পটুয়াখালী বাসটার্মিনাল প্রতি বছরে কয়েক লক্ষ টাকা ইজারা হলেও সংষ্কারের উদ্যোগ নেই পৌর কর্তৃপক্ষের। সামান্য বৃষ্টি হলেই বাসটার্মিনালের বেহাল দশার কারনে যাত্রীদের পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে। জেলার অভ্যন্তরীণ ৭টি রুটে ১৫০টি যাত্রী পরিবহনের বাস-মিনিবাস চলাচল করে। এছাড়াও বরিশাল-বরগুনা দেশের বিভিন্ন আন্তঃজেলায় দেড় শতাধিক বাসে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ হাজার যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করছে। অথচ বৃষ্টি হলেই টার্মিনালের ভেতরে ও আশপাশে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। যার ফলে কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায় টার্মিনালের পুড়ো এলাকা। ফলে চালক ও যাত্রীদের পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে।

জানাগেছে, ২০০৩ সালে দুই একর জমির ওপর ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এই বাস টার্মিনাল নির্মাণ করে। পরে তারা এটি পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করে এবং সেই থেকে পৌরসভা এটি রক্ষণাবেক্ষণ করছে।

কুয়াকাটায় ঘুড়তে আসা যাত্রী জহিরুল ইসলাম জানান, বাস টার্মিনালে কাদাপানি ও ছোট বড় গর্তের কারনে ভেতরে ঠুকতে সমস্যা হচ্ছে। যার কারনে ভেতরে প্রবেশ না করেই বাহির থেকে টিকিট কাটতে হচ্ছে। শহরের ভেতরের রাস্তাঘাট দেখতে খুব সুন্দর কিন্তুু মহাসড়কের পাশে এমন একটি বাসটার্মিনালের অবস্থা খুবই খারাপ।

গলাচিপার যাত্রী রুপা আক্তার জানান, অনেক কস্ট করে কাদাপানি পাড় হয়ে টিকিট কাটতে হয়। অনেক সময় পাশ দিয়ে গাড়ি গেলে ময়লা পানিতে কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। তারপরও বাধ্য হয়ে টার্মিনালে প্রবেশ করতে হচ্ছে টিকিটের জন্য। আসলে এটা দ্রুত সংস্কার করা জরুরী।

অটো চালক খলিল জানান, বাস গাড়ি থেকে যাত্রী তুলতে টার্মিনালে গেলে অনেক সময় যাত্রীসহ গাড়ি উল্টে গর্তের মধ্যে পড়তে হয়। যার ফলে অনেক যাত্রী এখন টার্মিনালের মধ্যে প্রবেশ করে না। যার ফলে অটোতেও যাত্রী কম হচ্ছে।

সম্রাট গাড়ির বাস চালক মিজান বলেন, টার্মিনালের ভেতরে কাদাপানি ও ছোট বড় গর্ত থাকার কারনে যাত্রী, শ্রমিক সকলেই পড়তে হচ্ছে চরম সমস্যায়। ছোট বড় গর্তের কারনে অনেক সময় গাড়ির পাতি ভেঙে যায়। এছাড়া যাত্রীদের নামাতে গেলে অনেক সময় ময়লা পানির মধ্যেই নামিয়ে দিতে হয়। বাসটার্মিনালটি সংস্কার করা না হলে দিনদিন যাত্রী কমে যাবে বলে জানান।

পটুয়াখালী বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ রিয়াজ উদ্দিন মৃধা বলেন, প্রতি বছরই ২০ থেকে ২১ লক্ষ টাকার ইজারা হয় বাসটার্মিনালের। কিন্তুু তারপরও এটি নতুন করে সংষ্কার করা হচ্ছে না। ডিসি, এসপি এমনকি মেয়রকে বারবার বলা স্বত্তেও এটার সংষ্কার করছে না তারা। সামান্য বৃষ্টি হলেই টার্মিনালের ভেতরে কাদাপানি ও অসংখ্য ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। যার ফলে চালকরা ভেতরে গাড়ি রাখতে পারছে না। যাত্রীরাও ভেতরে প্রবেশ করছে না। তাই যত দ্রুত সম্ভব টার্মিনালকে সংষ্কার করার দাবি জানান তিনি।

পটুয়াখালী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন আরজু বলেন, প্রতিবছরই টার্মিনালের ভেতরের গর্ত ভরাট করার জন্য ২/৩ লক্ষ টাকার ইট ক্রয় করে ভরাট করে থাকি। কিন্তুু কয়েকদিন যেতেই সেগুলো নষ্ট হয়ে যায়। তাই এবার যাত্রী ও শ্রমিকদের সুবিধার্থে পটুয়াখালী বাসটার্মিনালকে উন্নত করা হবে। যাকে করে যাত্রীদের কোন ভোগান্তিতে পড়তে না হয়। আগামী অর্থবছরে কাজ শুরুর কথা আছে বলে জানান তিনি।

বার্তা বাজার/জে আই