ঢাকা থেকে স্বামীর সাথে অভিমান করে বড় বোনের মেয়েকে নিয়ে রংপুর আত্মীয়ের বাড়ি যাচ্ছিলেন ঢাকার এক গার্মেন্টস কর্মী। পথে বগুড়ার বারপুরে বাস নষ্ট হলে পরিচিত লোকের বাড়িতে গিয়ে গনধর্ষনের ঘটনা ঘটে।

ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) রাত সোয়া ৮ টার দিকে কাহালু উপজেলার পাইকড় ইউনিয়নের বাগইল পশ্চিমপাড়া গ্রামে। এই ঘটনায় বুধবার (১৯ জুলাই) কাহালু থানায় মামলা দায়ের করেন ওই নারী। পরে বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) ভোর ৬ টার দিকে কাহালুর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অভিযুক্ত ৫ আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

বাস নষ্ট হলে তখন তিনি বগুড়ার কাহালু উপজেলার পাইকড় ইউনিয়নের কুশলিহার পুর্বপাড়া গ্রামে তার কলিগের পরিচিত একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। এরপর ১৫ বছর বয়সী বড় বোনের মেয়েসহ গণধর্ষণের শিকার হন ওই নারী। এছাড়াও তাদের কাছে থাকা নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।

গ্রেপ্তার ওই পাঁচজন হলেন, বগুড়ার কাহালু উপজেলার কুশলীহার পূর্বপাড়ার আশরাফ আলী ফকিরের ছেলে মামলার মূল আসামি আবুল কাশেম মানিক(৩৫) ও মোস্তফা ফকিরের ছেলে হাবিবুর রহমান হাবিব (২৫), বাগইল দক্ষিণপাড়ার আবু বক্কর সিদ্দকের ছেলে রাকিব হাসান (২৩), একই গ্রামের উত্তরপাড়ার নুরুল ইসলামের ছেলে শাকিল হোসেন (২৩) ও আইয়ুব আলীর ছেলে আতিক রহমান প্রান্ত (২২)।

বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে এক প্রেস ব্রিফিং-এ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী।

পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ভিকটিম নারী ঢাকার নারায়ণগঞ্জের একটি গার্মেন্টসে ক্লিনার হিসেবে কাজ করেন। গত বুধবার (১২ জুলাই) দুপুরে স্বামীর সাথে অভিমান করে তিনি বড় বোনের মেয়েকে নিয়ে রংপুরে আত্মীয়ের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথে তার রব্বানী নামের এক কলিগের সাথে দেখা হয়। তখন তারা একসাথে যাত্রা শুরু করেন। এরপর দিবাগত রাত ২ টার (১৩ জুলাই) দিকে বগুড়ারর বারপুরে তাদের বাস নষ্ট হয়। এসময় রব্বানী (ভিকটিমের কলিগ) তাদেরকে নিয়ে কাহালু উপজেলার পাইকড় ইউনিয়নে রাজ্জাক নামে এক বন্ধুর বাড়িতে যান। তখন মামলার মূল আসামি মানিক রাজ্জাকের বাড়িতে খারাপ মেয়ে এসেছে বলে এলাকায় রটিয়ে দেন।

এসব শুনে রাজ্জাক নামে ওই ব্যক্তি তাদের চলে যেতে বলে। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে তারা তিনজন একটি ভ্যানে করে রংপুরের বাসের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পাইকড় ইউনিয়নের বাগইল গ্রামের বড়পুকুর ব্রীজের কাছে পৌঁছালে আসামি মানিক তাদের পথরোধ করে এবং ৪-৫ জন বন্ধুকে ফোন দিয়ে আসতে বলে। এরপর মামলার মূল আসামি মানিক অপর আসামিদের নিয়ে ভ্যনচালককে ভয় দেখিয়ে তাদের তিনজনের কাছে থাকা ৭২ হাজার টাকা, একজোড়া কানের দুল ও একটি বাটন মোবাইল কেড়ে নেয়। এরপরা আসামিরা ভ্যান চালক ও রাব্বানীকে মারধর করে ভিকটিম ওই নারী এবং তার বড় বোনের ১৫ বছর বয়সী মেয়েকে অপহরণ করে। পরে একই এলাকার পশ্চিমপাড়ার একটি পুকুর পাড়ে নিয়ে তাদের গণধর্ষণ করে।

পুলিশ সুপার বলেন, এই ঘটনার পর ভিকটিম ওই নারী তার বড় বোনের মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় যান। সেখানে তারা চিকিৎসা গ্রহণ করেন। এরপর সুস্থ হয়ে কাহালুর পাইকড় গ্রামে আবার আসেন তারা। রাজ্জাককে সাথে নিয়ে কাহালু থানায় অভিযুক্তদের নামে মামলা করেন। মামলার পরপরই পুলিশ কাহালুর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ওই ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ধর্ষণ ও ডাকাতির বিষয় স্বীকার করেছে।

বার্তাবাজার/রাহা