সরকারের পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া এবং নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনসহ এক দফা দাবি আদায়ে দ্বিতীয় দিনের মতো পদযাত্রা করছে বিএনপি। পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে মহাসড়কে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। রাজধানীর একাংশে প্রায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

বুধবার (১৯ জুলাই) সকাল ১০টায় পদযাত্রা শুরুর কথা থাকলেও বেলা ১১টা ২০ মিনিটের দিকে আবদুল্লাহপুর থেকে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে পদযাত্রা শুরু হয়। সকাল ৯টা থেকেই আব্দুল্লাহপুরে জড়ো হতে শুরু করেন বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। তখন থেকে ঢাকার প্রবেশমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী থেকে বিমানবন্দর এলাকা পর্যন্ত তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। দুপুর ১২টার দিকে আব্দুল্লাহপুর থেকে বিমানবন্দর এলাকা পর্যন্ত তীব্র যানজটের কারণে একই স্থানে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।

আব্দুল্লাহপুর থেকে শুরু হওয়া পদযাত্রা বিমানবন্দর, কুড়িল, বিশ্বরোড হয়ে নতুন বাজার, বাড্ডা, রামপুরা ব্রিজ, আবুল হোটেল, খিলগাঁও, বাসাবো, মুগদাপাড়া ও সায়েদাবাদ হয়ে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় শেষ হবে।

সাধারণ যাত্রীরা বলছেন, বিএনপির পদযাত্রা যেসব এলাকা দিয়ে এগোচ্ছে, সেসব এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে আশপাশের সড়কগুলোতে। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়ির মধ্যে বসে থাকতে হচ্ছে।

বাসযাত্রী আল-আমিন বলেন, আব্দুল্লাহপুর থেকে এয়ারপোর্ট যাব। পাঁচ মিনিটের পথ ৫০ মিনিট ধরে বসে আছি। করার কিছু নেই। এই গরমে হাঁটা ধরব, সেই উপায়ও নেই। বাধ্য হয়ে গাড়ির মধ্যে বসে আছি।

আরেক বাসযাত্রী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী তারেক মাহমুদ জানান, গাজীপুর থেকে প্রতিদিন ঢাকায় গিয়ে অফিস করেন। টঙ্গী কলেজ গেট পর্যন্ত অন্যান্য দিনের মতো এসেছেন। কিন্তু কলেজ গেটে আসার পর বাস যেন আর চলে না। স্বাভাবিক দিনে যেখানে ১০ মিনিটের মতো সময় লাগে, সেখানে আজ লাগছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

দুপুর আড়াইটার দিকে পদযাত্রার সামনের অংশ আব্দুল্লাহপুর থেকে নতুন বাজার এলাকায় পৌঁছায়। এ সময় প্রগতি সরণির একপাশের পথ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। বিপরীত দিকের সড়কে যানবাহনের পরিমাণও ছিল খুব কম।

উত্তরা এলাকায় কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক কাজী মিজান বলেন, বিএনপির পদযাত্রার কারণে বুধবার দুপুর ১২টা থেকে মহাসড়কে যানজট তৈরি হয়েছে। পদযাত্রাটি কুড়িল ফ্লাইওভার অতিক্রম করে বাড্ডা সড়কে প্রবেশ করেছে। কিছুক্ষণ পর এ যানজট থাকবে না।

বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, আব্দুল্লাহপুর থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে এয়ারপোর্ট, কুড়িল, নতুন বাজার, বাড্ডা, রামপুরা ব্রিজ ও আবুল হোটেল পর্যন্ত নিয়ে যাচ্ছে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি। এরপর আবুল হোটেল থেকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি পদযাত্রা শুরু করে খিলগাঁও, বাসাবো, মুগদা, সায়েদাবাদ হয়ে যাত্রাবাড়ী গিয়ে শেষ করবে।

যুগপৎভাবে অনুষ্ঠিত এ পদযাত্রায় বিএনপির পাশাপাশি গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোটসহ অন্যান্য জোট অংশ নিচ্ছে।

বিএনপির পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, দলটির বাইরেও ৩৭টি দল যুগপৎভাবে এ পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করছে।

আব্দুল্লাহপুর থেকে পদযাত্রা শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি। এতে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আব্দুল মঈন খান, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব আমিনুল হক।

এর আগে মঙ্গলবারের (১৮ জুলাই) পদযাত্রায় মিরপুরে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ হয়। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে মিরপুর বাঙলা কলেজের সামনে সংঘর্ষের পর বিএনপি নেতাকর্মীরা একটি মোটরসাইকেল ও একটি বাইসাইকেলে আগুন দেন।

বার্তা বাজার/জে আই