাকা হবে।

প্রতিটি স্কিমের বিপরীতে উল্লিখিত পরিমাণ চাঁদা প্রদানসাপেক্ষে মাসিক পেনশনের (সম্ভাব্য) প্রাপ্যতা অর্জিত হবে।

বার্তা বাজার/জে আই